গায়ে লাল পতাকা, বুকে গীতাঞ্জলি, এনটিওয়ান থেকে এসএসকেএমে যাত্রা তরুণের

লাল পতাকা, বুকে পরমপ্রিয় রবি ঠাকুরের ' গীতাঞ্জলী' - এই সবকিছু নিয়েই এনটিওয়ান (NT1 Studio) থেকে এসএসকেএমে (SSKM Hospital) যাত্রা তরুণ মজুমদারের। শেষবারের মত সিনে পাড়া ঘুরে গেলেন পরিচালক, তবে স্বচক্ষে দেখতে পেলেন না তাঁর চলে যাওয়ায় ভর দুপুরেও যেন ' আলো' নিভল বাংলা চলচিত্র জগতের (Bengali film Industry)।

শেষ হল সব লড়াই, চিকিৎসকদের সব চেষ্টাকে ব্যর্থ করে চির ঘুমের দেশে তরুণ মজুমদার (Tarun Majumdar)। এ যেন এক যুগের অবসান! গায়ে সাদা চাদর তার উপরে লাল পতাকা, বুকে পরমপ্রিয় রবি ঠাকুরের ‘গীতাঞ্জলি’ – এই সবকিছু নিয়েই এনটিওয়ান (NT1 Studio) থেকে এসএসকেএমে (SSKM Hospital) যাত্রা তরুণ মজুমদারের। শেষবারের মত সিনে পাড়া ঘুরে গেলেন পরিচালক, তবে স্বচক্ষে দেখতে পেলেন না তাঁর চলে যাওয়ায় ভর দুপুরেও যেন ‘ আলো’ নিভল বাংলা চলচিত্র জগতের (Bengali film Industry)।

অতীত মানেই নস্টালজিয়া, না ফিরে আসা মুহূর্তদের মনের ফ্রেমে বন্দি করে স্মৃতিচারণা। সপ্তাহের প্রথম ব্যস্ততম দিনেই মন খারাপের মরসুম। মিনার-বিজলি-ছবিঘরে নতুন বউকে নিয়ে ‘ফুলেশ্বরী’ অথবা ‘পলাতক’ দেখে রেস্তরাঁয় খাওয়া দাওয়া করা দিনগুলোকে আজ বড্ড মনে পড়ছে আপামর বাঙালির। তাই এনটিওয়ান স্টুডিওতে যখন মরদেহ প্রবেশ করল তখন রাস্তার উল্টো দিকে অসংখ্য মানুষের ভিড়। NT1 স্টুডিওতে তখন একে একে উপস্থিত হয়েছেন টলি- টেলি জগতের নক্ষত্ররা। উপস্থিত হয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন (Indranil Sen)। পাশাপাশি স্টুডিওতে কাজ করছিলেন যে শিল্পীরা তাঁরাও ফ্লোর ছেড়ে চোখের জলে শেষ বিদায় জানাতে এসেছেন অভিভাবক তরুণ মজুমদারকে। অভিনেতা রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায় (Rahul Banerjee), দোলন রায় (Dolon roy), সুমন্ত মুখোপাধ্যায় (Sumanta Mukherjee), শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, দেবদূত ঘোষ – রা ততক্ষণে পৌঁছে গেছেন। আগেই বলা হয়েছিল কোনও আড়ম্বর চান না প্রয়াত পরিচালক, সেইমতো ফুল নিয়ে আসাও বারণ ছিল। অত্যন্ত সাদামাটা ভাবে বিদায় নিতে চেয়েছিলেন তিনি। তাঁর শেষ ইচ্ছেকে সম্মান জানিয়েছে তাঁর পরিবার, রাজ্য সরকার এবং কলাকুশলীরা। NT1 স্টুডিওতে উপস্থিত হন বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী, শতরূপ ঘোষ -রা। সবার সঙ্গে কথা বলেন ইন্দ্রনীল সেন, স্বরূপ বিশ্বাস। যেহেতু তাঁর দেহদান করার কথা এসএসকেএমে তাই কোনও ভাবেই ঝুঁকি নিতে চান নি ডাক্তারেরা। বাড়ির লোক জানায় তাঁকে অনাড়ম্বর ভাবেই বিদায় দেওয়ার কথা। গাড়ির কাঁচ ভেদ করে ক্যামেরা তখন , চোখে চশমা আঁটা, সাদা চাদরে ঢাকা বাংলা ছবির অন্যতম জনপ্রিয় পরিচালককে বিদায় জানাতে ব্যস্ত। মিনিট ২০ মতো এনটিওয়ান স্টুডিও তে রাখার পর তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় পিজি হাসপাতালে। যে স্টুডিও পাড়ায় তাঁর ছিল নিত্য যাতায়াত, সেখানেই শেষবারের মতো ঘুরে গেলেন পরিচালক। চলে গেলেন না ফেরার দেশে।



Previous articleমুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ঢুকে পড়া সন্দেহভাজনের সাত দিনের পুলিশ হেফাজত
Next articleওনার ছবিগুলি আঁকার মতো সুন্দর: মাধবী