সুদীপ্ত সেনকে জিজ্ঞাসাবাদে কাঁথি বহুতল কেলেঙ্কারির চাঞ্চল্যকর তথ্য পেল পুলিশ

কাঁথির আইসি অমলেন্দু বিশ্বাস বলেন, সুদীপ্ত সেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তারা একাধিক তথ্য পেয়েছেন। এই তথ্যগুলি আগামী দিনে এই তদন্তে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি হয়ে উঠতে চলেছে।

সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে মিলেছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। আগামী দিনে সেই তথ্য তদন্তের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি হয়ে উঠতে চলেছে। কাঁথি পুরসভা থেকে সারদা বহুতলের ফাইল লোপাটের তদন্তে সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনকে জিজ্ঞাসাবাদের পর জানালেন কাঁথি থানার আইসি অমলেন্দু বিশ্বাস। রবিবার দুপুর ১২ টা নাগাদ প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে গিয়ে কাঁথি থানার আইসি  অমলেন্দু বিশ্বাস সহ ৫ জন পুলিশ আধিকারিক সুদীপ্ত সেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। সেখানে প্রায় তিন ঘন্টা কুড়ি মিনিট চলে জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব।

এরপর দুপুর তিনটে নাগাদ তারা জেলের বাইরে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। কাঁথি থানার আইসি অমলেন্দু বিশ্বাস বলেন, সুদীপ্ত সেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তারা একাধিক তথ্য পেয়েছেন। এই তথ্যগুলি আগামী দিনে এই তদন্তে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি হয়ে উঠতে চলেছে। তদন্তের গতি প্রকৃতি কোন দিকে সেটা দু তিন সপ্তাহ অপেক্ষা করলেই আপনারা জানতে পারবেন বলে তিনি জানান।

তাকে প্রশ্ন করা হয়, শুভেন্দু অধিকারী ও সৌমেন্দু অধিকারীর নাম সুদীপ্ত সেন তাদের কাছে বলেছেন কিনা। সেই প্রশ্নের উত্তরে আইসি জানান, যেহেতু তদন্ত চলছে তাই সবকিছু সংবাদমাধ্যমের কাছে বলা সম্ভব নয়। কিন্তু সুদীপ্ত সেনকে জেরা করে যে তথ্য উঠে এসেছে তা এই মামলার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কাঁথির অনেকেই এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং অনেকেই এই টাকা লেনদেনে উপকৃত হয়েছেন। সারদা সংক্রান্ত ফাইল কাঁথি পুরসভা থেকে কিভাবে লোপাট হলো সেই দিকটি তারা খতিয়ে দেখছেন। এবং সুদীপ্ত সেনের বয়ান সেক্ষেত্রে তাদের কাজে লাগবে বলেই তিনি জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, সুদীপ্ত সেনের অভিযোগ, শুভেন্দু অধিকারীর (Subhendu Adhikari) কথায় রাখাল বেরা তাঁকে নিয়ে যান। সেখানে শুভেন্দু এবং সৌমেন্দু অধিকারীর কথায় বহুতলের নাম করে তাঁর কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা নেওয়া হয়েছে। প্রথমে ড্রাফটে এবং পরে ব্ল্যাকমেইল করে নগদে কোটি কোটি টাকা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ সারদা কর্তার। এমনকী, আদালতে চিঠি লিখেও এই কথা স্পষ্ট জানিয়েছেন সুদীপ্ত সেন। এখন সারদার সেই বহুতল সংক্রান্ত ফাইল কাঁথি পুরসভা থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে। পুরসভার পক্ষ থেকে সৌমেন্দু অধিকারী (Soumendu Adhikari)-সহ তিনজনের বিরুদ্ধে কাঁথি থানায় এফআইআর (FIR) করা হয়েছে। এই বিষয়ে তদন্তে নেমে সুদীপ্ত সেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি চেয়েছিল পুলিশ। সেই অনুমতি তাদের দিয়েছে আদালত।

হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ও কলকাতার মুখ্য মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে চিঠি দিয়ে সারদা (Sarada) কর্তা সুদীপ্ত সেন দাবি করেছিলেন, সারদার টাকা নিতেন শুভেন্দু অধিকারী। কত টাকা, কী ভাবে নিতেন তাও চিঠিতে বিস্তারিত ভাবে উল্লেখ করেন সুদীপ্ত সেন। সল্টলেকের সাংসদ-বিধায়কদের আদালতে হাজিরা দিতে গিয়েও শুভেন্দু অধিকারীর (Subhendu Adhikari) বিরুদ্ধে সারদার টাকা নেওয়ার অভিযোগ করেন তিনি। কোটি টাকার ওপর হাতিয়েছে কাঁথির অধিকারী পরিবার- ৩০ জুন ব্যাঙ্কশাল কোর্টে হাজিরা দেওয়ার আগে অভিযোগ করেন সারদাকর্তা। তাঁর অভিযোগ, প্ল্যান পাশ করানোর জন্য টাকা নিয়েও শুভেন্দু অধিকারী তা করেননি। শুভেন্দু ভাই সৌমেন্দু অধিকারী ও টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন সুদীপ্ত সেন।

 

 

 

Previous articleঅর্পিতাকে সঙ্গে নিয়ে বহুমূল্য সোনার গয়না কিনে দিতেন পার্থ! কোথা থেকে কিনতেন ব্র্যান্ডেড জুয়েলারি?
Next article৯ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পরে শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউতকে হেফাজতে নিল ইডি