পালস অক্সিমিটারের  নির্ভুল রিডিং চামড়ার রঙের ওপর নির্ভর করে ?

গবেষণার প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, যাঁদের গায়ের রং চাপা তাঁদের ক্ষেত্রে এই যন্ত্র সঠিকভাবে কাজ করে না।যদিও এই নিয়ে অনেক মতবিভেদ শুরু হয়েছে।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের সময় থেকে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে পাল্‌স অক্সিমিটার। চিকিৎসকেরাও পরামর্শ দিচ্ছেন, নিয়মিত রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা পরীক্ষা করার জন্য। কারোর যদি ৯৪-এর নীচে অক্সিজেনের মাত্রা নেমে যায়, তবে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগও করতে হবে। তাই কোভিডের দৌলতে এই যন্ত্রটি এখন অধিকাংশেরই ঘরে।

ইংল্যান্ডে জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা বা এনএইচএস এবং ওষুধ নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বলছে, এই যন্ত্রটি কখনো কখনো অক্সিজেনের মাত্রা বাড়িয়ে দেখাতে পারে।চিকিৎসকরা বলছেন, এই যন্ত্রটি রক্তের ভেতর দিয়ে আলো প্রবাহিত করে এবং রোগীর ত্বক এই আলো কতোটা শুষে নেবে সেটা ত্বকের পিগমেন্টেশন বা রঙের ওপর নির্ভর করে। তার ওপরে ভিত্তি করেই যন্ত্রটি নির্ধারণ করে রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ কতো।এরকম ক্ষেত্রে একবারের রিডিং-এর ওপর নির্ভর না করে বেশ কয়েকবার অক্সিজেনের মাত্রা পরীক্ষা করে দেখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ব্রিটেনে কৃষ্ণাঙ্গ, এশীয় এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর কোভিড রোগীদের পাল্স অক্সিমিটার ব্যবহারের বিষয়ে এই পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

সাম্প্রতিক এক গবেষণা এই যন্ত্রের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। গবেষণার প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, যাঁদের গায়ের রং চাপা তাঁদের ক্ষেত্রে এই যন্ত্র সঠিকভাবে কাজ করে না।যদিও এই নিয়ে অনেক মতবিভেদ শুরু হয়েছে। জন্‌স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেছেন, পাল্স অক্সিমিটারের ভুল ফলাফলের ফলে ‘ব্ল্যাক এবং হিস্পানিক’ কোভিড রোগীদের শনাক্ত করা যায়নি। এই সব রোগীদের স্টেরয়েড ডেক্সামেথাসোন এবং অ্যান্টিভাইরাল রেমডেসিভিরের মতো ওষুধের প্রয়োজন ছিল। সময় মতো রোগ নির্ণয় সম্ভব হয়নি বলে তাঁদের অবস্থার অবনতি হয়।

প্রাথমিক ভাবে অক্সিমিটার ব্যবহার করে দেখা যায় সেই রোগীদের শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা স্বাভাবিক। কিন্তু পরে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায় যে, তাঁদের শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা অনেকটাই কম। পাশাপাশি কৃষ্ণাঙ্গদের ক্ষেত্রে অক্সিজেন মাত্রায় হেরফের ধরা পড়েছে অক্সিমিটারে। যাঁদের গায়ের রং ফর্সা, তাঁদের ক্ষেত্রে অক্সিমিটারে অনেক বেশি সঠিক ফলাফল জানা গিয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, “রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ কতো এই যন্ত্রটি দিয়ে তা পরিমাপ করা হয়। এই পরিমাপ কতোটা নির্ভুল হবে সেটা কিছু বিষয়ের ওপর নির্ভর করে: আঙ্গুলে রক্ত চলাচল কেমন, চামড়ার পুরুত্ব কতো, চামড়ার রঙ কেমন, চামড়ার তাপমাত্রা ইত্যাদির ওপর।”

 

 

Previous articleসুন্দরবনের স্থায়ী সমাধান
Next articleফের ধাক্কা শেয়ারবাজারে, ৫০৮ পয়েন্ট নামল সেনসেক্স