গুজরাটের ভয়াবহ সেতু বিপর্যয়ের মৃত্যুমিছিল। যদিও এখনও মেলেনি বহু মৃতদেহর সন্ধান। প্রশ্ন উঠছে এতবড় সংস্থাকে কেবল ব্রিজ সারাইয়ের কাজ দিলেও কার ফাঁকের জন্য প্রাণ হারাল নিষ্পাপ ১৪১ জন? ইতিমধ্যেই উঠে এসেছে বিস্ফোরক তথ্য। ফরেন্সিক রিপোর্ট বলছে, অদক্ষ কর্মীদের দিয়ে সেতু সারাইয়ের কাজ করানো হয়। সেতুর ফ্লোর পালটানো হলেও কেবলগুলি পুরনোই রয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:সেতু দুর্ঘটনায় আহতদের দেখতে মোরবির হাসপাতালে মোদি, রাতারাতি রোগীর চাদর বদল, সংস্কার চলছে জোরকদমে
রবিবার গুজরাটের মরবিতে মাচ্ছু নদীর উপরে অবস্থিত সেতু ছিড়ে পড়ে। শতাধিক মানুষ প্রাণ হারান ওই দুর্ঘটনায়। মঙ্গলবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। আগামী ১৪ নভেম্বর এই আবেদনের শুনানি হবে। ইতিমধ্যেই ফরেন্সিক রিপোর্টে একাধিক বিস্ফোরক তথ্য উঠে এসেছে। জানা গিয়েছে, যে কনট্রাক্টর ওই সেতু সারাইয়ের দায়িত্ব পেয়েছিলেন, তারা আদতে সেই কাজ করার যোগ্যই নন। এমনকি সেতুর ফ্লোর পরিবর্তন করা হলেও, কেবলগুলি বদলানো হয়নি। সেতুর পরিবর্তিত ফ্লোরের ওজন বহন করার মতো অবস্থা ছিল না কেবলগুলির, এমনটাও জানা গিয়েছে। সেতুর নতুন ফ্লোরিং বা পাটাতনের কারণেই কেবলগুলি ছিড়ে যায় বলে মনে করা হচ্ছে।

ফরেন্সিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, সেতু সংস্কারের সময় চার স্তরের অ্যালুমিনিয়াম শিট বসানো হয়েছিল। কিন্তু এরফলে সেতুর ওজন বেড়ে যায়। সেই কারণেই আর নতুন করে কেবল পরিবর্তন করা হয়নি। রবিবারের দুর্ঘটনাটিও সেতুর অতিরিক্ত ভারের জন্যই ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে। ওরেভা সংস্থাকেই ১৫ বছরের জন্য এই সেতু রক্ষণাবেক্ষণের ও দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।গাফিলতিতে অভিযুক্ত ৯ জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। তার মধ্যেই সামনে এল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।

অন্যদিকে এনডিআরএফের মুখ্য অফিসার, কম্যান্ডান্ট ভিভিএন প্রসন্ন কুমার জানিয়েছেন, নদীর দু’ধারেই জলস্তর খুবই কম। কোথাও ১০ ফুট, কোথাও আরও কম। মাঝখানটায় খানিকটা বেশি, ২০ ফুট মতো। এই জলে পড়ার পড়ে ডুবে মারা যাওয়ার সংখ্যা আরও কম হতে পারত। অনেকেই হয়তো প্রাণে বেঁচে যেতেন সাঁতরে। কিন্তু ওই নদীর তলায় অজস্র বড় বড় পাথর রয়েছে, কাদামাটিতে মাখা। ব্রিজ ভেঙে পড়তে কয়েকশো মানুষ প্রবল ভরবেগ-সহ সোজা আছড়ে পড়েন ওই পাথরেই। ফলে আঘাতেই মৃত্যু হয় বেশিরভাগ মানুষই সুযোগই পাননি সাঁতার কাটার।
