উৎসবের দিনগুলি পরিবারের সঙ্গে কাটান, এবার তৃণমূলের তরফে চাকরিপ্রার্থীদের ধর্না তোলার আর্জি কুণালের

শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর পর এবার দলের তরফে আন্দোলনরত এসএসসি চাকরি প্রার্থীদের উৎসবের দিনগুলিতে বাড়িতে গিয়ে পরিবার-পরিজন ও বন্ধুদের সঙ্গে কাটানোর আর্জি জানালেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ 

“মুখ্যমন্ত্রী আপনাদের যন্ত্রণা অনুভব করেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) আপনাদের জন্য পূর্ণ সহানুভূতি রয়েছে।চাকরি প্রার্থীদের পাশে আছে সরকার। আদালতের নির্দেশ মেনে আইনি দিক খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাই ধর্না তুলে উৎসবের দিনগুলিতে পরিবার-প্রিয়জনের সঙ্গে কাটান।” শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর (Bratya Basu) পর এবার দলের তরফে আন্দোলনরত এসএসসি চাকরি প্রার্থীদের উৎসবের দিনগুলিতে বাড়িতে গিয়ে পরিবার-পরিজন ও বন্ধুদের সঙ্গে কাটানোর আর্জি জানালেন তৃণমূলের (TMC) রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)।

আজ, মঙ্গলবার তৃণমূল ভবনে এক সাংবাদিক বৈঠকে কুণাল ঘোষ বলেন, “এসএসসি শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত কিছু বিষয় চলছে। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বিস্তারে জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী সর্বদাই চান এই চাকরি ন্যায্য দাবিদাররা পাক। শিক্ষক নিয়োগ এসএসসি (SSC) সংক্রান্ত বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী আন্তরিকভাবেই চেয়ে এসেছে কর্মসংস্থান হোক। ভুল হলে সংশোধন হবে। অন্যায় হলে মুখ্যমন্ত্রী ব্যবস্থা, নিয়েছে, দল ব্যবস্থা নিয়েছে। আইন আইনের পথে চলবে। আগে চাকরি হোক।”

এ প্রসঙ্গে কুণালের সংযোজন, “আদালতে দুটি প্রস্তাব জানিয়ে দিয়েছে এসএসসি। এক, যারা রয়েছেন তাঁদের সবার চাকরি হবে, প্রায় ১৪হাজারের মতো। যাঁদের নিয়ে বিতর্ক আছে তারাও থাকছেন। দুই, ২২২ জন বিতর্কিত ভাবে এসেছে, তাঁদের সরিয়ে দিয়ে সেই শূন্যস্থানে মেধাতালিকা অনুযায়ী নিয়োগ হবে। এবার আদালত যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেইমতো পদক্ষেপ হবে। শিক্ষামন্ত্রী একথা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন।

এরপরই ঘোলা জলে মাছ ধরে নামা বিরোধীদের একহাত নিয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, “অতীতে বাম জমানায় পার্টি ক্যাডারদের চাকরিতে ব্যাপক স্বজনপোষণ হয়েছে। গতকাল ত্রিপুরায় যে ১০৩২৩ জন শিক্ষকের চাকরি চলে গিয়েছে, তাঁদের কাঁদানে গ্যাস, লাঠি চালিয়েছে সেখানকার বিজেপি সরকার। মধ্যপ্রদেশে ব্যাপম কেলেঙ্কারি সবাই জানে। বাম জমানাতেও ঘুরপথে চাকরি হয়েছে এ রাজ্যে। পার্টির ক্যাডারদের আত্মীয়দের চাকরি দিয়েছে সিপিএম। কিন্তু এখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিক্ষামন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছিলেন সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখতে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠক করেছেন চাকরি প্রার্থীদের সঙ্গে। স্মারকলিপি খতিয়ে দেখছেন। গোটা প্রক্রিয়া সরকারি বিষয়। যেহেতু আন্দোলনকারীরা সাহায্য চেয়েছিলেন দলের কাছে। তাই দল তার কর্তব্য পালন করেছে। এবং সেই কারণে দলের তরফে ধর্না তুলে নেওয়ার অনুরোধ করছি।”

বিজেপি-বামেদের সুবিধাবাদী রাজনীতির প্রসঙ্গ টেনে কুণাল বলেন, “নিয়োগের ক্ষেত্রে আইনি দিক রয়েছে। বিরোধীরা রাজ্যের নিয়োগ নিয়ে রাজনীতি করছে। আসলে ওরা চায় সমস্যা জিইয়ে রাখতে। যতদিন সমস্যা থাকবে, ততদিন ওরা রাজনীতি করতে পারবে। তৃণমূল কংগ্রেস ওই মঞ্চকে ব্যবহার করে রাজনীতি করেনি। মুখ্যমন্ত্রী চাকরি প্রার্থীদের যন্ত্রনা বোঝেন। ধর্না মঞ্চে যাঁরা চোখের জল ফেলেছেন, যাঁরা সত্যি বঞ্চিত, তাঁদের পাশে সরকার আছে। আসন্ন উৎসবের দিনগুলিতে বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে, বন্ধুদের সঙ্গে কাটান। যদি এর মধ্যে আপনারা মনে করেন যোগাযোগ রাখবেন, সরকার নিশ্চয় যোগাযোগ রাখবে রক্ষা করবে বলেই আশাবাদী আমরা। বিরোধীরা আপনাদের চাকরি আটকে রাখতে, বিজেপি শকুনের রাজনীতি করছে। চাকরি হয়ে গেলে তো ওদের বলার মতো মঞ্চ থাকবে না।”

এদিন মাদ্রাসা প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক বলেন, “মাদ্রাসা নিয়ে বক্তব্য ছিল। মন্ত্রী গোলাম রব্বানী কথা বলেছেন। তাঁদের আমন্ত্রণ করেছেন। সামনাসামনি কথা হবে। ১৩,১৪,১৫ অক্টোবরে মধ্যে যে কোনও একটি দিন তাঁরা গিয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবেন। কোথায় কোথায় কী সমস্যা আছে তাই নিয়ে কথা হবে। জট খোলার আন্তরিক চেষ্টা সরকার করেছে।”

পুজোর মুখে পরিবহন সঙ্কট নিয়েও এদিন মুখ খোলেন কুণাল ঘোষ। তাঁর কথায়, “যারা এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করছেন তাঁদের কী দাবি? তাঁদেরকে ছোট করার মধ্যে ঢুকছি না। কিন্তু পুজোর মুখে এভাবে যাঁরা সাধারণ মানুষকে বিপদে ফেলছেন তাঁরা মানুষ বা সরকার কারও বন্ধু হতে পারেন না। এতদিন বলেননি কেন? পুজো কাটলেও তো নিজেদের সমস্যা তুলে ধরা যেতে পারতো। পরিবহন দফতরে কাদের কীভাবে নিয়োগ? কোন প্রাক্তন পরিবহনমন্ত্রী, কে, কখন কী বীজ ফেলে দিয়ে গেছেন বোঝা যাচ্ছে না। কে কে ওই দফতরে ছিলেন, কাদের হাতে সুতো, পিছন থেকে কেউ দড়ি টানছে কিনা দেখতে হবে। এ নিয়ে আর কিছু বলবে না।”

Previous article“ডিসেম্বরের মধ্যে সরকার পড়ে যাবে”, সুকান্তর মন্তব্যের পাল্টা তোপ কুণালের
Next articleশোয়েবের সমর্থনে ধোনির উদাহরণ টানলেন কামরান আকমল