স্বাস্থ্যক্ষেত্রে জিএসটি বৃদ্ধি কেন্দ্রের, চিকিৎসার খরচে নাজেহাল আমজনতা

হাসপাতালের কোন খাতে কত খরচ তা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। এমনকি মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে স্বাস্থ‌্যবিমার উপর ১৮ শতাংশ জিএসটির বোঝা কমানোর পথেও হাঁটেনি কেন্দ্র। হিসেব বলছে, গোটা দেশে স্বাস্থ‌্যবিমার বাইরে রয়েছেন প্রায় ৬২ শতাংশ মানুষ । ফলে তাঁদের হাসপাতালের খরচ মেটাতে হয় নিজের পকেট থেকেই।

সাধারণ মানুষকে সমস্যায় ফেলে একের পর এক জিনিসের দাম বাড়িয়ে চলেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার (BJP)। এবার জীবন নিয়ে খেলতে শুরু করেছে কেন্দ্র। পেট্রোপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির পর এবার কোপ স্বাস্থ্য খাতেও। সম্প্রতি বর্ধিত জিএসটি’র (GST) বোঝার জেরে নাজেহাল সাধারণ মানুষ। মাস তিনেক আগেই প্রায় ৮০০ জীবনদায়ী ওষুধের দাম বেড়েছে। এবার স্বাস্থ‌্যক্ষেত্রে (Health Sector) জিএসটির বোঝা ১২ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৮ শতাংশ হয়েছে। ফলে স্বস্তি কমে শাস্তি বাড়ল দেশবাসীর।

সঠিক মানের চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া যে কোনও মানুষের নাগরিক অধিকার। এবার সেখানেই হস্তক্ষেপ কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের। । গত সপ্তাহে চণ্ডীগড়ে জিএসটি (GST) কাউন্সিলের যে দু’দিনব‌্যাপী বৈঠক হয় সেখানে যে প্রস্তাবগুলি করা হয়েছিল তাতে ইতিমধ্যেই সিলমোহর দিয়েছে কেন্দ্র। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে জিএসটি’র বোঝা ১২ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৮ শতাংশে উঠে বসেছে। কয়েকমাস আগেই জীবনদায়ী ওষুধের দাম বাড়াবার পর এবার হাসপাতালেও বাড়ছে চিকিৎসার খরচ। শয্যা ভাড়া থেকে প্রয়োজনীয় ওষুধ সবের দাম বাড়ানর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। এমনকি ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান্ট- এর উপরেও জিএসটি বসছে। আসলে বায়ো মেডি‌ক‌্যাল ওয়েস্ট বা চিকিৎসা ক্ষেত্রের বর্জ‌্য নষ্ট করার জন‌্য বিশেষ প্ল‌্যান্ট ইনস্টল করা হয় হাসপাতালগুলিতে। এবার তার উপরেও বসছে ১২ শতাংশ কর। ফলে খরচ বাড়ছে, আর তাতে মোটেই খুশি নয় স্বাস্থ্যমহল। চিকিৎসকেরা বলছেন, নিশ্চিতভাবেই এই জিএসটি বৃদ্ধির বোঝা সাধারণ মানুষের উপর চাপবে। কারণ কোনও হাসপাতালই নিজেদের পকেট থেকে এই টাকা বহন করতে চাইবে না, এবং তারা তা পারবেও না। ফলে চিকিৎসার খরচ বাড়বে অনেকটাই। তাছাড়া আইভিএফের (IVF) মতো চিকিৎসা এতদিন জিএসটির বাইরে ছিল। এবার তার উপরেও জিএসটি দিতে হবে। এমনিতেই আইভিএফের খরচ অধিকাংশ বিমাতেই অন্তর্ভুক্ত হয় না। ফলে তার বিপুল খরচও যাবে সাধারণ মানুষের পকেট থেকে। এখানেই শেষ নয় ফিকি’র (FICCI) তরফে বলা হয়েছে,জিএসটি-এর নতুন নিয়মের জেরে শুধু যে রোগীর উপর বোঝা চাপবে তা-ই নয়, অধিকাংশ হাসপাতালই বহু অস্ত্রোপচার প‌্যাকেজ হিসাবে করে । নতুন নিয়মে কীভাবে জিএসটি প্রয়োগ করা হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। ফলে হাসপাতালের কোন খাতে কত খরচ তা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। এমনকি মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে স্বাস্থ‌্যবিমার উপর ১৮ শতাংশ জিএসটির বোঝা কমানোর পথেও হাঁটেনি কেন্দ্র। হিসেব বলছে, গোটা দেশে স্বাস্থ‌্যবিমার বাইরে রয়েছেন প্রায় ৬২ শতাংশ মানুষ । ফলে তাঁদের হাসপাতালের খরচ মেটাতে হয় নিজের পকেট থেকেই। তাই সাধারণ মানুষকে ফের বিপদে ফেলল কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত।


Previous articleনূপুরের পর পয়গম্বরকে নিয়ে ফের কুমন্তব্য, সাসপেন্ড বিজেপি নেতা
Next articleআপাতত অর্জুনের নিরাপত্তার দায়িত্বে রাজ্য, নির্দেশ হাইকোর্টের