ভারত-বাংলাদেশ আন্তঃদেশীয় ট্রেনে বাড়ছে যাত্রী সংখ্যা

খায়রুল আলম, ঢাকা: অতিমারি করোনার সময়ে প্রায় দুই বছর বন্ধ ছিল ভারত-বাংলাদেশের রেল(India Bangladesh train) যোগাযোগ। সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ কমে যাওয়ায় গত ২৯ মে থেকে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যকার তিনটি রুটে পুনরায় যাত্রা শুরু করে তিন আন্তঃদেশীয় ট্রেন। গত ৭ জুলাই পর্যন্ত মৈত্রী, বন্ধন এবং মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনে ৯ হাজার ৯০৫ জন যাত্রী ভারতে গেছেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের রেল মন্ত্রক(Bangladesh rail ministey)।

দেশটির রেলওয়ের টিকিট বিক্রির সহায়ক প্রতিষ্ঠান ‘সহজ-সিনেসিস-ভিনসেন’ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যকার ট্রেনগুলো প্রায় ২৬ মাস বন্ধ ছিল। দুই দেশে করোনা সংক্রমণ কমে যাওয়ায় গত ২৯ মে থেকে পুনরায় ট্রেন চলাচল শুরু হয়। ওই দিন (২৯ মে) মৈত্রী এক্সপ্রেস, বন্ধন এক্সপ্রেস চলাচল শুরু করে। এছাড়া গত ১ জুন থেকে চলাচল করছে মিতালী এক্সপ্রেস। সূত্রের খবর, দীর্ঘ ২৬ মাস পর গত ২৯ মে বাংলাদেশ থেকে ভারতের কলকাতার উদ্দেশে পুনরায় যাত্রা শুরু করে মৈত্রী এক্সপ্রেস। যাত্রার প্রথম দিন ১৬৫ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকা ছাড়ে ট্রেনটি। ৪৬৫ আসনের এ ট্রেন বৃহস্পতিবার বাদে সপ্তাহে ৬ দিন ঢাকা থেকে কলকাতার উদ্দেশে যাত্রা করে। সেই হিসেবে, গত ২৯ মে থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত শুধুমাত্র বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় গিয়েছে ৩৪ বার। এই ৩৪ বারে ট্রেনটি মোট যাত্রী বহন করেছে ৭ হাজার ৬৬৯ জন।

এদিকে একই দিন (২৯ মে) ভারতের কলকাতা থেকে বাংলাদেশের খুলনা রেলস্টেশনে আসে দ্বিতীয় আন্তঃদেশীয় ট্রেন বন্ধন এক্সপ্রেস। এই ট্রেনটিও করোনার কারণে ২৬ মাস বন্ধ ছিল। প্রথম দিন (২৯ মে) দুপুর ৩টায় ৭১ জন যাত্রী নিয়ে খুলনা ছাড়ে। এই ট্রেনের আসন সংখ্যা ৪৫৬টি। এর মধ্যে ৩১২টি এসি চেয়ার ও ১৪৪টি প্রথম শ্রেণির আসন। ট্রেনটি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার ও রবিবার খুলনা-কলকাতা রুটে চলাচল করে। সেই হিসেবে গত ২৯ মে থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত শুধুমাত্র খুলনা থেকে কলকাতায় গিয়েছে ১২ বার। এ ১২ বারে ট্রেনটি মোট যাত্রী বহন করেছে ১ হাজার ৪৫১ জন।

এ বছর ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে নতুন চালু হয় আন্তঃদেশীয় তৃতীয় ট্রেন মিতালি এক্সপ্রেস। এতে দীর্ঘ দিন পর ঢাকা থেকে নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত পুরাতন রুটিটি নতুন করে আবার সচল হয়। ১৯৬৫ সালের পরে ৫৭ বছর পর ট্রেনটি এ বছর ১ জুন ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ১২ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশনে এসে পৌঁছায়। ৪০৯ আসনের এই আন্তঃদেশীয় ট্রেনটি বাংলাদেশ থেকে সপ্তাহে সোমবার ও বৃহস্পতিবার নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। সেই হিসেবে গত ১ জুন থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত শুধুমাত্র বাংলাদেশ থেকে জলপাইগুড়ি গিয়েছে ১১ বার। এ ১১ বারে ট্রেনটি মোট যাত্রী বহন করেছে ৭৮৫ জন।

নতুন করে চালুর পর থেকে গত ৭ জুলাই পর্যন্ত এসব ট্রেনে ৯ হাজার ৯০৫ জন যাত্রী বাংলাদেশ থেকে ভারতে গিয়েছেন। এসব ট্রেনের মধ্যে ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছাড়ে ২টি এবং খুলনা থেকে ছাড়ে একটি। এদিকে ট্রেনগুলো চালুর প্রায় এক মাস পরে আসন্ন ঈদুল আজহায় দেশের ভেতরে ট্রেন চলাচলে শিডিউল বিপর্যয় বন্ধে গত ৬ জুলাই থেকে আগামী ১৪ জুলাই পর্যন্ত মোট ৯ দিন এসব আন্তঃদেশীয় ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। করোনা মহামারির পর আন্তঃদেশীয় ট্রেনগুলোর যাত্রী সংখ্যা বেড়েছে না-কি কমেছে, এমন প্রশ্নের জবাবে ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশন ইনচার্জ লিটন চন্দ্র দে  বলেন, মিতালি এক্সপ্রেস নতুন ট্রেন। তাই এটার বিষয়ে তুলনা করতে পারব না। এবার বন্ধের শেষের দুদিন ট্রেনগুলোতে পূর্ণ আসনে যাত্রী ভারতে গেছে। ঈদের পর আবার যাত্রা শুরু হলে যাত্রী চলাচল বাড়তে পারে।


Previous articleবারবিকিউ পার্টির নামে ডেকে ছাত্রীর শ্লীলতাহানি, বাংলাদেশে গ্রেফতার শিক্ষক
Next articleতৃণমূলপন্থী অধ্যাপক সংগঠনগুলিকে এক ছাতার তলায় নিয়ে এলেন ব্রাত্য বসু