সাংসদ মহুয়া মৈত্রের মা কালীকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যকে রাজনীতির হাতিয়ার করতে মরিয়া বিজেপি। এবার শদুয়েক সাধুসন্ত এবং কালী মায়ের ছবি নিয়ে রাজভবনে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের কাছে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
তাঁদেরকে স্বাগত জানাতে আগে থেকেই যেন প্রস্তুত ছিল রাজভবন। সেখানে গিয়ে রাজ্যপালের হাতে কালীর ছবি ও স্মারকলিপি তুলে দেন শুভেন্দু। রাজ্যপাল নিজে রাজভবনে সামনে বেরিয়ে এসে বক্তব্য রাখেন। পরে একটি টুইটে ধনকড় জানান, দেবী কালী সম্পর্কে যা বলা হয়েছে তাঁর প্রতিবাদ করা হয়েছে। শুভেন্দু আধিকারীর সঙ্গে এসেছিলেন মেচেদা শঙ্খনাদ মন্দিরের সভাপতি ও প্রায় দুশোরও বেশি সাধু। তাঁরা এনিয়ে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।
Registering their forceful protest at unacceptable ignoble affront and outrage against Goddess Maa Kali #MAAKaali Sadhu Sant Samaj 200+ Delegation accompanied by President, Mecheda Sankhanad Temple @SuvenduWB submitted a representation to Guv seeking exemplary intervention. pic.twitter.com/9OEuGurfuS
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) July 12, 2022
অন্যদিকে, তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ শুভেন্দুর এমন ভূমিকার সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “ধর্ম নিয়ে নাটক করছে বিজেপি। রাজভবন রাজনীতির আখড়া হয়েছে। সত্যি-মিথ্যা না জেনে শুধুমাত্র তৃণমূল ও রাজ্য সরকারের বিরোধিতার জন্য রাজভবনকে ব্যবহার করা হচ্ছে।”
বিজেপির ধর্মের রাজনীতির পাল্টা দিয়ে কুণাল বলেন, “বিজেপির মুখপাত্ররা দেশজুড়ে অন্য ধর্মকে শুধু আঘাত করেছে তা নয়, দিলীপ ঘোষের মতো নেতারা মা দুর্গার পিতৃ পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। মা কালী বা হিন্দুদের কোনও আরাধ্য দেবদেবীর বা শক্তির কোনও অবস্থায় অপমান করেনি তৃণমূল। আমরা মনে করি, এদেশে সকলের নিজ নিজ ধর্ম পালনের সমান অধিকার আছে। কোনও দেবদেবীর ছবি বিকৃত করলে বা ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করলে তার বিরোধিতা করে তৃণমূল। কিন্তু কোথায় কীভাবে কোন পদ্ধতি বা রীতি মেনে কোনও দেবদেবীর পুজো হবে সেটা নিয়ে তৃণমূলের কোনও বক্তব্য নেই।”
সাধুসন্তদের নিয়ে শুভেন্দুর রাজভবনে দরবার দেওয়া প্রসঙ্গে কুণালের বক্তব্য, “আজ শুভেন্দু যাঁদের বা যে সকল ধর্মগুরু বা সাধু সন্ন্যাসীদের নিয়ে রাজভবন গিয়েছিল, তাঁদেরকে অসম্মান না করেই বলছি, তাঁদের ভুল বুঝিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সম্পূর্ন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রাণোদিত। বিজেপি বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। আর এ রাজ্যে বিজেপি নেতাদের অপদার্থ ভূমিকা দেখে রাজ্যপাল নিজেই দায়িত্ব নিয়েছেন। রাজ্যপাল পদের অবমাননা করে ব্যক্তিগতভাবে বিজেপির কাজ করছেন এই রাজ্যপাল। এটা হয় নাকি? রাজ্যপালের পদকে আমরা সম্মান করি। আমরা মনে করি রাজ্যপাল সবার। কিন্তু রাজ্যপাল পদে পদে প্রমাণ করে দিচ্ছেন তিনি বিজেপির দালাল। রাজভবনটা বিজেপি পার্টি অফিস।”
এদিকে NDA সমর্থিত রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুকে এদিন কলকাতায় মা কালীর ছবি উপহার দেওয়া হয়েছে। তাহলে এখন মা কালী কি বিজেপির কাছে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক হাতিয়ার? এনিয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, “মা কালীর ছবি যে কেউ যাকে ইচ্ছে দিতে পারেন। যারা কালীকে ভক্তি করেন তাদের হৃদয়ে থাকেন কালী। তারা তাঁকে রাজনীতির ময়দানে নামায় না। বিজেপি রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া। সব জিনিসের দাম বাড়ছে। তাই এখন কালীর ছবি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াতে চাইছে। অথচ, মা দুর্গাকে দিলীপ ঘোষের অপমান নিয়ে বিজেপি চুপ থাকে।”
আরও পড়ুন- কাঁথি পুরসভা থেকে রহস্যজনকভাবে উধাও সারদার ফাইল: অভিযোগের তির অধিকারী পরিবারের দিকে