ভাড়া ঠিকমতো মিলছে না, হাইকোর্টের দ্বারস্থ স্বয়ং মা কালী!

মন্দির সংলগ্ন জমির দোকান থেকে ভাড়া ঠিকমতো মিলছে না। তাই আদালতই ভরসা। দ্বারস্থ হলেন মন্দিরের অধিষ্ঠাত্রী দেবী, মা কালী। অবিশ্বাস্য এমনই ঘটনা ঘটল দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বিষ্ণুপুরের নেপালগঞ্জে। বিনা প্রশ্নে সেই মামলা গ্রহণ করল কলকাতা হাইকোর্ট। মামলার শুনানি হয় বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের এজলাসে। মা কালীর পক্ষেই রায় দেয় আদালত।

মামলার প্রেক্ষাপট-
১৯৯৫ সালে নেপালগঞ্জে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন পঞ্চানন চক্রবর্তী নামে এক ব্যক্তি।পরে ২০০২ সালে মন্দিরের নামে সংলগ্ন এলাকায় তিন একর জমি কেনেন তিনি। নেপালগঞ্জ হাট ছিল ওই জমিতেই। ফলে সেই হাটের ১৫০টি স্থায়ী এবং ২৫০টি অস্থায়ী স্টল থেকে ভাড়া প্রাপ্য হয় মন্দির কর্তৃপক্ষের।কিন্তু গোল বাধে এই শ্রী শ্রী আনন্দময়ী দক্ষিণা কালীমাতা ঠাকুরানির মন্দির-সংলগ্ন জমিতে অবস্থিত দোকানগুলির ভাড়া নিয়ে।তাও সেভাবেই চলছিল। তবে ঝামেলা শুরু হয় পঞ্চাননবাবুর মারা যাওয়ার পরে। পঞ্চাননবাবুর অবর্তমানে মন্দিরের মালিকানা কার তা নিয়ে তাই নিয়ে পঞ্চাননবাবুর দুই ছেলে কানাইলাল চক্রবর্তী ও সত্যেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর মধ্যে গন্ডগোল শুরু হয়।

কানাইবাবু দাবি করেন, ভাড়া উঠছে না দোকানগুলি থেকে, তাই মন্দির পরিচালনা ও উন্নয়ন পরিকল্পনায় সমস্যা হচ্ছে। এ জন্য আলিপুর আদালতের দ্বারস্থ হন কানাইবাবু। দীর্ঘ সময় মামলা চলে।

২০১৯ সালে নিম্ন আদালত স্টলগুলি থেকে ভাড়া সংগ্রহের জন্য যৌথভাবে রিসিভার নিয়োগ করে কানাইলাল চক্রবর্তী ও সত্যেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী– দুই ভাইকেই। এর পরে আবার নতুন বিপদ। কয়েকমাস পর থেকেই সেই ভাড়া আদায়কে কেন্দ্র করে দু’ভাইয়ের মধ্যে গন্ডগোল শুরু হয়। কানাইবাবুর অভিযোগ, সত্যেন্দ্রবাবু তাঁর সহযোগীদের নিয়ে বেআইনিভাবে ভাড়া আদায় করছেন, যা মন্দিরের ফান্ডে পৌঁছচ্ছে না। ফলে বঞ্চিত হচ্ছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ তথা মা কালী স্বয়ং।

এই নিয়ে সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে যান, বিষ্ণুপুর থানায় জানান, এমনকী জেলার পুলিশ সুপারের কাছেও অভিযোগ করেন কানাইবাবু। কিন্তু সমাধান সূত্র না মেলায় হাই কোর্টে দ্বারস্থ হতে হয় তাঁকে। আনন্দময়ী দক্ষিণা কালীমাতা ঠাকুরানির নামেই করা হয় মামলা।সম্প্রতি বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা শুনানি শোনার পরে ‘মা কালী’র পক্ষে রায় দেন। তিনি জানান, ভাড়া আদায়ের জন্য বিষ্ণুপুর থানার ওসিকেই যাবতীয় ব্যবস্থা করতে হবে। এই কাজে কেউ বাধা দিলে, তাদের গ্রেফতার করতে হবে।

Previous articleশীতের শিরশিরানির মধ্যেই নিম্নচাপের ভ্রুকূটি! ফের বৃষ্টি কলকাতায়?
Next articleলক্ষ্য পঞ্চায়েত ভোট, আজ থেকে ৩দিনের নদিয়া সফরে মুখ্যমন্ত্রী