বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা সর্বোচ্চ দুর্নীতিগ্রস্ত: টিআইবি-র রিপোর্ট

খায়রুল আলম, ঢাকা: ২০২১ সালে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দুর্নীতিগ্রস্ত (Corrupted) দফতর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা। শীর্ষ তিনে থাকা অপর দুটি সংস্থা হলো পাসপোর্ট (Passport) ও বিআরটিএ Bangladesh Road and Transport Authority-BRTA । এই তিন খাতে ঘুষও নেওয়া হয়েছে সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশের সরকারি পরিষেবা নিয়ে এক সমীক্ষায় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) Transparency International Of Bangladesh – TIB এ তথ্য জানিয়েছে। দুর্নীতি ও ঘুষের ওপর ভিত্তি করে সমীক্ষার পর্যন্ত ভিত্তিতে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের নভেম্বর পর্যন্ত সরকারি পরিসেবার ওপর এই সমীক্ষা করা হয়। বুধবার (৩১ আগস্ট) ঢাকার ধানমন্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠকে গবেষক ফারহানা রহমান সমীকার রিপোর্ট পেশ করেন। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, পরিসেবা খাতে দুর্নীতিতে কিছুক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন এলেও সার্বিক তথ্য উদ্বেগজনক। বিচারিক খাতের দুর্নীতিও উদ্বেগজনক। যারা অনিয়ম করছেন, তারা ঘুষকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করেছেন। যারা দিচ্ছেন তারা জীবনযাপনের অংশ করে নিয়েছেন।

গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০২১ সালে সর্বোচ্চ দুর্নীতিগ্রস্ত খাত তিনটি হলো: আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, পাসপোর্ট ও বিআরটিএ। এরপরে রয়েছে- বিচারিকসেবা, স্বাস্থ্যসেবা, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান ও ভূমি। গবেষণায় বলছে, জরিপের খাত হিসাবে ২০২১ সালে সার্বিকভাবে ৭০.৯ শতাংশ সেবাগ্রহীতা দুর্নীতির শিকার হয়েছে। ওই সময়ে সার্বিকভাবে ঘুষের শিকার হয়েছেন ৪০.১ শতাংশ মানুষ। সেখানে সর্বোচ্চ ঘুষ গ্রহণকারী সংস্থাও এই তিনটি। জরিপে অন্তর্ভুক্ত ঘুষদাতা ৭২.১ শতাংশ সেবাগ্রহীতা ঘুষ দেওয়ার কারণ হিসেবে ‘ঘুষ না দিলে সেবা পাওয়া যায় না’ এ কথা বলেছেন। অর্থাৎ ঘুষ আদায়ে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ অব্যাহত রয়েছে। ২০২১ সালে সার্বিকভাবে দফতর প্রতি গড়ে ৬ হাজার ৬৩৬ টাকা ঘুষ দিতে বাধ্য হয়েছে। ২০২১ সালে জাতীয় পর্যায়ে প্রাক্কলিত মোট ঘুষের পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার ৮৩০ কোটি ১০ লাখ টাকা। যা ২০২০-২১ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের (সংশোধিত) ৫.৯  শতাংশ। যা বাংলাদেশে জিডিপির ০.৪ শতাংশ।

২০১৭ সালের তুলনায় ২০২১ সালে কোনো কোনো খাতে ঘুষের হার বেড়েছে (স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান) এবং কোনো কোনো খাতে কমেছে (কৃষি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা)? টিআইবি বলছে, সার্বিক পর্যবেক্ষণে ২০১৭ সালের তুলনায় ২০২১ সালে বিভিন্ন খাতে ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়া চলমান থাকলেও কোনো কোনো সেবাখাতে তা পুরোপুরি কার্যকর না হওয়ায় দুর্নীতি একই অবস্থায় রয়েছে। ওই বছরেও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, পাসপোর্ট ও বিআরটিএ সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত খাত ছিল।

Previous articleBrazil: চলে গেলেন পৃথিবীর সব থেকে ‘নিঃসঙ্গ মানুষ’!
Next articleযে কোনও শর্তে জামিন দিন: ভার্চুয়াল শুনানিতে পার্থর আবেদন