Queen Elizabeth II: রাজবধূদের সঙ্গে সম্পর্কের বরফ গলেনি দ্বিতীয় এলিজাবেথের

চার্লস আর ডায়ানার মধ্যে সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটার পর রানি দুজনকে কথা বলতে ডেকে পাঠান এবং তাদের অুনরোধ করেন এই বিয়ে টিঁকিয়ে রাখতে তাঁরা যেন শেষবারের মত চেষ্টা করেন। কিন্তু ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছিল বলেই রাজ পরিবারের মত।

৯৬ বছরের সুদীর্ঘ জীবন, ৭০ বছরের রাজত্বকাল, নানা ঘটনায় প্রবাহিত ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের (Queen Elizabeth II) জীবন। ব্রিটেনের সবচেয়ে দীর্ঘ মেয়াদী রাজশাসক রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ব্যালমোরাল প্রাসাদে (Balmoral Palace) বৃহস্পতিবার প্রয়াত হন। এরপরই তাঁর জীবন নিয়ে শুরু হয়ে নানা চর্চা। এলিজাবেথ আলেকজান্দ্রা মেরি উইন্ডসর ১৯২৬ সালের ২১শে এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা অ্যালবার্ট, ডিউক অফ ইয়র্ক এবং মা সাবেক লেডি এলিজাবেথ বোওজ -লিওন-এর প্রথম সন্তান ছিলেন তিনি। এলিজাবেথ এবং তাঁর বোন মার্গারেট রোজ দুজনেই লেখাপড়া শিখেছেন বাড়িতে। মার্গারেটের জন্ম হয় ১৯৩০ সালে। পরিবারের ভালবাসার আবহে বেড়ে উঠেছিলেন দুই বোন। বাবা অ্যালবার্ট এবং দাদা পঞ্চম জর্জ দুজনেরই খুবই ঘনিষ্ঠ ছিলেন এলিজাবেথ। রাজ পরিবারের (Royal family)প্রতি যথেষ্ট কর্তব্যপরায়ণ ছিলেন তিনি। তবুও রাজ পরিবারের পুত্রবধূদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভাল ছিল না। বিতর্ক (Controversy)তাঁর পিছু ছাড়ে নি সেভাবে।

লন্ডনের বাকিংহাম কিংবা বার্কশায়ারের উইন্ডসর প্রাসাদ (Windsor Castle in Berkshire)নয়, বৃহস্পতিবার রানি এলিজাবেথের প্রয়াত হয়েছেন স্কটল্যান্ডের বালমোরাল প্রাসাদে।‘অপারেশন ইউনিকর্ন’ অনুযায়ী নতুন রাজা তৃতীয় চার্লস রাজকীয় বিধি মেনে তাঁর পূর্বসূরির মৃত্যু পরবর্তী কর্তব্য সম্পাদন করবেন। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে গতকাল থেকেই চর্চায় রানির জীবন। রানির রাজত্বকালে ব্রিটেনের মূল স্তম্ভ হয়ে ওঠে সাংবিধানিক সততা রক্ষা। রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মেয়াদকালে মহাযুদ্ধ, ব্রিটিশ সাম্রাজ্য থেকে কমনওয়েলথে উত্তরণ, স্নায়ুযুদ্ধের পরিসমাপ্তি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে ব্রিটেনের যোগদান ও পরে প্রত্যাহারের ঘটনা ঘটেছে। শক্ত হাতে দক্ষ প্রশাসকের মত নিজের সাম্রাজ্যকাল শাসন করেছেন তিনি। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে বিশেষ করে পরিবারের প্রতি কতটা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছিলেন? কেন বারবার তাঁর পারিবারিক জীবন বিতর্কের সম্মুখীন হয়েছিল , তা নিয়েও শুরু হয়েছে বিস্তর জল্পনা। বলা হয়, রানি এলিজাবেথ তাঁর দায়িত্ব পালনে নানা দেশে ভ্রমণ করতেন। ১৯৯১ সালে উপসাগরীয় যুদ্ধের পর তিনি আমেরিকা সফরে যান। তিনিই ছিলেন প্রথম ব্রিটিশ রানি যিনি আমেরিকান কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দেন। কিন্তু পরিবারে বারবার নেমে আসে দুর্যোগ। এর এক বছরের মধ্যে তাঁর পরিবারে নানা ধরনের কেলেংকারি ও দুর্যোগের ঘটনা শুরু হয়। রাজ পরিবারের কোনও বধূ সুস্থ স্বাভাবিক ভাবে সংসার করতে পারেন নি দ্বিতীয় এলিজাবেথের বলে জানা যায়। অনেকে এই কারণেও কাঠগড়ায় তোলেন রানির সাফল্যকে। জানা যায়, রানির আমেরিকান সফরের কিছু সময়ের মধ্যেই দ্বিতীয় ছেলে ডিউক অফ ইয়র্ক ও স্ত্রী সারা আলাদা হয়ে যান। এর পেছনে রানির ভূমিকা ছিল বলে মনে করতেন রাজ পরিবারের বাকি সদস্যরা । এখানেই শেষ নয়, মেয়ে প্রিন্সেস অ্যান ও স্বামী মার্ক ফিলিপস্-এর বিয়েও ভেঙে যায়। এই বিতর্কের মাঝেই চালর্স ও ডায়ানা (Princess Diana)বিয়েতে যে অসুখী এ খবর জানাজানি হয়। রানি এলিজাবেথের (Queen Elizabeth II) সঙ্গে প্রিন্সেস ডায়ানার (Princess Diana)সম্পর্ক ছিল রাজতন্ত্রের জন্য বড় পরীক্ষা। ডায়ানা অবশ্য বলতেন তাঁর শাশুড়িকে তিনি যথেষ্ট শ্রদ্ধা করতেন এবং তাঁর জন্য সব কিছু করতে রাজি ছিলেন। কিন্তু রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ তেমনটা মনে করতেন না, কারণ রানি দেখেছিলেন ডায়ানা তাঁর জীবদ্দশায় এবং মৃত্যুর পর রাজতন্ত্রের উপর কীধরনের প্রভাব ফেলেছিলেন। আবেগপ্রবণ ডায়ানা রাজ প্রাসাদে রানির তৈরি কঠোর মধ্যযুগীয় নিয়মনীতি নির্ভর জীবনের জন্য তখনও তৈরি ছিলেন না। মাঝে মধ্যেই দুজনের সমস্যা বাড়ত। এই ঘটনার প্রভাব পড়েছিল চালর্স ও ডায়ানার বিবাহিত জীবনেও। ফলে সম্পর্কে ছেদ পড়ে, তাঁরাও আলাদা হয়ে যান। চার্লস আর ডায়ানার মধ্যে সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটার পর রানি দুজনকে কথা বলতে ডেকে পাঠান এবং তাদের অুনরোধ করেন এই বিয়ে টিঁকিয়ে রাখতে তাঁরা যেন শেষবারের মত চেষ্টা করেন। কিন্তু ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছিল বলেই রাজ পরিবারের মত। রাজকুমারী ডায়ানার মরদেহ নিয়ে কফিন বাকিংহাম প্রাসাদের ফটক অতিক্রম করার সময় রানি তাঁর পুত্রবধূকে শেষ বিদায় জানিয়েছিলেন।

 

Previous articleমাত্র ৫০ হাজার টাকার জন্য জোড়া খুন ? দ্রুত পর্দা ফাঁস করতে তৎপর সিআইডি
Next articleপুলিশের অনুমতি ছাড়াই সিজিও কমপ্লেক্স অভিযান বামেদের