বাগদার পটলক্ষেতে এসে ক্ষমা চান: অমিত শাহকে তীব্র আক্রমণ তৃণমূলের

তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনার প্রতিবাদকে জাতীয় স্তরে পৌঁছে দেবেন- কুণাল ঘোষ

কাশীপুরের মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আর এখন বিএসএফের এই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় কোনও প্রতিক্রিয়া নেই। দিল্লি (Delhi) থেকে বাগদার পটলক্ষেতে এসে ক্ষমা চাইতে হবে অমিত শাহকে (Amit Shah)। বাগদায় দাঁড়িয়ে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। বাগদা সীমান্তে পাঁচ বছরের কন্যা সন্তানের সামনে এক বধূকে বিএসএফ (BSF) জওয়ানদের গণধ*র্ষণের তীব্র নিন্দা করেছে তৃণমূল (TMC)। রবিবার শাসকদলের এক প্রতিনিধি দল সেখানে যায়। দলে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ডা: শশী পাঁজা (Sashi Panja), পার্থ ভৌমিক (Partha Bhowmik), তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। পরে সেই প্রতিনিধি দলে যোগ দেন প্রাক্তন সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। সীমান্ত পরিদর্শন করে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলার পর বিকেলে কাশীপুরে জনসভা করেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

 

সভা মঞ্চ থেকে কেন্দ্রের মোদি সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন শশী পাঁজা। তিনি বলেন, স্বাধীনতা দিবসে “বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও” এর ডঙ্কা বাজিয়ে বিকেলে অন্তঃসত্ত্বা মহিলার উপর নারকীয় অত্যাচার চালানো অপরাধীদের মুক্তি দেয় বিজেপি সরকার। বিলকিস বানুর ঘটনার উদাহরণ দিয়ে তীব্র আক্রমণ করেন শশী পাঁজা। “যে বোনের উপর এই নারকীয় অত্যাচার হয়েছে তিনি সাহস করে থানায় গিয়ে বিএসএফের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁকে কুর্নিশ জানাই। মা-বোনেদের বলব কোনরকম সমস্যা বিএসএফ তৈরি করলে সঙ্গে সঙ্গে রুখে দাঁড়াবেন। অভিযোগ জানাবেন ভয় পাবেন না। আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি। সামনে দুর্গাপুজো দেবীর দুর্গাকে যারা অসম্মান করে তারা দেশ রক্ষা করবে কি করে।” শশী বলেন, রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত মুখ্যমন্ত্রী থাকায় মহিলারা নিরাপদে রয়েছেন। কিন্তু সীমান্ত কেন্দ্রের অধীন। তারা জোর করে বিএসএফের এক্তিয়ার ১৫ কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার করেছে। অথচ তারা সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ। উল্টে দিনের পর দিন নারী নির্যাতন হচ্ছে। সেখানকার মহিলারা তৃণমূলে প্রতিনিধি দলের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন, যে একটা ঘটনা সামনে এসেছে। কিন্তু বিএসএফের অত্যাচারের শিকার হন অনেকেই। ভয় অনেক সময় তাঁরা মুখ খুলতে পারেন না।

কুণাল ঘোষ অভিযোগ করেন, যখন তাঁরা সীমান্তে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলতে যান, তখন বিএসএফের জওয়ানরা সেখানে চলে আসে। কেউ মোবাইলে ভিডিও করতে থাকে। হাতে অত্যাধুনিক অস্ত্র নিয়ে সেখানে রীতিমতো টহল দেয়। কুণাল প্রশ্ন তোলেন, দিনের বেলায় রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের উপর এত নজরদারি যারা করতে পারে, তারা এক মহিলার উপর যখন নারকীয় নির্যাতন হচ্ছিল, সময় কোথায় ছিল? কাশীপুরে এসে মৃত্যু নিয়ে ভোটের পরে রাজনীতি করেছে অমিত শাহ। অথচ বাগদার ঘটনা নিয়ে তাঁদের কোন প্রতিক্রিয়া নেই। তীব্র আক্রমণ করে কুণাল বলেন, এই বাগদার পটলক্ষেতে এসে দাঁড়িয়ে ক্ষমা চাইতে হবে অমিত শাহকে। প্রতিবাদ এখানে এই একটা সভাতেই শেষ হয়ে যাবে না। সোমবার, তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনার প্রতিবাদকে জাতীয় স্তরে পৌঁছে দেবেন।

শুধু কাশীপুর, জিতপুর নয়, বনগাঁ বাগদার আশেপাশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রচুর মানুষ এদিন তৃণমূলের প্রতিবাদ সভায় যোগ দেন। বিশেষ করে মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

 

আরও পড়ুন- মহম্মদ আলি পার্কের পুজো বিতর্কে মুখ খুললেন মেয়র, কচুরিপানা থেকে শিল্পের ঘোষণা

 

Previous articleমোদি সরকারের কাজের গুণগত মান উন্নয়ন নিয়ে অসন্তুষ্ট, পথ বাতলালেন গড়কড়ি
Next articleডার্বির রং সবুজ মেরুন, মরশুমের প্রথম ডার্বিতে ইমামি ইস্টবেঙ্গলকে ১-০ গোলে হারাল এটিকে মোহনবাগান