পরিকল্পনা করেই খু*ন! বিয়ের কথা বলতে অয়নকে দশমীর রাতে ডেকেছিল বান্ধবীর মা

লালবাজার গোয়েন্দাদের তদন্তে উঠে আসে অন্যান্য একাধিক দিক। যেখানে দেখা যাচ্ছে, অয়নকে আচমকা মারা হয়নি। ঠাণ্ডা মাথায় পরিকল্পনামাফিক খুন

হরিদেবপুর কাণ্ডে উঠে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য। দশমীর রাতে আচমকা কোনও ঘটনা নয়, দীর্ঘ ৬ মাস ধরে চলছিল অয়ন মণ্ডল খুনের ষড়যন্ত্র। কিন্তু কিছুতেই সুযোগ হচ্ছিল না। অবশেষে বিয়ের টোপ দিয়ে দশমীর রাতে অয়নকে বান্ধবী প্রীতির মা রুমা জানা। আর তিনি সেই টোপ গেলা মাত্র পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করে ফেলে জানা পরিবার। দাবি পুলিশের।

আরও পড়ুন: অয়নের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে খু*নের ইঙ্গিত

অসমর্থিত সূত্রের খবর, অয়নকে পরিকল্পনামাফিক খুনের তত্ত্ব এখনও মানতে নারাজ তদন্তকারী পুলিশ অফিসারদের একাংশ। তাঁদের যুক্তি, ঘটনার দিন মদ্যপ অবস্থায় বান্ধবীর বাড়িতে যান অয়ন। বান্ধবীকে তার বাড়িতেই শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তা করেন। খুব স্বাভাবিকভাবেই মেয়েকে বাঁচাতেই পাল্টা অয়নকে মারধর করতে বাধ্য হন তাঁর বাবা, মা, ভাই সহ অন্যরা। এই অনুমানের ভিত্তিতে তদন্ত এগোলে চার্জশিটে হত্যার পরিবর্তে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যুক্ত হবে অনিচ্ছাকৃত খুনের ধারা। সেক্ষেত্রে মামলাটি লঘু হয়ে যাবে।

তবে লালবাজার গোয়েন্দাদের তদন্তে উঠে আসে অন্যান্য একাধিক দিক। যেখানে দেখা যাচ্ছে, অয়নকে আচমকা মারা হয়নি। ঠাণ্ডা মাথায় পরিকল্পনা মাফিক খুন। আর তার নেপথ্যে রয়েছে বান্ধবী প্রীতির একাধিক সম্পর্ক। অভিযোগ, অয়নের পাশাপাশি আরও কমপক্ষে তিনজনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন প্রীতি। তিন প্রেমিকের সঙ্গেই তিনি নিয়মিত ফোনালাপ এবং মেলামেশা করতেন। প্রীতির বাড়িতেও ছিল তাঁদের অবাধ যাতায়াত। বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন অয়ন। বেশ কয়েকবার দু’জনের ঝগড়া হয়। অয়নের পরিবারও পুলিশকে জানিয়েছে, “প্রীতি যে অন্যের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে, সেকথা ছেলে বাড়িতে বলেছিল। এতে সে মানসিকভাবে ভেঙেও পড়ে।”

তদন্তে জানা গিয়েছে, অন্য ছেলেদের সঙ্গে মেয়ের খোলামেলা মেলামেশায় আপত্তি ছিল না প্রীতির মা রুমার। এই নিয়ে অয়নের সঙ্গে তাঁদের ব্যাপক অশান্তি হয়। প্রীতির মায়ের দাবি, এই ইস্যুতে তাঁর মেয়েকে মারধর পর্যন্ত করেছেন প্রেমিক অয়ন। আর তা মেনে নিতে না পেরেই অয়নকে শিক্ষা দিতে চেয়েছিলেন তাঁরা। এখান থেকেই খুনের পরিকল্পনা মাথায় আসে বলে ধৃতরা পুলিশি জেরায় জানিয়েছে।

সূত্রের খবর, প্রীতি ও তাঁর মা জেরায় স্বীকার করেছে, বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে অয়নকে মাঝেমধ্যেই বাড়িতে ডেকে পাঠানো হতো। মাঝে একবার বাড়িতে ডেকে মারধর করা হলেও সে বেরিয়ে যায়। পরিকল্পনারও অভাব থেকে যাচ্ছিল। তাই এবার অভিযুক্তরা সমস্ত হোমওয়ার্ক এবং গাড়ি পর্যন্ত আগে থেকে বুক করে রাখে। সমস্ত কিছু চূড়ান্ত করার পরই মেয়ের বিয়ে নিয়ে কথা বলার জন্য অয়নকে বাড়িতে ডেকে পাঠান রুমা। তারপরই তাঁকে নৃশংসভাবে খুন করা হয় বলে দাবি তদন্তকারীদের।

Previous articleBreakfast Sportts: ব্রেকফাস্ট স্পোর্টস
Next articleAIIMS নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিজেপি বিধায়ককে তলব সিআইডির