Wednesday, August 27, 2025

দেশজুড়ে অগ্নিপথ নিয়ে বিতর্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সেই রেশ থেকে বাদ যায়নি বাংলাও। বিহার থেকে রাজস্থান, হরিয়ানা এমনকি দক্ষিণেও প্রতিবাদের আগুন বাড়ছে বৈ কমেনি। প্রতিবাদীদের রোষে পড়ে জ্বলছে ট্রেন-বাস।আন্দোলনকারী থেকে বিশেষজ্ঞরা নরেন্দ্র মোদি এবং রাজনাথ সিংকে কাঠগড়ায় তুলেছেন।

আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, সেনাবাহিনীর চাকরিতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ কেন হবে ? কেনইবা অগ্নিপথ প্রকল্প থেকে মাত্র ২৫ শতাংশ  সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভূক্ত করা হবে ? যদিও এর কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি প্রতিরক্ষামন্ত্রক। যেভাবে আন্দোলন ছড়িয়েছে দেশের সর্বত্র তাতে রীতিমতো কাঠগড়ায় প্রধানমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী।বিশেষজ্ঞরাও বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন। তাদের একাংশের বক্তব্য, অগ্নিপথ প্রকল্প প্রথমে নিয়ন্ত্রিত ক্ষেত্রে পরীক্ষামূলক ভাবে পরিচালনা করা উচিত। তারপর ধীরে ধীরে সব উদ্বেগের দিকগুলি পর্যালোচনা করার পরই তা বাস্তবায়িত করা উচিত।

প্রাক্তন ডিরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশনস্‌ (ডিজিএমও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল বিনোদ ভাটিয়া, বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ)-এর প্রাক্তন এডিজি সঞ্জীব সুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত উইং কমান্ডার প্রফুল্ল বক্সীর কণ্ঠেও শোনা গিয়েছে সমালোচনার সুর। ভাটিয়া বলেছেন,  সেনাদলে যোগ দিতে ইচ্ছুকেরা চার বছরের জন্য কেন যোগ দেবেন? এই স্বল্প মেয়াদের জন্য কেন তাঁরা ঝুঁকি নেবেন? এই প্রকল্পের ফলে সশস্ত্র বাহিনীর ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য হারিয়ে যাবে। সঞ্জীব সুদ জানিয়েছেন, তিনি এই প্রকল্পে বেশ কিছু প্রাথমিক ত্রুটি খুঁজে পেয়েছেন।তিনি আরও জানান, চার বছরের চাকরিতে অগ্নিপথ প্রকল্পের আওতায় যোগ দেওয়া সেনারা কার্গিলের যুদ্ধে যোগ দেওয়া সেনাদের মতো লড়াই করবে, এই আশা কখনই করা উচিত না।

২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে বছরে ২ কোটি কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মোদি। গত আড়াই বছরে যা দিনের আলো দেখেনি।মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগামী দেড় বছরে ১০ লক্ষ ‘সরকারি চাকরি’র ঘোষণা করেছিলেন। আর তারই মধ্যে ছিল ৪৫ হাজার চুক্তিভিত্তিক সেনা নিয়োগে ‘অগ্নিপথ’প্রকল্প। এই প্রকল্পকে ঘিরে অশান্তির আগুন ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে দেশের সাতটি রাজ্যে।

অগ্নিপথ প্রকল্পে সশস্ত্র বাহিনীর তিন শাখায় (স্থল, জল এবং নৌসেনা) নিয়োজিত চুক্তিভিত্তিক ‘অগ্নিবীর’দের ৭৫ শতাং‌শকেই চাকরি পাওয়ার চার বছরের মধ্যে অবসর নিতে হবে। এককালীন কিছু টাকা মিললেও থাকবে না পেনশনের ব্যবস্থা। সে ক্ষেত্রে তাঁদের আবার নতুন করে চাকরির সন্ধান করতে হবে। প্রয়োজনীয় যোগ্যতা থাকলেও কেন বাকি ৭৫ শতাংশকে সেনায় নিয়োগ করা হবে না, আন্দোলনকারী সে প্রশ্ন তুলেছেন।নিয়োগের জন্য আগে সর্বোচ্চ বয়স ২১ বছর বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর তা বাড়িয়ে ২৩ করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও বিক্ষোভ থামেনি।

অনেকেই মনে করছেন, যুবসমাজের মধ্যে বেকারত্ব নিয়ে আশঙ্কা আর ক্ষোভ তৈরি হচ্ছিল অনেক দিন ধরেই। অনুঘটকের কাজ করেছে অগ্নিপথ প্রকল্পের ঘোষণা। বিহার, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানার মতো যে রাজ্যগুলি থেকে সেনাবাহিনীতে বেশি সংখ্যায় যুবক চাকরি করতে যান, বিক্ষোভ বেশি সেখানেই।বলা ভাল , বিক্ষোভ সামাল দিতে ব্যর্থ কেন্দ্রীয় সরকার।

Related articles

বিরক্ত মিঠুন? এড়াচ্ছেন বঙ্গ বিজেপির একাধিক কর্মসূচি

বারবার রং বদল করে আপাতত গেরুয়াতে ঠেকেছেন ডিস্কো ড্যান্সার মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। ভোটের আগে বা বিজেপির. (BJP)...

আরজি কর কাণ্ডে ভুয়ো প্রচারের অভিযোগ! নোটিশ চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামীকে

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক পড়ুয়া অভয়ার মৃত্যুকে ঘিরে ভুয়ো প্রচার মামলায় নোটিশ ধরাল কলকাতা পুলিশ। পুলিশের...

দুর্গাপুজোর আগে রাজ্যে ডেঙ্গি-উদ্বেগ! টানা বৃষ্টিতে বাড়ছে আশঙ্কা 

দুর্গোৎসবের মুখে একদিকে নিম্নচাপের জেরে টানা বৃষ্টি, অন্যদিকে ডেঙ্গি সংক্রমণ রাজ্যবাসীর কপালে ভাঁজ বাড়াচ্ছে। জুলাইয়ের শেষ দিক থেকে...

মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর স্টলে হঠাৎ মুখ্যমন্ত্রী! কিনলেন শাড়ি 

বর্ধমানে প্রশাসনিক সভায় এসে হঠাৎ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর স্টলে হাজির মুখ্যমন্ত্রী। শুধু মহিলাদের হাতের কাজই ঘুরে দেখলেন না, কেনাকাটাও...
Exit mobile version