যত সময় গড়াচ্ছে অসমের বন্যা পরিস্থিতি ততই খারাপ হচ্ছে। প্রতিদিনই বাড়ছে দুর্ভোগ। গত ২৪ ঘণ্টায় তিন শিশু সহ মৃত্যু হয়েছে আরও আট জনের। এদের মধ্যে লখিমপুর এবং নগাওঁয়ে দু’জন করে মোট চার জন বন্যার জলে ভেসে গেছেন এবং বারপেটা, বিশ্বনাথ, ধেমাজি এবং মোরিগাওঁয়ে একজন করে জলে ডুবে মারা গেছেন। এই নিয়ে উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৫৯।
অসমের ২৮টি জেলায় প্রায় ৩০ লক্ষেরও বেশি মানুষ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এই মুহূর্তে ৫৬৪টি ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন ২ লক্ষ ১৭ হাজার ৪১৩ জন। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, বন্যা পরিস্থিতিতে রাজ্যে ৭৪ হাজার ৭০৬ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। অসমের দুর্গত জেলাগুলির মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বরপেটা। সেখানে প্রায় ৭ লক্ষ মানুষ দুর্ভোগে রয়েছেন। নগাঁওয়ে ৫ লক্ষেরও বেশি মানুষ দুর্দশায় দিন কাটাচ্ছেন। কাছারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন দুই লক্ষেরও বেশি মানুষ।
অসমের শিলচর শহরের বন্যা পরিস্থিতি ক্রমশই খারাপ হচ্ছে। বেশ কিছু এলাকা জলের তলায় তলিয়ে গিয়েছে। ওই শহরের প্রায় ২ লাখ মানুষ খাদ্য, পানীয় জল এবং প্রয়োজনীয় জিনিস পাচ্ছেন না। গুয়াহাটি, শিলচর-সহ ৩৫টি জেলার মধ্যে ৩০টি জেলাই রয়েছে জলের তলায়। কোনও কোনও এলাকায় পৌঁছচ্ছে না ত্রাণসামগ্রী। পানীয় জল, খাবার, ওষুধ না পেয়ে ক্রমশই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেকে। একাধিক জায়গায় জলের উপর ভেসে যাচ্ছে মৃতদেহ। দুর্দিনে পরিজনের শেষকৃত্য না করতে পেরে ‘বাধ্য হয়েই’ পরিজনকে এই ভাবেই বিদায় জানাতে হচ্ছে বন্যাদুর্গতদের।
ভারতীয় সেনা, দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।