সামরিক বাহিনীতে চুক্তির ভিত্তিতে অগ্নিপথ প্রকল্পের মাধ্যমে নিয়োগের প্রতিবাদে দেশজুড়ে চলছে বিক্ষোভ। এরইমাঝে রবিবার এইনিয়ে তিন সেনা প্রধানের সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। বৈঠকের শেষে প্রতিরক্ষা বাহিনীর তরফে অগ্নিপথ প্রকল্প থেকে পিছু হটছে না কেন্দ্র বলে সাফ জানানো হয়। উল্টে কড়া বার্তা দিয়ে জানানো হয়, বিগত চার-পাঁচ দিন ধরে চলে আসা অশান্তি, হিংসা এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনায় যুক্ত ছিলেন যাঁরা, চাকরিতে তাঁদের প্রবেশের রাস্তা বন্ধ। প্রতিরক্ষা আধিকারিকরা জানিয়েছেন, কোনও রকম হিংসা এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনায় যুক্ত ছিলেন না বলে আগে প্রমাণ দিতে হবে চাকরিপ্রার্থীদের। তবেই সেনায় যোগ দেওয়ার পরবর্তী প্রক্রিয়া এগোবে ।

আরও পড়ুন:কংগ্রেসের সত্যাগ্রহ, শান্তি বজায় রেখে প্রতিবাদ চালিয়ে যাওয়ার বার্তা প্রিয়াঙ্কার

রবিবার সাংবাদিক বৈঠক করেন দেশের তিন বাহিনীর প্রধান। সেখানেই লেফটেন্যান্ট জেনারেল অনিল পুরী বলেন,”সশস্ত্রবাহিনীতে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুরের কোনও জায়গা নেই। প্রত্যেক আবেদনকারীকে লিখিত শংসাপত্র দিতে হবে যে, তাঁরা এই ধরনের ঘটনায় লিপ্ত ছিলেন নাম ১০০ শতাংশ পুলিশি যাচাই করা হবে। তার ব্যাতীত কেউ যোগ দিতে পারবেন না। ভর্তির আবেদনপত্রেই লিখিত নেওয়া হবে। তার পর যাচাই করা হবে সত্যতা।”
পাশাপাশি এও জানানো হয়, জুলাই থেকে অগ্নিপথ প্রকল্পে নিয়োগ শুরু হবে। সেই জন্য জুন মাসের শেষ থেকেই পৃথক ভাবে বিজ্ঞপ্তি দেবে জল-স্থল ও বায়ুসেনা। ২৪ জুন বায়ুসেনা, ২৫ জুন নৌসেনা এবং ১ জুলাই স্থলসেনা বিজ্ঞপ্তি বের করবে। আপাতত ২টি ব্যাচে অগ্নিবীর নিয়োগ করা হবে। প্রথম ব্যাচে ২৫ হাজার অগ্নিবীর নেওয়া হবে।
লিউটেন্যান্ট জেনারেল অনিল পুরী এদিন জানান, ১৯৮৯ সাল থেকে এটা আটকে ছিল৷ এই সংস্কারের মাধ্যমে সেনা বাহিনীতে তারুণ্যের সঙ্গে অভিজ্ঞতার মেলবন্ধন করবে৷ তাছাড়া জওয়ানদের একটা বড় অংশের বয়স ৩০ পেরিয়েছে৷ বাহিনীর ক্ষেত্রে এটা চিন্তার কারণ৷ কেন না সীমান্ত সুরক্ষার কাজে তরুণদের বিশেষ প্রয়োজন৷এদিন প্রতিরক্ষাবাহিনীর তরফে জানানো হয়, সেনাবাহিনীতে এই সংস্কার প্রয়োজন ছিল৷ দেশরক্ষার কাজে তরুণদের এগিয়ে রাখা হয়৷ সেই কারণে সাড়ে ১৭ থেকে ২১ বছরের বয়ঃসীমা রাখা হয়েছিল৷

অন্যদিকে, অ্যাডমিরাল দীনেশ ত্রিপাঠী জানিয়েছেন, ২১ নভেম্বর থেকে নৌসেনায় প্রথম ব্যাচের অগ্নিবীরদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। পুরুষদের পাশাপাশি মহিলাদেরও নিয়োগ করা হবে অগ্নিবীর হিসেবে। আগামী ৪ থেকে ৫ বছরের মধ্যে সেনা জওয়ানদের বেতন ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকায় পৌঁছবে। পরে তা বেড়ে ৯০ হাজার থেকে ১ লক্ষ পর্যন্তও পৌঁছে যাবে। পাশাপাশি অন্য জওয়ানরা যে পরিমাণ ভাতা পান, তাও পাবেন তাঁরা। কোনও অগ্নিবীর শহিদ হলে তাঁর পরিবারকে ১ কোটি টাকার অর্থসাহায্য করা হবে।