ভালবাসার টানে চার হাত এক হল ভারত-বাংলাদেশের সমকামী যুগলের

দীর্ঘ ৬ বছরের প্রেম অবশেষে পূর্ণতা পেল। সীমান্তের বেড়াজাল কাটিয়ে পূর্ণতা পেল ভালোবাসা। নাহ! রাস্তা যে খুব একটা সহজ ছিল তা নয়। কিন্তু সব বাঁধা পেরিয়ে

দীর্ঘ ৬ বছরের প্রেম অবশেষে পূর্ণতা পেল। সীমান্তের বেড়াজাল কাটিয়ে পূর্ণতা পেল ভালোবাসা। নাহ! রাস্তা যে খুব একটা সহজ ছিল তা নয়। কিন্তু সব বাঁধা পেরিয়ে অবশেষে চার হাত এক হল দুই সমকামী যুগলের। সম্পর্কের (Relationship) কথা পরিবারকে একাধিকবার জানানো হলেও পরিবারের পক্ষে তা মেনে নেওয়া অসম্ভব ছিল। একদিকে যেমন ছিল লোক চক্ষুর ভয়, অন্যদিকে ছিল পরিবারের মানসম্মানের (Family Respect) বিষয়টিও। তাই শত চেষ্টা করেও পূর্ণতা পায়নি ভালোবাসা। অবশেষে দুই পরিবারের সম্মতি নিয়েই বিবাহবন্ধনে (Marriage) আবদ্ধ হলেন সমকামী যুগল। সব আচার-অনুষ্ঠান মেনে বিয়ে করার স্বপ্ন ছিল। আর সম্প্রতি সেই স্বপ্ন সত্যি হল সুবিক্ষা ও টিনার। ভারতের তামিলনাড়ুর (Tamil Nadu) সুবিক্ষা সুব্রমণি (Subiksha Subramani) বিয়ে করলেন বাংলাদেশের (Bangladesh) মেয়ে টিনা দাসকে (Tina Das)। গত বুধবার চেন্নাইয়ে (Chennai) তামিল ব্রাহ্মণ রীতি মেনে ধুমধামের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তাঁরা।

সুবিক্ষা এবং তাঁর স্ত্রী টিনা, দুজনেই বর্তমানে কর্মসূত্রে কানাডার (Canada) ক্যালগরি শহরের বাসিন্দা। তামিলনাড়ুর ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্ম সুবিক্ষার। অন্যদিকে, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত টিনা দাসও একটি রক্ষণশীল হিন্দু পরিবারেই বেড়ে উঠেছেন। ৬ বছর আগে কানাডার ক্যালগরিতে একটি অনুষ্ঠানে পরিচয় হয় দুজনের। আর তারপরই ভালবাসার বন্ধনে জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। পরে তাঁরা বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। তবে বিষয়টা যে অত সহজ হবে না তা আঁচ করতে পারলেও পরিবারের অমতে তাঁরা বিয়ে করতে চাননি। আর সেই কারণেই পরিবারের লোকেদের থেকে বিয়ে করার অনুমতি চান দুজনেই। কিন্তু বিয়ে করার কথা শুনেই বেঁকে বসে পরিবার।

বছর উনত্রিশের সুবিক্ষা বলেন, এই সবকিছু আমাদের স্বপ্ন ছিল, কিন্তু কোনও দিন ভাবিনি এটা বাস্তবে রূপ দেওয়া সম্ভব হবে! সুবিক্ষা আরও জানান, এতবছর লড়াই করে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার পর শেষ পর্যন্ত আমাদের প্রিয়জনেরা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। আমরা ভীষণ খুশি। অন্যদিকে, ৩৫ বছর বয়সী টিনা দাস এর আগে পরিবারের চাপে একজন পুরুষকে বিয়েও করেন এবং চার বছরের মতো সংসারও করেন। টিনা জানান, এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায় সম্পর্কে মা-বাবার কোনো ধারণাই ছিল না। তাঁরা মনে করতেন মেয়ের কোনও অসুখ হয়েছে। আর সেকারণেই ১৯ বছর বয়সে তাঁর বিয়ে দেওয়া হয়।

২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) সমকামী মেলামেশাকে বৈধ বলে ঘোষণা করে। তবে মেলামেশা নিয়ে কোনও আপত্তি না থাকলেও সমকামীদের বিয়ের বিষয়টি এখনও ভারতে আইনি বৈধতা (Legal Validity) পায়নি। তাই তাঁদের রেজিস্ট্রি (Registry) না হলেও পারিবারিক স্বীকৃতি আদায় করে নিয়েছেন সুবিক্ষা ও টিনা। সমাজের চোখরাঙানির থেকে মেয়ের ভাল থাকাকেই প্রাধান্য দিয়েছেন দুজনের পরিবার।

 

Previous articleমেয়ের থেকে পরীক্ষায় বেশি নম্বর পাওয়ার শাস্তি, বিষ খাইয়ে পড়ুয়াকে মারলেন সহপাঠীর মা
Next articleশিক্ষক দিবসে গ্রেগকে শুভেচ্ছা মহারাজের, মন কেড়েছে নেটিজেনদের