বিপন্নতার সময়ে বিশেষ করে সাম্প্রতিক করোনা অতিমারি আবহে সরকারি প্রকল্পের উপরেই মানুষ বেশি করে ভরসা রাখছেন। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের প্রতীচী ট্রাস্টের রিপোর্টে এই তথ্যই উঠে এসেছে। সেই রিপোর্টের সমীক্ষায় সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ভরসার কথাই বলা হয়েছে। সরকারি স্কুল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, সরকারি গণবণ্টন ব্যবস্থা বা কর্মসংস্থান সুরক্ষা নীতিতে জনতার আস্থার ছবিই উঠে এসেছে। কোভিডের সঙ্গে লড়াই করতে একাধিক সরকারি প্রকল্প ও নীতি বিষয়ে প্রতীচী ট্রাস্টের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টটি আজ বৃহস্পতিবার ট্রাস্টের সভাপতি অমর্ত্য সেনের উপস্থিতিতে প্রকাশ হওয়ার কথা।
এই রিপোর্টে বলা হয়েছে , এ দেশে অতিমারির প্রথম ঢেউ (২০২০ সালের জুলাই-ডিসেম্বর) চলাকালীন এবং দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রাক্কালে (২০২১-এর গোড়ায়) পশ্চিমবঙ্গে নানা ভাবে ভুক্তভোগী ২,০০০ পরিবারের কথা। সমীক্ষার তথ্যে পরিযায়ী শ্রমিকদের কথা যেমন বলা হয়েছে তেমনই বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে আশাকর্মী এবং সহযোগী স্বাস্থ্য-সেবিকাদের (এএনএম) পরিষেবার কথাও। ‘সামান্য স্বেচ্ছাসেবী’ বলে ধরা হলেও, প্রশিক্ষিত ও দক্ষ স্বাস্থ্যকর্তাদের মতো করেই তাঁরা পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য নির্দিষ্ট নিভৃতবাস কেন্দ্র চালিয়েছিলেন। এই স্বাস্থ্যকর্মীরা সংক্রমনের ঝুঁকি নিয়েও কোভিড রোগীদের চিকিৎসা করেছেন । সেবা দিয়েছেন । টিকাকরণের কাজ করেছেন। রিপোর্টে অনুযায়ী, এক-এক জন আশাকর্মী ১,৮৯৮ জন রাজ্যবাসীর দায়িত্বে ছিলেন। দিনে ১৩ ঘণ্টা কাজ করেছেন। আবার সমীক্ষায় তাঁদের ৭১ শতাংশই বলেছেন, দায়বদ্ধতার তাগিদেই এই অসাধ্যসাধনে শামিল হয়েছিলেন।
সমীক্ষাভুক্ত পরিবারগুলির মধ্যে ৮৭.৮ শতাংশের রোজগার কমেছে। ১০০ দিনের কাজের কার্ডধারী পরিবারগুলির ৪৫ শতাংশ কাজ পায়নি। পাশাপাশি দেশের মধ্যে ১০০ দিনের কাজের শ্রম দিবস তৈরিতে শীর্ষে থাকা পশ্চিমবঙ্গ এই সঙ্কট পর্বেও গড়ে ২৩ দিন কাজ দিতে পেরেছে। তবে কেন্দ্রের টাকা আসতে দেরিও এই কাজ দিতে না-পারার বড় কারণ। সঙ্কটকালে রাজ্যের গণবণ্টন প্রকল্পও দরিদ্রতমদের চাল জুগিয়েছে। খাদ্য যুগিয়েছে।