বিজেপির নবান্ন অভিযান: স্বরাষ্ট্র সচিবের কাছে রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের

বিজেপির(BJP) নবান্ন অভিযানকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও বিজেপি সমর্থকদের খন্ড যুদ্ধের ঘটনায় রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিবের কাছে রিপোর্ট তলোপ করল কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আগামী সোমবারের (১৯ সেপ্টেম্বর) মধ্যে এই ঘটনার রিপোর্ট দিতে হবে স্বরাষ্ট্রসচিবকে(Home secretary)। পাশাপাশি, প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, বিজেপির রাজ্য দফতরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে রাজ্যকে। নবান্ন অভিযানের মিছিলকে কেন্দ্র করে অপ্রয়োজনীয় ভাবে যে কাউকে গ্রেফতার(Arrest) বা আটক করা হয়নি, তা-ও রাজ্যকে নিশ্চিত করতে বলেছে হাই কোর্ট।

আদালতের পর্যবেক্ষণ, সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা যেমন বেআইনি ও অসংবিধানিক এবং সেই সম্পত্তি নষ্ট করা যাবে না, ঠিক তেমনি অকারণে কাউকে গ্রেপ্তার করা যায় না। মঙ্গলবার বিজেপির নবান্ন অভিযানকে (BJP Nabanna Avijan) কেন্দ্র করে হাওড়া ও কলকাতা উত্তাল হয়। বিকেলেই হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বিজেপিপন্থী আইনজীবীরা। পরে মামলা দায়ের হলে বিকেলে আদালতের নির্দিষ্ট সময়ের পরে ফের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে এই আবেদনটির শুনানি হয়। তারপরই এই নির্দেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্ট।

রাজ্যের তরফে সওয়াল করতে গিয়ে অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় আদালতে বলেন, ‘‘বিজেপির কর্মসূচির নাম ‘নবান্ন অভিযান’। নবান্নের চারিদিকে ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। ফলে সেখানে অবৈধ জমায়েত বা মিছিলে পুলিশ বাধা দেবে সেটাই স্বাভাবিক। আন্দোলনকারীদের পুলিশ বার বার পিছিয়ে যেতে বলেছে।’’ পাশাপাশি, বিজেপির আইনজীবীদের ‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের যুক্তি’ খারিজ করে তিনি বলেন, ‘‘শান্তিপূর্ণ মিছিলের কথা বলা হচ্ছে। প্রচুর সরকারি সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে। ইট ছোড়া হয়েছে। কলকাতার এমজি রোড, হাওড়া-সহ বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুর হয়েছে। রাস্তার বাতিস্তম্ভ, পুলিশের কিয়স্ক ভেঙে ফেলা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ৫০ জনেরও বেশি পুলিশ কর্মী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে অনেক বেশি পুলিশ। এটাই কি শান্তিপূর্ণ মিছিলের নমুনা? শান্তি বজায় রাখার জন্যই পুলিশ আটক করেছে।’’

প্রসঙ্গত, বিজেপির নবান্ন অভিযানে কলকাতা থেকে গ্রেপ্তার হয় মোট ৯০ জন, যাদের মধ্যে ২২ জন মহিলা। ধৃতদের মধ্যে ছিলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী, লকেট চট্টোপাধ‌্যায়, রাহুল সিনহা। এদিন বিজেপির হামলায় কলকাতায় মোাট ২৭ জন পুলিশ আহত হয়। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন মধ‌্য কলকাতার অ‌্যাসিস্ট‌্যান্ট কমিশনার দেবজিৎ চট্টোপাধ‌্যায়, জোড়াবাগান থানার অতিরিক্ত ওসি সরফরাজ আহমেদ। মহাত্মা গান্ধী রোড ও সেন্ট্রাল অ‌্যাভিনিউয়ে দু’জনকে ঘিরে ধরে লাঠি ও বাঁশ দিয়ে গণধোলাই দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। মহাত্মা গান্ধী রোড ও রবীন্দ্র সরণির সংযোগস্থলের কাছে কলকাতা পুলিশের যে পিসিআর গাড়িতে প্রথমে ভাঙচুর করে জনা বারো বিজেপি কর্মী। আতঙ্কে পুলিশকর্মীরা দূরে সরে গেলে গাড়িতে আগুন লাগায় তিনজন। সিসিটিভি ও ভিডিও ফুটেজে অভিযুক্তদের শনাক্তকরণ করা হচ্ছে। সেন্ট্রাল অ‌্যাভিনিউয়ে একটি পুলিশের কিয়স্কও ভাঙচুর হয়।

আরও পড়ুন- সারাদেশ দেখল বিজেপির গুন্ডাগিরি! নবান্ন অভিযানকে তীব্র আক্রমণ অভিষেকের


 

 

 

 

Previous articleসারাদেশ দেখল বিজেপির গুন্ডাগিরি! নবান্ন অভিযানকে তীব্র আক্রমণ অভিষেকের
Next articleপুজোর নস্টালজিক মেজাজ ফেরাতে আশা অডিওর নতুন অ্যালবাম ‘ফিরে পাওয়া’