উইঘোর মুসলিমদের উপর নৃশংস অত্যাচার চিনের, উদ্বেগ প্রকাশ রাষ্ট্রপুঞ্জের

চিনের(China) মাটিতে ধর্মীয় স্বাধীনতা তলানিতে এসে পৌঁছেছে। ড্রাগনের দেশে মুসলিমদের উপর রীতিমতো নিপীড়ন করছে শি জিনপিং প্রশাসন। এই ঘটনায় এবার উদ্বেগ প্রকাশ করল রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পরিষদ(UN Human rights Commission)। রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ‘শিনজিয়াং প্রদেশে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ রয়েছে চিনের বিরুদ্ধে।’ ঘটনাচক্রে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পরিষদের অন্যতম সদস্য দেশ চিন নিজেও।

রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পরিষদের রিপোর্টে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, উত্তর-পশ্চিমের ‘স্বশাসিত’ শিনজিয়াং প্রদেশে চিন সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিম(Uyghur Muslims) সম্প্রদায়ের মানুষের উপর রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন চালানো হচ্ছে। রিপোর্ট পেশ করে চিলির প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট তথা রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পরিষদের হাই কমিশনার মিশেল ব্যাশলেটের ঘোষণা, ‘‘আমি বলেছিলাম কার্যকালের মেয়াদ শেষের আগেই আমি এটি পেশ করব। আমি কথা রাখতে পেরেছি।’’ প্রসঙ্গত গত কয়েক বছর ধরে চিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, উইঘুর এবং তুর্কিভাষী ১০ লক্ষেরও বেশি ইসলাম ধর্মাবলম্বীকে শিনজিয়াংয়ের বিভিন্ন ‘ডিটেনশন ক্যাম্পে’ বন্দি করে রাখার। বলপূর্বক তাঁদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ত্যাগ করতে বাধ্য করার। এই ঘটনাতেই শি জিনপিং প্রশাসনকে তোপ দেগেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। শুধু তাই নয়, ইতিমধ্যেই বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের তরফে দাবি করা হয়েছে, আন্তর্জাতিক চোরাবাজারে বিক্রি হওয়া কিডনি, লিভার-সহ বিভিন্ন মানব অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বড় অংশের মালিক চিনের বন্দিশিবিরে আটক হতভাগ্য উইঘুর মুসলিমরা! জোর করে তাদের অঙ্গ কেটে বিক্রি করছে বেজিং! এর পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে ওই প্রদেশে ১৬ হাজার মসজিদ ধংস করেছে চিন সরকার, নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে প্রকাশ্যে নমাজ পাঠ, রোজা পালনের মতো ধর্মীয় আচারে।

উল্লেখ্য, চল্লিশের দশকে স্বাধীন রাষ্ট্র পূর্ব তুর্কিস্তান দখল করে শিনজিয়াং প্রদেশ নামকরণ করেছিলেন চিনের প্রয়াত চেয়ারম্যান মাও জে দং। তার পর থেকেই সেখানকার বাসিন্দা উইঘুর মুসলিমদের একাংশ চিনা দখলদারির বিরুদ্ধে প্রতিরোধের লড়াই শুরু করেন। আর তখন থেকেই শুরু হয় ‘বিদ্রোহ দমনের’ অছিলায় লালফৌজের নৃশংস অত্যাচার। গত ছ’দশকে চিনা সেনার হামলায় সেখানে লক্ষাধিক মুসলিম ভূমিপুত্র নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ।

Previous articleমধ্যপ্রদেশে হাসপাতালে চিকিৎসকের দেখা নেই, মায়ের কোলেই বেঘোরে প্রাণ গেল ৫ বছরের শিশুর
Next articleKolkata: ২ দশক পরে, ভুল চিকিৎসায় ছেলের অকাল মৃত্যুর বিচার পেলেন কলকাতার দম্পতি