বিজেপির কাছে মেরুদণ্ড বন্ধক, দিল্লিতেই রাষ্ট্রপতি ভোট দিচ্ছেন শান্তিকুঞ্জের বাপ-ব্যাটা

অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে দীর্ঘদিন দিল্লিমুখো হননি কাঁথির সাংসদ। তবে এ বার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য একেবারে চিকিৎসকের অনুমতি নিয়ে দিল্লির দরবারে পৌঁছে গিয়েছেন শিশিরবাবু। তাঁর পুত্র তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দুও বাবার সঙ্গে দিল্লিতে

আজ, সোমবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। সংসদ ভবন ও বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভাতে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। লড়াই NDA সমর্থিত প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে বিরোধীদের যশবন্ত সিনহার। বাংলার যে সকল সাংসদ রাজ্য বিধানসভায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিতে চান, তাঁদের জন্য ভোটদানের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। যেমন, আসানসোলের সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা ছাড়া তৃণমূলের সমস্ত লোকসভা ও রাজ্যসভার সাংসদরা ভোট দেবেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায়। কিন্তু, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবিকে সামনে রেখে তৃণমূলের প্রতীকে জিতে সাংসদ হলেও এখন কার্যত দল থেকে বিচ্ছিন্ন শিশির অধিকারী। তাই শিশিরবাবু ও তাঁর সাংসদ পুত্র দিব্যেন্দু দিল্লিতে গিয়েছেন ভোট দিতে। রবিবার সন্ধ্যার বিমানে রাজধানী উড়ে গিয়েছেন শান্তিকুঞ্জের বাপ-ব্যাটা।

আরও পড়ুন:বাংলার আপাতত দায়িত্ব সামলাবেন মণিপুরের রাজ্যপাল লা গণেশন

অথচ, অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে দীর্ঘদিন দিল্লিমুখো হননি কাঁথির সাংসদ। তবে এ বার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য একেবারে চিকিৎসকের অনুমতি নিয়ে দিল্লির দরবারে পৌঁছে গিয়েছেন শিশিরবাবু। তাঁর পুত্র তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দুও বাবার সঙ্গে দিল্লিতে। এখনও খাতায়-কলমে তাঁরা তৃণমূলের সাংসদ হলেও দিল্লি গিয়ে ভোট দেওয়ার মাধ্যমে অন্তত এটুকু বুঝতে অসুবিধা নেই তাঁরা শুভেন্দুর কথায় NDA প্রার্থীকেই সমর্থন করবেন।

অধিকারী পরিবারের দুই সাংসদের দিল্লি গিয়ে ভোট দেওয়া প্রসঙ্গে আগেই নাম না করে তোপ দাগেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, দিল্লির কাছে নম্বর বাড়াতে চায় বলেই অধিকারী পরিবারের এই দুই সদস্য তৃণমূলের টিকিটে জিতে সাংসদ হয়েও দিল্লিতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অংশ নিতে চান। এটাই ওই দুই সাংসদের কাছে অভিপ্রেত। যাঁরা দিল্লি গিয়েছিলেন, তাঁরা ফিরে এসেছেন। আর এরা দিল্লির কাছে নিজের মেরুদন্ড বন্ধক দিচ্ছেন, বক্তব্য অভিষেকের।

অন্যদিকে, তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এ প্রসঙ্গে তাঁর একটি টুইটে লিখেছিলেন, “শুনলাম তৃণমূল থেকে নির্বাচিত কোনও সাংসদ বলেছেন তিনি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে যশবন্ত সিনহাকেই ভোট দেবেন। কিন্তু দিল্লিতে গিয়ে গোপন ব্যালটে দেবেন। তিনি বরং ১৭ তারিখ কাঁথিতে ২১ জুলাই কর্মসূচির সমর্থনে দলের সভায় আসুন এবং পরের দিন দলের সিদ্ধান্ত মেনে কলকাতায় ভোট দিন। না হলে বুঝব মিথ্যা।”

আসলে মুখে না বললেও মনে মনে বিজেপি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর বাবা শিশির অধিকারী ও ভাই দিব্যেন্দু। শিশিরবাবুকে তো বিজেপির মঞ্চেও দেখা গিয়েছে। তখনই তৃণমূলের টিকিটে জেতা অধিকারী পরিবারের সাংসদের সঙ্গে বিজেপি যোগ স্পষ্ট হয়েছে। কিন্তু সাংসদ পদ আগলে বসে রয়েছেন তাঁরা। দল বিরোধিতার জেরে যদি সাংসদ পদ খোয়াতে, তাই আতঙ্ক থেকে দিব্যেন্দু আবার আগেভাগে যশবন্ত সিনহাকে ভোট দেবেন বলেন প্রচার করে দিয়েছেন। আর শিশিরবাবু তো ভাঙবো তবু মচকাবো না ফর্মুলায় জানিয়েছেন, কাকে ভোট দেবেন সেটা তিনি বলবেন না।



Previous articleবাংলার আপাতত দায়িত্ব সামলাবেন মণিপুরের রাজ্যপাল লা গণেশন
Next articleরেলপথে ফের যোগাযোগ শুরু রাজ্যের সঙ্গে ত্রিপুরার