স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে উত্তরপ্রদেশ-গুজরাটকে পিছনে ফেলে দিল বাংলা

রাজ্যের মহিলা ও পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর আর্থ সামাজিক মানোন্নয়নে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কার্যকলাপ বাড়ানোকে পাখির চোখ করেছে রাজ্য সরকার। তার সুফল বহুদিন ধরেই পাচ্ছে রাজ্য। স্বনির্ভর গোষ্ঠী আন্দোলনে সামিল হয়ে এ রাজ্যের বহু মানুষ স্বনির্ভর হয়েছেন। সরকারি উৎসাহে শহর এবং গ্রামে বর্তমান সরকারের আমলে লক্ষ্যণীয় ভাবে বেড়েছে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সংখ্যা। এবার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে উত্তরপ্রদেশ, গুজরাটের মতো বিজেপির শাসিত রাজ্যকে পিছনে ফেলে দিল বাংলা।
কেন্দ্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কাজের পরিধি বাড়াতে ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলার মোট স্বনির্ভর গোষ্ঠী সংখ্যার ধারে কাছেও নেই ওই সব রাজ্য। পাশাপাশি ঋণ নিয়ে পরিশোধ করার ক্ষেত্রেও বাংলা স্বনির্ভর গোষ্ঠগুলি অনেক বেশি প্রতিশ্রুতি পালন করেছে বলে ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের ‘জাতীয় গ্রামীণ জীবন জীবিকা মিশন’-এর তথ্য বলছে, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে এখনও পর্যন্ত বাংলায় ৬৮ হাজার ৭৬৪টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী ঋণ পেয়েছে। অথচ উত্তরপ্রদেশে এবং গুজরাটে এই সময়ে যথাক্রমে মাত্র ১ হাজার ৬১৯ ও ১ হাজার ৫৭৯টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী ঋণ পেয়েছে।

আরও পড়ুন- EastBengal: চুক্তিতে সম্মতি লাল-হলুদের, চুক্তিসই হতে পারে আগামী সপ্তাহে
আসলে ঋণ পেতে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে ব্যাঙ্কের লিঙ্ক করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় রাজ্য সরকারগুলি। স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড, মৎস্যজীবী ক্রেডিট কার্ড বা আর্টিসান ক্রেডিট কার্ডের পেতে সাহায্য করতে ব্যাঙ্কগুলির সঙ্গে সমন্বয় রাখতে হয় রাজ্যকেই। ঠিক একই ভাবে স্বনির্ভর গোষ্ঠীকেও ঋণ পেতে সাহায্য করতে বা ‘ব্যাঙ্ক লিঙ্কিং’ নিশ্চিত করতে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের আধিকারিকদের সঙ্গে দৌত্য করতে হয় নবান্নকেই। যার ফলে আর্থিক বছরের প্রথম ছ’মাসেই এই সুফল পাওয়া গিয়েছে রাজ্যে।
রাজ্যের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এই সংখ্যা দুর্গাপুজোর পরে আরও অনেক বাড়বে। প্রসঙ্গত, গত অর্থবর্ষে রাজ্যের স্বনির্ভর গোষ্ঠীদের ১৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার টার্গেট নেওয়া হয়েছিল। প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকার ঋণ পেয়েছিল রাজ্যের স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির ক্ষেত্রে জাতীয় স্তরে এনপিএর হার দুই শতাংশ। সেই নিরিখে চলতি অর্থবর্ষে বাংলায় এনপিএর হার হল মাত্র ১.৯৩ শতাংশ। আর উত্তর প্রদেশে ও গুজরাতে এনপিএ হল যথাক্রমে ১৭.৭৬ ও ৬.০৬ শতাংশ।
কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের ‘জাতীয় গ্রামীণ জীবন জীবিকা মিশন’-এর তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে এখনও পর্যন্ত বাংলায় ৬৮ হাজার ৭৬৪টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা ঋণ পেয়েছে। সামগ্রিক অর্থবর্ষ শেষ হলে তা ১৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। এবার যেহেতু কোভিড পরিস্থিতি ভাল আছে তাই মনে করা হচ্ছে এবারে ঋণ প্রদানের পরিমাণ ১৫ হাজার কোটি টাকার আশেপাশে থাকবে।

 

 

Previous articleএকুশে জুলাইয়ের রক্তাক্ত ইতিহাস নিয়ে তথ্যচিত্র তৃণমূলের, দায়িত্বে দলেরই বিধায়ক
Next articleমাঝরাতে পাঁচিল টপকে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি! আটক অভিযুক্ত, চলছে জিজ্ঞাসাবাদ