দুর্নীতিগ্রস্ত শুভেন্দুকে কেন ছাড়? এজেন্সির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে পথে এবার তৃণমূল ছাত্রযুবরা

আজ শুক্রবার ও আগামিকাল শনিবার শাসক দলের ছাত্র-যুবরা গোটা রাজ্যে ইডি-সিবিআইয়ের একপেশে ভূমিকা তুলে ধরে আন্দোলনে নামছে। জেলার পাশাপাশি কলকাতা শহরজুড়ে আন্দোলনে অংশ নেবে তৃণমূল ছাত্র-যুবরা

দুর্নীতির প্রশ্নে কোনও আপোস নয়। দলের কেউ দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলে, যত হেভিওয়েট হোন না কেন তার দায় একান্তই সংশ্লিষ্ট নেতা-নেত্রীর। দুর্নীতি ইস্যুতে “জিরো টলারেন্স” নীতি তৃণমূলের। তবে একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলির নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে ঘাসফুল শিবিরের তরফে। একই যাত্রায় পৃথক ফল দেখা যাচ্ছে সিবিআই-ইডিকে। বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেই হেনস্থা করা হচ্ছে। গ্রেফতার করা হচ্ছে। কেন এমন ভূমিকা তাদের? বিজেপিতে কি সবাই ধোয়া তুলসি পাতা? এ রাজ্যের পাশাপাশি বিজেপির অনেক নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তাদের গ্রেফতার করা তো দূরের কথা, ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করারও নজির সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যায়নি। ঠিক সেই জায়গা থেকে এবার পথে নামছে তৃণমূল। আজ শুক্রবার ও আগামিকাল শনিবার শাসক দলের ছাত্র-যুবরা গোটা রাজ্যে ইডি-সিবিআইয়ের একপেশে ভূমিকা তুলে ধরে আন্দোলনে নামছে। জেলার পাশাপাশি কলকাতা শহরজুড়ে আন্দোলনে অংশ নেবে তৃণমূল ছাত্র-যুবরা। পাশাপাশি, দু’দিনের এই কর্মসূচির পর ১৪ অগাস্ট স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে সভা করবেন খোদ দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সূত্রে খবর, এই সভা হবে বেহালার ম্যান্টনে। সেখান থেকেই দলের ভবিষ্যত কর্মসূচির ঘোষণা করবেন তৃণমূলনেত্রী।

গত ২৩ জুলাই প্রথমে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তার ২০দিনের মধ্যে অনুব্রত মণ্ডলকে একাধিক দুর্নীতির মামলায় ইডি-সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হতে হয়েছে। পার্থকে ইতিমধ্যেই দলের সমস্ত পদ থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। মন্ত্রিসভা থেকেও বাদ দেওয়া হয়েছে। অনুব্রত মণ্ডলের পাশে সরাসরি দাঁড়ায়নি দল। তবে বেছে বেছে তৃণমূল নেতাদের টার্গেট করা হচ্ছে কেন সেই প্রশ্ন তোলা হয়েছে।

অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারির পর তৃণমূল নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। দলের তরফে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও সমীর চক্রবর্তী সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, “দলের নিয়ম আছে, শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি আছে। অনুব্রতর বিরুদ্ধে যথাসময়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, জানানো হবে। অনৈতিক ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয় না তৃণমূল কংগ্রেস। অনৈতিক ও দুর্নীতির ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক আগেই এই কথা জানিয়ে দিয়েছেন। কেউ মানুষকে ঠকালে দল পাশে নেই। কেউ মানুষকে ঠকালে তার পাশে দল নেই। যাঁরা দুর্নীতিতে যুক্ত তাঁদের সম্পদ মনে করে না দল। অভিযুক্ত হলে ডাকুন, গ্রেফতার করুন, পরে বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে এগিয়ে যাবে।’’

একইসঙ্গে ওই সাংবাদিক বৈঠক থেকে ইডি-সিবিআইয়ের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। তৃণমূলের তরফে বলা হয়,
“নিরপেক্ষ চেহারা হারাচ্ছে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি। কেন্দ্রের অধীনস্থ সংস্থাগুলি নিরপেক্ষতা হারাচ্ছে, দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। সব ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা বজায় রেখে সবার সঙ্গে সমান ব্যবহার হোক। বিজেপি বিরোধী হলেই সক্রিয়তা, বিজেপি দলের কেউ হলেই নিষ্ক্রিয়তা। অসমের ক্ষেত্রে ‍কেন নিষ্ক্রিয়? ঝাড়খণ্ডের ধৃত বিধায়করা অসমের মুখ্যমন্ত্রীর নাম করেছেন, সেখানে নিষ্ক্রিয় কেন? কেন নিষ্ক্রিয় কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি? কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি কেন্দ্রের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে।’’

শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে ভুরি ভুরি অভিযোগ রয়েছে। সেই প্রসঙ্গ তুলে তৃণমূলের পক্ষে বলা হয়, “বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। সারদাকর্তা বলেছেন গ্রেফতার হওয়ার আগেও টাকার লেনদেন হয়েছে। বিরোধী দলনেতাকে কেন ডাকা হচ্ছে না? কাঁথি পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান, শুভেন্দুর ভাইকে কেন ডাকা হচ্ছে না ? কাঁথি পুরসভা থেকে ফাইল সরানোর অভিযোগে কেন ডাকা হচ্ছে না?’ বাইরে তদন্তে গিয়ে কেন বাধা দেওয়া হচ্ছে সিআইডিকে?’’

আরও পড়ুন:স্বাধীনতা দিবসের আগে উপত্যকায় ফের জঙ্গি হানায় বলি পরিযায়ী শ্রমিক

 

Previous articleস্বাধীনতা দিবসের আগে উপত্যকায় ফের জঙ্গি হানায় বলি পরিযায়ী শ্রমিক
Next articleশিবসেনা কার? প্রমাণ করতে ঠাকরের হাতে সময় ১৫ দিন