দেরিতে হলেও ক্ষমতা পেলেন তেজস্বী, বিহারে বিরোধী শুধু বিজেপি

এদিনের তেজস্বী যাদবের (Tejaswi Yadav) শপথের দৃশ্য হয়ত দেখা যেত ২বছর আগেই। কিন্তু সেই সময়ই রাজনৈতিক ডামাডোলে সেই সুযোগ হয়নি। বুধবার, উপমুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন আরজেডি(RJD) প্রধান লালুপ্রসাদ যাদবের পুত্র তেজস্বী। আর দায়িত্ব নিয়েই বুঝিয়ে দিলেন লক্ষ্য কর্ম সংস্থান।

বিজেপি শুধু কিনতে জানে। আর ভয় দেখাতে জানে। আমরা শুধু চেয়েছিলাম, যাতে বিহারে তাদের উদ্দেশ্য সফল না হয়। বিহারে সরকার ভেঙে নতুন সরকার গঠন করে বুধবার এমনই বার্তা দেন উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব। তিনি পরিষ্কার বুঝিয়ে দেন, বিজেপি আর যাই হোক, জোটসঙ্গী হিসেবে মোটেও বিশ্বস্ত নয়। আর, জোটসঙ্গীরাও বিজেপিকে বিশ্বাস করে না। বিশেষ করে মহারাষ্ট্রে তারা শিবসেনার(Shiv Sena) সঙ্গে যা করেছে, তার পর তো নয়ই। তেজস্বী আরও বলেন, বিহারের এই ঘটনার পর মধ্যভারতে বিজেপি আর কোনও জোটের অংশীদার রইল না।

লালুপুত্র আরও জানিয়েছেন, বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা (JP Badda) বলেছেন, তিনি আঞ্চলিক দলগুলোকে ধ্বংস করে দেবেন। তবে তাঁদের মনে রাখা উচিত আমরা জানি যে আদবানিজির রথ থামিয়ে দিয়েছিলেন লালুজি। আমরা কোনও মূল্যেই হাল ছাড়ব না।

চলতি বছরে তেজস্বী যাদবের (Tejashwi Yadav) আয়োজিত ইফতার পার্টিতে নীতীশের (Nitish Kumar) উপস্থিতি থেকেই বিহারে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যাচ্ছিল। এত বছর না গেলেও, এ বছরই সৌজন্য রক্ষার নামে তেজস্বীর পার্টিতে হাজির হন নীতীশ কুমার। সেখানে তাঁকে বিশেষ অতিথি হিসাবেই সম্ভাষণ করেন আরজেডি প্রধান (RJD)। খাবারও প্রথম পরিবেশন করা হয় বিহারের মুখ্যমন্ত্রীকেই। আর তারপর থেকেই বিহারের রাজনীতিতে শুরু হয় জোর জল্পনা। তবে বুধবার তাতে সিলমোহর পড়ল। এদিন দুপুরে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে টানা আটবার বিহারের মসনদে বসলেন নীতীশ। উপমুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন লালুপুত্র তেজস্বী।

২০১৫ সালে যে দলের হাত ছেড়েছিলেন, ২২ সালে এসে আরজেডির সেই চেনা হাতই ধরলেন নীতীশ কুমার। সেই সময় তিনি যখন জোট ছেড়ে বেরিয়ে যান তখন জোটসঙ্গীকে দুর্নীতিপরায়ণ এবং তৎকালীন আরজেডি প্রধান লালু প্রসাদ যাদবের দুই পুত্র তেজস্বী ও তেজ প্রতাপ যাদবকে আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত বলেই কটাক্ষ করেছিলেন নীতীশ কুমার। তবে দীর্ঘ ৭ বছর পর পুরনো সব স্মৃতিকে দূরে সরিয়ে একে অপরকে কাছে টেনে নিলেন। বিহারের রাজনীতিতে ফের ‘গোল্ডেন হ্যান্ডশেক’ করল আরজেডি ও জেডিইউ।

একেবারে সাম্প্রতিক সময়ের মহারাষ্ট্র (Maharashtra), আর দুবছরের কর্ণাটক (Karnataka)। বিরোধীদের দুরমুশ করে বিজেপি যেভাবে সে রাজ্যের সরকার ফেলে ক্ষমতায় এসেছিল তার সাক্ষী ছিল গোটা দেশ। সেই বিজেপির রথের গতি একদম উল্টোদিকে ঘুরিয়ে দিল বিরোধীরা। মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকে ঘোড়া কেনাবেচার (Horse Trading) অভিযোগ উঠেছিল গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে। কিন্তু সেই পথে না হেঁটে এবার বিরোধী জোট হাতে হাত মিলিয়ে বিহার সরকার থেকে উপড়ে ফেলল পদ্মকে। যা ভবিষ্যতে বিরোধীদের জোট গঠনে বাড়তি অক্সিজেন জোগাবে বলেই মতো রাজনৈতিক মহলের। বিহারের রাজনীতিতে (Bihar Politics) চাচা-ভাতিজা জোট সরকার যে বিজেপির ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গেল তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।

আরও পড়ুন- সুষ্ঠু পরিবহন ব্যবস্থায় হোয়াটসঅ্যাপ চালুর ভাবনা স্নেহাশিসের, ভূমিপুত্র পরিবহনমন্ত্রীকে পেয়ে বেজায় খুশি কানাইপুর

তবে পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ডের বিধায়করা আর্থিক দুর্নীতি মামলায় নিজেদের মুখ পুড়িয়েছেন। বিজেপি সরকার ফেলার তাগিদে ঝাড়খণ্ডের কংগ্রেস বিধায়কদের যেভাবে নাকানি চোবানি খাইয়েছে তা কিছুটা হলেও সাবধানী করেছে নীতীশকে। পড়শি রাজ্যের মতো নিজের সরকারেরও যাতে এমন চরম দুরবস্থা না হয় সেবিষয়টি মাথায় রেখেই কিছুটা পিছু হাঁটলেন সংযুক্ত জনতা দল সুপ্রিমো।

 

 

Previous articleসুষ্ঠু পরিবহন ব্যবস্থায় হোয়াটসঅ্যাপ চালুর ভাবনা স্নেহাশিসের, ভূমিপুত্র পরিবহনমন্ত্রীকে পেয়ে বেজায় খুশি কানাইপুর
Next articleকমনওয়েলথ গেমসে সোনাজয়ী অচিন্ত্যকে ৫ লক্ষ টাকা দেবে রাজ্য সরকার, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর