পার্থ-অর্পিতার বাংলাদেশ যোগের সন্ধান পেল ইডি

নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে এবার মিলল বাংলাদেশ যোগের সন্ধান পেল ইডি। তদন্তকারীদের দাবি, কোটি কোটি টাকা পাচার হয়েছে সীমান্তের ওপারে। পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের অংশীদারি ব্যবসা ‘অপা ইউটিলিটি সার্ভিসেস’-এর আড়ালে এই লেনদেন হয়েছে। সেই বিপুল টাকার একটা অংশ এক টেক্সটাইল সংস্থার নামে পদ্মাপারের ব্যাঙ্কে গচ্ছিত আছে বলে জানতে পেরেছে ইডি। এবার তদন্তকারীদের নজরে সেই সম্পত্তিও। পার্থ-অর্পিতার ‘অপা ইউটিলিটি সার্ভিসেস’-এর নাম বুধবার এজলাসে জানান ইডির আইনজীবী অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এম রাজু। সামনে আসে একাধিক সম্পত্তির হিসেব।

আজ, শুক্রবার ফের আদালতে তোলা হয়েছে পার্থ-অর্পিতাকে। এর আগে বৃহস্পতিবার ইডির টিম ফের পণ্ডিতিয়া রোডের অভিজাত আবাসনের বাজেয়াপ্ত করা ফ্ল্যাটে হানা দেয়। যদিও তল্লাশিতে কিছুই মেলেনি।
এখন প্রশ্ন উঠেছে, কী পরিষেবা দিত এই সংস্থা? কেন্দ্রীয় সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালের পর থেকে বাংলাদেশের একটি বড় মাপের টেক্সটাইল কোম্পানির সঙ্গে ‘অপা’র প্রচুর টাকার লেনদেন হয়েছে। তার জন্য ইনভয়েস (চালান) ইস্যু, অনলাইন পেমেন্ট কিছুই বাদ যায়নি। বাংলাদেশের ব্যাঙ্কে ওই টেক্সটাইল কোম্পানির দু’টি অ্যাকাউন্টে যাবতীয় টাকা ‘সযত্নে’ রাখা।

এরই পাশাপাশি পার্থ ও অর্পিতার আত্মীয়দেরও বেশ কিছু কোম্পানির অস্তিত্ব পাওয়া  গিয়েছে। ‘অপা’র ব্যালান্স শিট খতিয়ে দেখতে গিয়ে তদন্তকারীদের হাতে আসে এই তথ্য। শুধুই কি একটাই টেক্সটাইল কোম্পানির সঙ্গে লেনদেন? না। জমি-ফ্ল্যাট, হোটেল কিংবা বাংলো কেনাবেচার মতো বিভিন্ন ধরনের লেনদেনে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করত পার্থ-অর্পিতার সংস্থা। ইডির দাবি, পরিষেবা দেওয়ার নাম করে অন্য ব্যক্তিদের দিয়ে বিভিন্ন সম্পত্তি কেনার ফন্দি এঁটেছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী ও তাঁর বান্ধবী।

আরও পড়ুন- পার্থ-অর্পিতার জেল হেফাজত চাইল ইডি, রায়দান আপাতত স্থগিত
বাংলাদেশের ওই সংস্থার সঙ্গে ‘অপা’র লেনদেনের ইনভয়েসও উদ্ধার হয়েছে। টেক্সটাইল সংক্রান্ত বিভিন্ন সামগ্রী কেনা হয়েছে বলে খবর। ইডির আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন, ফি সপ্তাহে তো বটেই, এমনকী কখনও কখনও একদিনে কোটি কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে টেক্সটাইল কোম্পানির অ্যাকাউন্টে। আর এই টাকার পরিমাণ দেখে কপালে ভাঁজ পড়েছে তদন্তকারীদের।

তদন্তকারীরা মনে করছেন, আসলে এই বাংলাদেশের কোম্পানি একটি ঢাল। এর মাধ্যমে প্রচুর টাকা বাংলাদেশের অ্যাকাউন্টে রাখা হতো। যদিও তার অঙ্কটা এখনও ইডির কাছে স্পষ্ট নয়।এমনকী, ব্যালান্স শিট অনুযায়ী এই কোম্পানি থেকে অর্পিতা নিজের নামেও বেশ কিছু বিউটি পার্লারের সামগ্রী, গয়না কিনেছিলেন। সেগুলি দুবাই থেকে বাংলাদেশ ঘুরে আসত তাঁর হাতে। এখন প্রশ্ন, আদৌ সেসব কেনা হয়েছিল তো? নাকি সবই ভুয়ো ইনভয়েস? সামগ্রীগুলিই বা কোথায়? এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে তদন্ত শুরু করেছেন ইডির আধিকারিকরা।

 

 

 

Previous articleথাইল্যান্ডের নাইটক্লাবে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মৃত অন্তত ১৪, আহত ৪০
Next articleপ্রয়াত প্রাক্তন ফুটবলার নরিন্দর থাপা