নজর ঘোরাতে বিজেপি ধর্মের সুরসুরি দিচ্ছে, হলদিবাড়িতে তোপ কুণালের

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে মডেলটা তৈরি করেছেন দেশের অন্যান্য রাজ্য, সারা পৃথিবী তাকে স্বীকৃতি দিচ্ছে।

দেবস্মিত মুখোপাধ্যায়,হলদিবাড়ি

কোচবিহারের হলদিবাড়ি গ্রামীণ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের বিজয়া সম্মিলনীতে তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, হিন্দু দেবী দুর্গা তাই হিন্দু মতে পুজো হয়েছে। কিন্তু যারা হিন্দু হিন্দু করে বেড়াচ্ছে তাদের একবার জিজ্ঞেস করবেন তো যে মহাষ্টমীর দিন যখন দুর্গার পায়ে অঞ্জলি দিতে যায়, যে জামাটা পড়ে যায় সেই জামাটা হিন্দু না মুসলিম কে তৈরি করেছে সেটা জিজ্ঞেস করে কিনা?

বিধানসভা নির্বাচনের আগে ডেইলি প্যাসেঞ্জারি আর ‘আবকিবার ২০০পার’ এরের কথা বলেছিল পেট্রোলের দামটা বাড়াবে বলে।কুণাল বলেন, পেট্রোল পাম্পে গেলে জয় শ্রীরাম বললে কি ৩০ টাকায় পেট্রোল পাওয়া যাবে? মায়েরা বোনেরা জয় শ্রীরাম বললে কি ২৫০ টাকায় গ্যাস পাবেন? জিজ্ঞেস করবেন ওদের। তাহলে জয় শ্রীরাম বলতে রাজি আছি। শুধু ধর্ম নিয়ে রাজনীতি। অর্থনীতির বেহাল দশা থেকে নজর ঘোরাতে ধর্মের সুরসুরি দিচ্ছে।
পেট্রোল, ডিজেল, রান্নার গ্যাস, জীবনদায়ী ওষুধ, কৃষকের সার সবকিছুর দাম বেড়েই চলেছে। বয়স্ক যারা আছেন তারা জানেন যে ব্যাংকের সুদের হার কীভাবে কমছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে মডেলটা তৈরি করেছেন দেশের অন্যান্য রাজ্য, সারা পৃথিবী তাকে স্বীকৃতি দিচ্ছে।
মমতাদি জানলা দিয়ে দু একটা দাগিকে ফেলে দিয়েছে, কিন্তু জানা ছিলনা জানলার ওপারে বাটি হাতে অমিত শাহ-দিলীপ ঘোষ বসে আছে পচা শুভেন্দুকে লুফে নেওয়ার জন্য। যেই ফেলেছে অমনি লুফে নিয়েছে, এই হচ্ছে বিজেপি। তৃণমূলের উন্নয়ন কর্মসূচির দিকে তাকান।মানুষের উপর চাপ বাড়ছে আর এর থেকে চোখ ঘোরাতে ওরা ধর্মের রাজনীতি করছে। আর এ রাজ্যে উন্নয়ন হচ্ছে রাস্তা জল, আলো, বিদ্যুৎ সবক্ষেত্রে উন্নয়ন। পাশাপাশি স্বাস্থ্যসাথী, কন্যাশ্রী, লক্ষ্মীর ভান্ডার, দুয়ারে সরকার, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড। ৬০ থেকে ৭০ টা কর্মসূচি। রাজ্যের প্রত্যেকটা মানুষের জীবনে যে কোনও প্রয়োজনে পাশে দাঁড়িয়ে আছে কে? পশ্চিমবঙ্গ সরকার। পাশে দাঁড়িয়ে আছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশে দাঁড়িয়ে আছে তৃণমূল কংগ্রেস। যতদিন মমতাদি আছে মমতাদির সরকার আছে ততদিন মানুষের এই অধিকার গুলি থাকবে। বিনামূল্যে খাদ্য, বিনামূল্যে স্বাস্থ্য, বিনামূল্যে শিক্ষা।মনে রাখবেন, তৃণমূল দুর্বল হওয়া মানে আপনার অধিকার আপনার হাত থেকে চলে যাওয়া।

বিজেপি তৃণমূলের সঙ্গে টক্কর দিতে পারে না, জিততে পারেনা। বাংলার মানুষ ঝামা ঘষে রাজ্য থেকে বার করে দিয়েছে। শুধু বড় বড় কথা ‘ডিসেম্বরে সব বদলে দেব’। বিজেপির হুমকি হলো গরুর গাড়ির হেডলাইট। আবার দিলীপ ঘোষ গরুর দুধ থেকে সোনা বার করেছে। আবার বলছে যে তৃণমূল কর্মীদের বুকের উপর পা তুলে দেব। আসলে ওখানে দুটো বিজেপি একটা দিলীপ বিজেপি, একটা সুকান্ত বিজেপি। দিলীপ ঘোষ কে ঘাড় ধরে সভাপতি পদ থেকে বার করে দিয়েছে, তাই ইচ্ছে হচ্ছে সুকান্তর বুকের উপর পা তুলে দেওয়ার। মুখে বলতে পারছে না তো তাই বুঝে নিতে হবে।

উপস্থিত সদস্য সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আরও ভালো উন্নততর তৃণমূল মমতাদির নেতৃত্বে অভিষেকের সেনাপতিত্বে আমরা গড়ে তুলবো।পঞ্চায়েত ভোটেই সেটা দেখিয়ে দিতে হবে।

হলদিবাড়ি শহর ব্লক তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনীতে মঙ্গলবার তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, রাজ্য সরকার যে অনুদান পুজো কমিটিগুলোকে দিচ্ছে সেগুলো গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে যাচ্ছে। ফলে গ্রামীণ অর্থনীতি, পুজোকে কেন্দ্র করে যে অর্থনীতি তা আরও বিস্তার লাভ করছে।

বিজেপি বলেছিল, যে বাংলায় দুর্গাপুজো হয় না। আবার দুর্গাপুজো কমিটিগুলোকে সাহায্য করলে ওদের তাতেও আপত্তি। মমতাদি তো বলেন, ধর্ম যার যার উৎসব সবার।আত্ম সমালোচনার সুরে কুণাল বলেন, তৃণমূল সরকারেরও কিছু ভুল আছে কিন্তু আমাদের ৯৯.৫ শতাংশ ঠিক, আর ০.৫ শতাংশ ভুল । কারণ হাতের পাঁচটা আঙুল সমান হয় না। ভুল হলে শোধরাতে হবে আর অন্যায় হলে তদন্ত ,শাস্তি । এটাই তো তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু দশমিক পাঁচ শতাংশ ভুলটাকে দিয়ে ৯৯.৫% ঠিকটাকে আমরা আড়াল করতে দেব না। ঐক্যবদ্ধ তৃণমূল এবার লড়াই করবে। পঞ্চায়েতে বিজেপিকে ধুয়ে মুছে সাফ করে দিতে হবে।

 

Previous articleটিকটক ভিডিও-তে প্রেম ! মুর্শিদাবাদের প্রেমিকের টানে আমেরিকা থেকে উড়ে এল প্রেমিকা
Next articleএক দেশে বিভিন্ন আইন জাতীয় ঐক্যের পরিপন্থী: অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে আদালতে হলফনামা কেন্দ্রের