Monday, November 10, 2025

Kolkata: ২ দশক পরে, ভুল চিকিৎসায় ছেলের অকাল মৃত্যুর বিচার পেলেন কলকাতার দম্পতি

Date:

Share post:

সন্তানহারা দম্পতি ছেলের অকাল মৃত্যুর বিচার ছেয়েছিলেন। প্রায় ২১ বছর ধরে চলেছে আইনি লড়াই, অবশেষে মিলল বিচার। চেন্নাইয়ের (Channai) এক হাসপাতালের গাফিলতিতে অকালে প্রাণ হারিয়েছে ছেলে। বাবা মা চোখের জল ধরে রাখতে পারেন নি। কিন্তু তাই বলে মুখ বুজে অন্যায় সহ্য করেন নি তাঁরা। প্রায় ২ দশক ধরে সুবিচারের আশায় আইনি লড়াই করে গেছেন। অবশেষে জাতীয় ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে (National Consumer Protection Court) প্রায় ১ কোটি টাকা জরিমানা হল চেন্নাইয়ের হাসপাতাল এবং সেখানকার চিকিৎসকদের।

১৯৯৮ সালের ঘটনা, ক্যালকাটা বয়েজ স্কুলের (Calcutta Boys School) ক্লাস টু এর ছাত্র অনামিত্র মোদক (Anamitra Modak)জ্বরে আক্রান্ত হয়। ম্যালেরিয়া থেকে জ্বর হয়েছিল বলে প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হয় এবং সেইমতো চিকিৎসা চলে। এরপর সে সুস্থ হয়ে উঠলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাঁর ডান চোখ । সঠিক চিকিৎসা পাওয়ার আশায় ২০০০ সালের ১২ জুন বাবা-মা ছেলেকে নিয়ে যান চেন্নাই-এর শঙ্কর নেত্রালয়ে (Shankar Netralay)। সেখানকার ডাক্তাররা জানান মাইনর স্কুইন সার্জারি করতে হবে। কিশোরের হার্টের সামান্য সমস্যা থাকলেও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ জানান, অ্যানাস্থেসিয়ায় কোনও অসুবিধা হবে না। কিন্তু ১৪ জুন অস্ত্রোপচার শুরুর আগেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় অনামিত্রর। তদন্তে জানা গিয়েছে, অ্যানাস্থেসিয়া করার সময় যখন গলা দিয়ে টিউব ঢোকানো হচ্ছিল, তখন ছাত্রর গলার মাংসপেশীতে সমস্যা দেখা দেয়। মাংসপেশী শিথিল করার জন্য ইঞ্জেকশন দেন চিকিত্সক। অথচ ৮ বছর বয়সী কাউকে ওই ইঞ্জেকশন দেওয়া যাবে না বলে প্রস্তুতকারী সংস্থার নিষেধাজ্ঞা দেওয়া ছিল। কিন্তু তা মানেন নি চিকিৎসক। মূলত তাঁদের গাফিলতির জেরেই প্রাণ যায় তরতাজা কিশোরের।

কসবার রাজডাঙার বাসিন্দা অনামিত্রর মা পেশায় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা এবং বাবা সিইএসসি-র মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। সন্তান হারাবার পর ২০০১ সালে ছেলের ভুল চিকিৎসার অভিযোগ তুলে জাতীয় ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা করেন মৃত ছাত্রের বাবা-মা। আদালতের নির্দেশে চেন্নাইয়ে কমিশন তৈরি করা হয়। প্রায় ২১ বছর ধরে মামলা চলার পর জাতীয় ক্রেতা সুরক্ষা আদালত রায় দিয়েছে, চিকিৎসায় গাফিলতির জন্য হাসপাতালকে জরিমানা দিতে হবে ৮৫ লক্ষ টাকা। পাশাপাশি অ্যানাস্থেসিস্টকে দিতে হবে ১০ লক্ষ, এবং চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ দেবেন ৫ লক্ষ টাকা। সেই সঙ্গে মামলার খরচ বাবদ হাসপাতালকে দিতে হবে আরও ১ লক্ষ টাকা। ৬ সপ্তাহের মধ্যে ওই টাকা দিতে হবে। না হলে দিলে ৯ শতাংশ হারে সুদ। সব মিলিয়ে প্রায় কোটি টাকার জরিমানা।

spot_img

Related articles

ধর্মীয় বই কিনতে গিয়ে ২ কোটি টাকার প্রতারণার ফাঁদে কলকাতা ইসকন! গ্রেফতার ১ 

ধর্মীয় বই কেনার অর্ডার দিতে গিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকার প্রতারণার শিকার হল কলকাতা ইসকন। অভিযোগ, অর্ডার অনুযায়ী...

বিশ্বকাপজয়ী মেয়ের সৌজন্যে হারানো পুলিশের চাকরি ফিরে পাচ্ছেন বাবা

কয়েকদিন আগেই আইসিসি একদিনের বিশ্বকাপ(ICC World Cup)  জিতেছে ভারতীয়  মহিলা দল। মেয়েদের সাফল্যে গর্বিত মা-বাবারা। তবে বিশ্বকাপজয়ী মেয়ের...

গ্যাস-সমস্যায় নিঃশ্বাসের পরীক্ষা: যুগান্তকারী আবিষ্কারে বিশ্বে স্বীকৃতি বাঁকুড়ার চিকিৎসকের

একটি সাধারণ সমস্যা, যাতে জর্জরিত বর্তমান যুবসমাজ থেকে শিশুরা পর্যন্ত। গ্যাস বা গ্যাসট্রাইটিসের মতো সমস্যা নির্ধারণ করার জন্য...

একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগে বাড়তে পারে আসন সংখ্যা, জানালো এসএসসি 

রাজ্যের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের ফলাফল ইতিমধ্যেই প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। প্রকাশিত ফল অনুযায়ী,...