৯ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পরে শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউতকে হেফাজতে নিল ইডি

আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা সাজানো হয়েছে। মরে গেলেও আত্মসমর্পণ করব না। এর কয়েকঘণ্টা পরেই জমি দুর্নীতি মামলায় উদ্ভব ঘনিষ্ঠ সঞ্জয় রাউতকে হেফাজতে নিল ইডি।

বিজেপির প্রতিহিংসার ছবি এবার মারাঠা ভূমিতে। ফের শিরোনামে মহারাষ্ট্র, এবার আর্থিক তছরুপে অভিযুক্ত শিবসেনা (Shiv Sena)সাংসদ সঞ্জয় রাউতকে (Sanjay Raut) হেফাজতে নিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (Enforcement directorate)। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা বিজেপির প্রতিহিংসাপরায়ন নীতি নিয়ে। বিরোধীরা বলছেন রাউতকে গ্রেফতার করে প্রতিশোধ নিল ভাজপা (Bharatiya Janata Party)। আজ সকাল থেকেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করেন ইডি (ED) আধিকারিকরা। প্রায় ৯ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে হেফাজতে নিল ইডি। এর আগে একাধিকবার তাঁকে সমন পাঠান হয়েছিল, এমনকি তাঁর বয়ানও রেকর্ড করা হয়। কিন্তু তিনি তদন্তে অসহযোগিতা করছেন বলে জানান ইডি আধিকারিকরা। তাই এবার তাঁকে গ্রেফতার করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এই খবর সংবাদমাধ্যমে আসার পরই তাঁর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখান সঞ্জয় অনুগামীরা।

নেতা মন্ত্রী কিনে সরকার ফেলে দেওয়ার পর এবার উদ্ভব শিবিরের বিশ্বাসযোগ্য নেতা তথা শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউতকে গ্রেফতার করে নিজেদের প্রতিশোধ নিল মোদি সরকার। কারণ বিজেপির বিরোধিতা করে নতুন করে কংগ্রেসের সঙ্গে মিলে দল মজবুত করার কাজে উদ্ভব ঠাকরের প্রধান সহযোগী ছিলেন এই সঞ্জয় রাউত। সম্প্রতি মহারাষ্ট্রে উদ্ভব-সরকার ফেলে দেওয়ার পর,বিজেপি টার্গেটে ছিল সঞ্জয় রাউত, এমনটাই অভিযোগ করছেন বিরোধীরা। এবার ক্ষমতার অপব্যবহার করে ইডিকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করল পদ্ম শিবির। আজ সাতসকালে শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউতের বাড়িতে পৌঁছে যান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। রবিবার সকালে মুম্বইয় সাংসদের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। এর আগে বেআইনি অর্থ লেনদেন সংক্রান্ত মামলায় তাঁকে দু’বার হাজিরার নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। সাংসদ হাজিরা না দেওয়ায় এই তল্লাশি অভিযান বলে জানানো হয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে। প্রসঙ্গত, উদ্ধব ঘনিষ্ঠ সঞ্জয় রাউত নরেন্দ্র মোদীর সমালোচক হিসেবেই পরিচিত। ঘটনাকে ঘিরে ফের একবার মহারাষ্ট্রের রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এর আগে সকালে সঞ্জয় রাউত টুইট করে জানিয়েছেন, তিনি শিবসেনা ছাড়বেন না। তিনি বলেছেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা সাজানো হয়েছে। মরে গেলেও আত্মসমর্পণ করব না। এর কয়েকঘণ্টা পরেই জমি দুর্নীতি মামলায় উদ্ভব ঘনিষ্ঠ সঞ্জয় রাউতকে হেফাজতে নিল ইডি।

উল্লেখ্য ২০২০ সালে মুম্বইয়ের পত্র চউল নামে একটি আবাসন প্রকল্পে এক হাজার কোটি টাকার বেআইনি আর্থিক লেনদেনের মামলায় শিবসেনার এই সাংসদের নাম জড়িয়েছে। আর সেই কারণেই সরাসরি ইডি স্ক্যানারে চলে এসেছেন তিনি। এর আগে কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি সোনিয়া গান্ধীকে (Sonia Gandhi) দু’দিন পর পর তিন দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি (ED)। ন্যাশনাল হেরান্ড মামলায় তাঁরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। রাহুল গান্ধীকেও একাধিকবার হাজিরা দিতে হয়েছে চলতি মাসেই। এর মাঝেই গ্রেফতার সঞ্জয় রাউত। জমি দুর্নীতির মামলায় এপ্রিলে রাউতের স্ত্রী বর্ষা এবং ও তাঁর দুই সহযোগীর সাড়ে ১১ কোটি টাকারও বেশি সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি (ED)।


Previous articleসুদীপ্ত সেনকে জিজ্ঞাসাবাদে কাঁথি বহুতল কেলেঙ্কারির চাঞ্চল্যকর তথ্য পেল পুলিশ
Next articleদিল্লি সফরে অবিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা মমতার, জল্পনা সোনিয়াকে নিয়েও