পিছিয়ে পড়া শিশুদের সঙ্গে পুজোর আনন্দ ভাগ মণীন্দ্র কলেজের সাংবাদিকতা বিভাগের

মাতৃপক্ষের দ্বিতীয় দিনে যখন শহর জুড়ে পুজোর উন্মাদনা, তখন একদল ছেলে মেয়ে পুজোর আনন্দ ভাগ করে নিতে পৌঁছে গেলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Parganas) ক্যানিংয়ের কাছে এক প্রত্যন্ত গ্রাম সাতমুখীতে (Satmukhi)।

মানুষ বড় কাঁদছে, তাই মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মহাপুজোর আনন্দকে ভাগ করে নেওয়ার প্রয়াস। ভাবনা সহজ নয়, তবু অসম্ভব অনায়াসেই সম্ভব হল মহানগরীর (Kolkata) বুকে। শুরু হয়েছে নবরাত্রি। মাতৃপক্ষের দ্বিতীয় দিনে যখন শহর জুড়ে পুজোর উন্মাদনা, তখন একদল ছেলে মেয়ে পুজোর আনন্দ ভাগ করে নিতে পৌঁছে গেলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Parganas) ক্যানিংয়ের কাছে এক প্রত্যন্ত গ্রাম সাতমুখীতে (Satmukhi)। এই নিয়ে টানা ১২ বছর, মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজের (Maharaja Manindra Chandra College) সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন বিভাগের (Department of Journalism and Public Information) উদ্যোগে পুজো পরিক্রমার প্রায় এক যুগ সম্পূর্ণ হল আজ ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২-এ। প্রায় ২৫০ জন পিছিয়ে পড়া ভাই বোনেদের সঙ্গে কলেজের সাংবাদিকতা বিভাগের প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্র ছাত্রীরা পুজোর আনন্দ ভাগ করে নিলেন। উপহারের ছলে যেন একরাশ খুশির জোয়ার ভরিয়ে দিল ওদের জীবন। দূরে দাঁড়িয়ে নয়, একেবারে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অধ্যাপক-অধ্যাপিকারা অর্থ সংগ্রহ করলেন ছাত্র ছাত্রীদের সঙ্গে। তারপর সেই সবটুকু দিয়ে ওই শিশুদের মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলল মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজের (Maharaja Manindra Chandra College) সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন বিভাগ।

পরিক্রমার বয়স বারো, চাইলে তুমিও আসতে পারো! এই বার্তাকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে চেয়েছিলেন উৎসাহী ছাত্র ছাত্রীরা। পুজো পরিক্রমা মানে শুধুই নিজেদের ঘোরা বেড়ান নয়, আনন্দ করার অধিকার সবার। তাই সকলের ভাল থাকাতেই পুজোর দিনগুলোর সার্থকতা। এবছর দ্বাদশ বর্ষ। তাই নতুন নতুন উদ্যোগ নিয়েছে কলেজের সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন বিভাগ। পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সমাজকে একটা বার্তা দিতে বদ্ধপরিকর তাঁরা। শুধু ছাত্রছাত্রীরাই নয়, অধ্যাপক অধ্যাপিকা থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রাম সাতমুখী জুড়ে আজ শুধুই ভাল লাগা অনুভূতি। অন্য বিভাগের অধ্যাপকরাও এগিয়ে এসেছেন এই দারুণ সুন্দর উদ্যোগে। এই অসহায় সময়েও বিভাগের সমস্ত ছাত্রছাত্রীরা যেভাবে অর্থ সংগ্রহ করেছে, যা নিঃসন্দেহে আজকের দিনে এক অভিনব উদ্যোগ, স্বীকার করছেন সকলেই। আজ অর্থাৎ ২৭ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টা নাগাদ স্থানীয় এক দুর্গোৎসব কমিটির পুজো প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠান শুরু হয়। সেখানে দুঃস্থ শিশুদের হাতে নতুন জামা উপহার দেয় মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজের সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন বিভাগ। সঙ্গে ছিল নাচ, গান, খাওয়া দাওয়ার দেদার আয়োজন। একটা গোটা দিন পুরো অন্য আমেজে কাটল ওই দুঃস্থ শিশুদের। আসলে শুধু পুজো পরিক্রমার দিন নয়, সারাবছর ধরেই যাতে এভাবের অভাবী মেধাবী শিশুদের পাশে দাঁড়ানো যায়, সেরকম একগুচ্ছ পরিকল্পনা রয়েছে মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজের সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা। ৩ জন দরিদ্র মেধাবী খুদে পড়ুয়াকে ‘অধ্যাপক শোভন কান্তি রায় স্মৃতি স্কলারশিপ’ দেওয়া হয়,বছরভর ওদের পড়াশোনার সব দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নেন কলেজের সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা।

Previous articleতিরুবনন্তপুরমে পুষ্পবৃষ্টিতে স্বাগত জানান হল রোহিতদের
Next articleঅবশেষে স্বস্তি: পরিবহনমন্ত্রীর আশ্বাসে ৭দিন পর উঠল SBSTC-র অস্থায়ী বাসকর্মীদের ধর্মঘট