Sunday, August 24, 2025

করোনার জনজীবন আবার নতুন ছন্দে ফিরছে। সেই মতো দুবছর পর ঐতিহাসিক মাহেশের (Mahesh) রথযাত্রা পালন হচ্ছে মহা সমারোহে। শুক্রবার, সকাল থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে পুজো। ৬২৬ বছরের প্রাচীন এই রথযাত্রা উপলক্ষ্য়ে সাতদিন আগে থেকে সেজে উঠেছে মাহেশ। রথযাত্রা উপলক্ষ্যে এদিন সকাল থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের হাজার হাজার ভক্ত থেকে উপস্থিত হয়েছেন মাহেশের জগন্নাথ মন্দিরে। জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রাকে রত্ন বেদি থেকে নামিয়ে সামনের চাতালে আনা হয়। ধুমধাম করে হয় পুজো। এদিন সকাল থেকে পুজোপাঠের পরে বেলা চারটে নাগাদ তিন বিগ্রহকে রথে তোলা হয়। বেলা চারটে নাগাদ জনসমুদ্রের মাঝে মাসির বাড়ির উদ্দেশ্যে চলতে থাকে রথ। উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। জি টি রোডের ধারে অগণিত মানুষ বাড়ির ছাদে, বারান্দায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে এই রথযাত্রা দেখেন। সন্ধেয় মাসির বাড়িতে গিয়ে সেখানকার রত্ন বেদিতে বিগ্রহগুলি অধিষ্ঠিত করা হয়। আট দিন ধরে এই মাসির বাড়িতেই সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত ভক্তরা দর্শন পাবেন। আগামী শনিবার উল্টো রথের দিন বিকেলে আবার এই তিন বিগ্রহ মূল মন্দিরের ফিরিয়ে আনা হবে।


আরও পড়ুন:Naba Jubok Sangha: রথযাত্রার শুভক্ষণে কালী আরাধনার শুভ সূচনা কুমোরটুলিতে


রাজ্য সরকারের উদ্যোগে এখানকার প্রাচীন জগন্নাথ মন্দিরটিকে অনিন্দ্য সুন্দর রূপ দেওয়া হয়েছে। ২০১৯ সালে রথযাত্রা উপলক্ষ্যে যখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) মাহেশ এসেছিলেন তখন এই মন্দিরের ভগ্নদশা দেখে সেই দিনই ঘোষণা করেছিলেন মাহেশের মন্দির-সহ এখানকার পুরো এলাকাকে ঢেলে সাজানো হবে। সংস্কার করা হবে মাসিরবাড়ি, স্নান মন্দির, নাট মন্দির-সহ দোল মঞ্চটি। মাহেশের এই ঐতিহাসিক জগন্নাথ দেবের মন্দির সম্পর্কে জগন্নাথ জিউ ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক পিয়াল অধিকারী জানান, ৬২৬ বছর আগে বাংলাদেশ থেকে এক সন্ন্যাসী স্বামী ধ্রুবনন্দ স্বামী নীলাচলে গিয়েছিলেন। কথিত আছে, সেখানে গিয়ে প্রভু দর্শনের পর তাঁর মনের সাধ হয়েছিল যে তিনি নিজের হাতে প্রভুকে ভোগ নিবেদন করবেন। তার এই ইচ্ছার কথা জানতে পেরে তখনকার যাঁরা পুরোহিত ছিলেন তাঁরা রেগে যান। তাঁকে তিরস্কার করেন। এরপর ধ্রুবনন্দ মনের দুঃখে স্থির করেন যে এই নীলাচলেই তাঁর জীবন বিসর্জন দেবেন। কিন্তু সেই রাতে জগন্নাথ তাঁকে স্বপ্নাদেশ, মাহেশে গিয়ে গঙ্গার ধারে একটি নিম কাঠ ভেসে আসবে তাই দিয়ে আমার মূর্তি তৈরি করে সাধনভজন কর। একদিন ভীষণ ঝড়ের রাতে উত্তাল গঙ্গার মধ্যে তিনি দেখতে পান একটি নিম কাঠ ভেসে এসেছে। সেই কাঠ দিয়ে তিনি জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রার মূর্তি তৈরি করেন। এর বহু বছর পরে গঙ্গার তীরবর্তী স্থান থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে জি টি রোডের উপর নতুন মন্দির প্রতিষ্ঠিত করেন শেওড়াফুলির রাজ পরিবার। মহেশের রথযাত্রা উপলক্ষ্যে দূর দূরান্তের লক্ষ লক্ষ মানুষ উপস্থিত হয়েছেন।


 


Related articles

দরিদ্রতম মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দেশে সবচেয়ে ধনী মুখ্যমন্ত্রী কে? রইল তালিকা

দেশে কোটিপতি মুখ্যমন্ত্রীদের ভিড়ে ব্যতিক্রম শুধু একজন। তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। বর্তমানে দেশে সবথেকে গরিব মুখ্যমন্ত্রী তিনি।...

ধর্ষিত মূক- বধির-বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন কিশোরীর পাশে নেই যোগী সরকার!

যোগীরাজ্যে(Yogi Adityanath) মূক ও বধির বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন কিশোরীর(Disabled Girl) নৃশংস ধর্ষণ (Brutal Rape)। পাশে দাঁড়ায়নি সরকার। ফলে মেয়েকে...

পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ‘শ্রমশ্রী’ প্রকল্পে নাম নথিভুক্তি শুরু

পরিযায়ী শ্রমিকদের সুবিধার্থে এবার আরও এক পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের। ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচির আওতায় দুয়ারে সরকার শিবিরেও...

‘নিখুঁত ভুলগুলি’, উৎপল সিনহার কলম

একটা দুঃখের কথা পথে ও বিপথে ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে গান হয়ে ওঠে ...একটি দুঃখের কথা পথে ও বিপথে ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে গান...
Exit mobile version