দ্বিগুণ হচ্ছে কলকাতার পার্কিং ফি! গাড়ি রাখলেই গুণতে হবে মোটা টাকা

মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার জানান, অনেক বছর ধরে পার্কিং ফি বাড়ানো হয়নি। তাছাড়া কম ফি থাকলেও অনেক সময় অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হয়। এবার সেই প্রবণতা অনেকটা কমবে।

যত দিন গড়াচ্ছে লাফিয়ে বাড়ছে শহরের পার্কিং ফি (Parking Fee)। তবে এক বা দু’টাকা নয় পার্কিং ফি বাড়ছে একলাফে প্রায় দ্বিগুণ। হ্যাঁ, শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। কলকাতা পুরসভার (Kolkata Municipal Corporation) এমন সিদ্ধান্তের পরই মাথায় হাত সাধারণ মানুষের। সম্প্রতি, কলকাতা পুরসভায় মেয়র পরিষদদের বৈঠকে (MIC Meeting) এই সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়েছে। দু’চাকা, চার চাকা থেকে শুরু করে বাস-লরির ক্ষেত্রেও পার্কিং ফি বেড়ে দ্বিগুণ বা তিনগুন বাড়ানো হচ্ছে। আগে কলকাতার রাস্তায় বাইক পার্ক করলে দিতে হত ঘণ্টা পিছু ৫ টাকা করে। এখন সাধারণত ভাবে তা বেড়ে হতে চলেছে দ্বিগুণ, অর্থাৎ ঘণ্টায় ১০ টাকা। কিন্তু ৫ ঘণ্টা বাইক রাখলে পার্কিং ফি বেড়ে হবে ৮০ টাকা। আরও বেশি সময় মোটরবাইক রাখলে ঘণ্টা পিছু ৫০ টাকা করে অতিরিক্ত গুণতে হবে।

পুরসভা সূত্রে খবর, দিনের বেলায় সব গাড়ি থেকেই দ্বিগুণ বা তিন গুণ পার্কিং আদায়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পার্কিংয়ের সময় বাড়লে গুণতে হবে মোটা অঙ্কের টাকাও। তবে পুরসভার মতে, এতে পারিপার্শ্বিক আরও কিছু সমস্যা এড়ানো যাবে। অন্যদিকে শহরের রাস্তায় দিনদিন বেড়েই চলেছে প্রাইভেট অর্থাৎ চার চাকা গাড়ির সংখ্যা। আর সেক্ষেত্রেও বাড়ছে পার্কিং চার্জ (Parking Charge)। ঘণ্টায় ১০ টাকার পরিবর্তে এবার দ্বিগুণ বাড়িয়ে তা ২০ টাকা করা হচ্ছে। এছাড়া যদি গাড়ি ৫ ঘণ্টা পার্কিংয়ে থাকে তবে সেক্ষেত্রে গুণতে হবে ১৬০ টাকা। এরপরও যদি আরও বেশিক্ষণ গাড়ি রাখার সিদ্ধান্ত নেন তবে সেক্ষেত্রে ঘণ্টায় ১০০ টাকা করে বাড়বে ফি।

এতো গেল বাইক আর প্রাইভেট গাড়ির গল্প। এবার জেনে নেওয়া যাক যাত্রীবাহী বাসের পার্কিং ফি। আগে কোনও জায়গায় বাস পার্কিং (Bus Parking) করলে নেওয়া হত ২০টাকা। কিন্তু বর্তমানে তা বেড়ে ঘণ্টায় ৪০ টাকা হতে চলেছে। আর যদি টানা ৫ ঘণ্টা বাস রাখা যায় তাহলে সেক্ষেত্রে দিতে হবে ২৪০ টাকা। তার বেশি সময় হলে ঘণ্টায় গুণতে হবে ২০০ টাকা করে। তবে যাত্রিবাহী বাসের মতো মালবাহী লরির পার্কিংও আদায় করা হবে একই হারে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই ডিজিট্যাল মাধ্যমে আদায় করা হবে পার্কিংয়ের টাকা। তবে পুরসভার আধিকারিকদের দাবি, একদিকে পার্কিং থেকে আয়বৃদ্ধি এবং অন্যদিকে পরিবেশ দূষণের হাত থেকে বাঁচতেই এই নয়া পদক্ষেপ। যে হারে ফি বাড়ানো হয়েছে তাতে শহরের গাড়ির সংখ্যা কিছুটা কমবে বলেই মনে করা হচ্ছে। পুরসভা সূত্রে খবর, শহরে বহু গাড়ি যত্রতত্র ফেলে রাখা হয়। তার ফলে রাস্তায় তীব্র যানজট (Traffic) সৃষ্টি হয়। আর এমন পদক্ষেপের মাধ্যমে সেবিষয়ে লাগাম টানা যাবে বলে মনে করছে কেএমসি।

এদিকে পার্কিং ফি বাড়ানোর পক্ষেই সওয়াল করেছেন সংশ্লিষ্ট দফতরের মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমারও (MIC Debasish Kumar)। তিনি জানান, অনেক বছর ধরে পার্কিং ফি বাড়ানো হয়নি। তাছাড়া কম ফি থাকলেও অনেক সময় অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হয়। এবার সেই প্রবণতা অনেকটা কমবে। দেবাশিস কুমার আরও জানিয়েছেন, পার্কিং ফি দ্বিগুণ হলে অনেকেই রাস্তায় কম গাড়ি নামাবেন কিংবা নামালেও বেশিক্ষণ গাড়ি পার্কিংয়ে রাখতে পারবেন না। কলকাতার রাস্তার উপর ছাড়া গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা খুবই কম। আর এমন সিদ্ধান্তে একদিকে যেমন কমবে দূষণ ঠিক তেমনই একটি গাড়ি ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তার উপর দাঁড়াতে পারবে না।

 

Previous articleমোদি জমানায় রেকর্ড পতন টাকার দামে, ১ ডলার এখন ৮৩.১২! মুদ্রাস্ফীতির একটা আশঙ্কা
Next articleঘুর পথে বাংলা ভাগের ষড়যন্ত্র: বাংলা-বিহারের অংশ নিয়ে নয়া কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল!