করোনা (Corona) কাটার মাঝেই ক্রমাগত বাড়ছে নাইরোবি ফ্লাই – এ (Nairobi Fly) আক্রান্তের সংখ্যা। উত্তরবঙ্গ (North Bengal),ভুটান (Bhutan)সীমান্ত সহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় প্রতিদিন বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। অ্যাসিড পোকার (Acid Fly)হানায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে শিলিগুড়িতেও। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতি বর্ষণে বিধ্বস্ত উত্তরবঙ্গে এক ধরনের পোকার উৎপাত বেড়েছে। যার দেহের বিষাক্ত রসে অনেকেই চর্ম রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। চিকিৎসকেরা বলছেন আতঙ্কিত হবার দরকার নেই, তবে সজাগ থাকতে হবে।
উত্তরবঙ্গের নতুন ত্রাস নাইরোবি ফ্লাই (Nairobi Fly)নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কোন প্রয়োজন নেই, পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। জানা গেছে ছোট্ট এই পোকা মূলত ঝোপঝাড় ও বিভিন্ন এলাকায় দেখতে পাওয়া যায়। বর্ষাকালে এর উপদ্রব অনেকটাই বাড়ে। এই পোকার শরীরে পিডেরিন (Piderin)নামে অ্যাসিড জাতীয় বিষাক্ত পদার্থ থাকে। পোকাটি দেহের উপর বসলে অনেকেই তাকে মেরে ফেলে। তখনই শরীরের সংস্পর্শে আসে পিডেরিন (Piderin),তারপর ত্বকের উপর লালচে দাগ এবং ফুঁসকুড়ি হয় এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে ক্ষত। নাইরোবি ফ্লাই নামে পরিচিত লম্বাটে এই পোকা প্রাপ্তবয়স্ক হলে মাথা পেটের উপরের অংশ এবং দেহের একেবারে নিচের অংশ কালচে হয় বুক ও পেটে লালচে রং দেখা যায়। অযথা আতঙ্কিত হবেন না এই পোকার বিষয় বিস্তারিত জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন এই ধরনের পোকা হুল ফোটাতে পারে না বা কাউকে কামড়ায় না। এদের দেহে যে পিডেরিন থাকে, তা গোখরোর বিষের থেকেও প্রায় ১৫ গুণ বেশি শক্তিশালী এবং কোষের ভেতর ঢুকে কোষের বিভাজন বন্ধ করে দেয়। এই পোকা চোখে লাগলে চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এর প্রতিরোধের উপায় বাতলাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
নাইরোবি ফ্লাই এর সংস্পর্শে মানুষের ত্বক এলে তীব্র জ্বালা হয় এবং ক্ষত সৃষ্টি হয়। খুব বেশি ব্যথা বা যন্ত্রণা হলে প্যারাসিটামল,অ্যান্টি অ্যালার্জিক ওষুধ, স্টেরয়েড লোশন ইত্যাদি কাজ দেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে বেশ কিছু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করলে এই বিপদ থেকে আগাম মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
প্রতিরোধের উপায়:
১) বর্ষাকালে এমনিতেই পোকার উপদ্রব বাড়ে, তাই সবসময় মশারি টাঙিয়ে ঘুমনো দরকার।
২) শোবার আগে বিছানা-বালিশ ভাল করে ঝেড়ে নিন, তারপর ঘুমতে যান।
৩) ঘরে উজ্জ্বল সাদা আলোর বদলে কম উজ্জ্বল হলুদ রঙের আলো জ্বালান।
৪)জানালায় নেট লাগান বা সূর্যাস্তের আগেই জানালা বন্ধ করে দিন।
৫) অন্ধকারে মোবাইল ফোনের ব্যবহার এড়িয়ে চলুন।
৬)কখনও এই পোকা গায়ে বসলে আঘাত না করে আলতো করে ঝেড়ে ফেলে দিন। জোর করে মারতে যাবেন না।
৭)যদি এই পোকা গায়ে বসে ও চাপ লেগে চেপে যায়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে সাবান দিয়ে ত্বক ধুয়ে ফেলুন। হাতের কাছে সাবান না থাকলে জল দিয়ে সেই জায়গা পরিষ্কার করে নিন।
অযথা ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। সাবধানতা অবলম্বন করলেই এই পোকার আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পাবেন।