বন্ধ কারখানার উদ্বৃত্ত জমি ব্যবহার করে নতুন শিল্প: নীতি নির্ধারণের কথা ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

বিভিন্ন বন্ধ কারখানা ও শিল্পের উদ্বৃত্ত জমি ব্যবহার করে নতুন শিল্প গড়ার নীতি নেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Bandopadhyay)। বৃহস্পতিবার, আনুষ্ঠানিক ভাবে রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী হিসাবে দ্বায়িত্ব নেওয়ার পরেই আলিপুরের সৌজন্যে শিল্পমহলের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি জানান,

• বেলুড় নিসকোর কারখানার একশো একর জমি ব্যবহার করে লজিস্টিক হাব তৈরি করবে আদানি গোষ্ঠী।
• আলিপুর এলাকায় পূর্বতন সংশোধনাগারের জমি সহ ১০০ একরের বেশি জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। ২০ একর জমিতে মিউজিয়াম তৈরি করা হবে।
•এছাড়াও উপনগরী তৈরির জন্য ৬টি এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে। যার চারটির নিলাম প্রক্রিয়া চলছে।

একদিন আগেই হিন্দ মোটর কারখানার জমি ফিরিয়ে নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন তিনি বলেন, *দুর্গাপুরে ডিপিএলের ৩০০০ একরের বেশি উদ্বৃত্ত জমি শিল্প পার্ক গড়ার জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে।* পাশাপাশি রাজ্যে শিল্পের বিকাশে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণের কথা এদিন তিনি তুলে ধরেছেন শিল্প মহলের সামনে।

দিঘায় নতুন মেরিন ড্রাইভ তৈরির কাজও শেষ। খুব শীঘ্রই মুখ্যমন্ত্রী নিজে তার উদ্বোধন করবেন। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, গত ১০ বছরে ৪.৫ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে শিল্পক্ষেত্রে। তার মধ্যে ৩.৪২ লক্ষ কোটি টাকা মাঝারি এবং ক্ষুদ্রশিল্পে ব্যাঙ্কঋণ হয়েছে। তাই এখন বড় প্রকল্পকে সামনে রাখা হয়েছে। তাজপুরের বন্দর নিয়ে দরপত্র ডাকা হয়েছে, বিনিয়োগ হবে ১৫ হাজার কোটি টাকা। ডেউচা-পাঁচামিতে ৩০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে। ৭২ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে জঙ্গলমহলেও।

উৎপাদন, ইস্পাত, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণেরও বিনিয়োগ প্রস্তাব আসছে। এটি ডানকুনি-অমৃৎসর ফ্রেট করিডরের আওতায় আসবে। সরকারের পরিকল্পনা, ডানকুনি-রঘুনাথপুর, ডানকুনি-কল্যানী এবং ডানকুনি-হলদিয়া শিল্প করিডর তৈরি করা হবে। এর সঙ্গে অশোকনগরে তেল, গ্যাস পাইপলাইন, দিঘায় কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন, এমএসএমই, চর্মশিল্প, ফুটপার্ক, সাইকেল তৈরির কারখানা, স্কুলের পোশাক তৈরির জন্য বিদ্যুৎচালিত তাঁত প্রকল্প এবং ইথানল, ডেটা সেন্টার নীতি তৈরি হয়েছে। কৃষিজাত পণ্য, উদ্যানপালন, মৎস্য, পর্যটনের বিপুল বিনিয়োগ সম্ভাবনা রয়েছে। শ্লোভানিয়ার একটি বড় সংস্থাও রাজ্যে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের জন্য একটি পৃথক নীতি প্রণয়নের জন্য এদিন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দাবি জানায় সংশ্লিষ্ট শিল্প মহল। এই বিষয়টিও খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

এদিনের বৈঠকে বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, ক্ষুদ্রশিল্প মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, পর্যটন মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন সহ অন্যান্য দফতরের মন্ত্রীরা-সহ মুখ্যসচিব, শিল্পসচিব ও রাজ্যের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা হাজির ছিলেন। বিভিন্ন বণিকসভার কর্তারা, শিল্পপতি, ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো। বাংলায় লগ্নি আনতে ইতিমধ্যেই সরকারের তরফে সৃজনশীল ও সিনেমার সঙ্গে জড়িত শিল্প এবং নলেজ ও ইনোভেশন ইকোনমিসহ মোট দশটি সেক্টর কমিটি গঠন করা হয়েছে। বৈঠকে সেগুলো নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

আরও পড়ুন:বিচারপতিদের আক্রমণ করার একটা সীমা আছে: ফের সংবাদ মাধ্যমকে ভর্ৎসনা শীর্ষ আদালতের

 

Previous articleবিচারপতিদের আক্রমণ করার একটা সীমা আছে: ফের সংবাদ মাধ্যমকে ভর্ৎসনা শীর্ষ আদালতের
Next articleদায় কেন্দ্রকেও নিতে হবে! তৃণমূল মানুষের কাছে দায়বদ্ধ কোনও নেতার কাছে নয়: অভিষেক