বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে মাফিয়ারাজ! রাতে জঙ্গল থেকে সাফ একাধিক মূল্যবান গাছ

এলাকাবাসীদের অভিযোগ, কাঠ মাফিয়াদের দাপটে দীর্ঘদিন ধরেই বাড়ছে জঙ্গলে গাছ কাটার প্রবণতা। এবিষয়ে মুখ খুললে তাঁদের হুমকির মুখেও পড়তে হয় বলে অভিযোগ।

জঙ্গল থেকে দিনের পর দিন বহু মূল্যবান সেগুন গাছ (Teak Tree) কেটে পাচারের অভিযোগ। তবে শুধু পাচারই নয়, সেগুন কাঠ চুরির পাশাপাশি এলাকার স্থানীয় মানুষদের রীতিমতো হুমকিও (Threats) দেওয়া হয়। এভাবেই কাঠ মাফিয়ারা (Wood Mafia) রাতের অন্ধকারে দল বেঁধে জঙ্গল থেকে লাগাতার গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি এমনই অভিযোগ জানিয়েছেন ছিপরা এলাকার বাসিন্দারা। স্থানীয়দের অভিযোগ, বহুদিন ধরেই গাছ চুরির কাজ চলছিল কিন্তু চলতি সপ্তাহেই একাধিক গাছ কাটা হয়েছে বক্সার ছিপরার জঙ্গল থেকে। আলিপুরদুয়ার ২ নম্বর ব্লকের ছিপরা এলাকা থেকে কয়েকশো মিটার দুরেই বক্সার ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গল। সেখান থেকেই লাগাতার সেগুনের মতো মূল্যবান কাঠ চুরি হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ।

আর কাঠ মাফিয়াদের এমন আচরণে রীতিমতো আতঙ্কিত বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ছিপরা এলাকার বাসিন্দারা। ঘটনায় বন দফতরের (Forests Department) উদাসীনতাকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন তাঁরা। এলাকাবাসীদের অভিযোগ, কাঠ মাফিয়াদের দাপটে দীর্ঘদিন ধরেই বাড়ছে জঙ্গলে গাছ কাটার প্রবণতা। এলাকাবাসীরা এবিষয়ে মুখ খুললে তাঁদের হুমকির মুখেও পড়তে হয় বলে অভিযোগ। যে জঙ্গলে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষেধ সেই জঙ্গল থেকেই কাঠ মাফিয়াদের দল কীভাবে জঙ্গলের মূল্যবান কাঠ কেটে পাচার করছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন এলাকাবাসীরা। যদিও ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বন দফতর। এর আগে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ভিতরেই পর্যটকদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছিল।

স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, গভীর রাতে জঙ্গলে ঢুকে গাছ কেটে রাতের মধ্যেই ঠেলার সাহায্যে চোরাই গাছ জঙ্গলের বাইরে বের করে নিয়ে আসা হয়। এরপর কাঠ মাফিয়ারা ওই জঙ্গল লাগোয়া গ্রামের নির্দিষ্ট এলাকা থেকে অবৈধ কাঠ পিকআপ অথবা মারুতিতে বোঝাই করে প্লাস্টিক দিয়ে ঢেকে সকালে জাতীয় সড়ক ধরে উত্তর পারোকাটা রেলগেট পেরিয়ে পারোকাটা গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের সামনের রাজ্য সড়ক ধরে কোচবিহার জেলায় পাচার করে। পাশাপাশি রাতে মৎস্যজীবীরা জঙ্গলের ধারে নদীতে মাছ ধরতে যাওয়ার সময় কাঠ মাফিয়াদের সামনে পড়লে, গাছ কাটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের আটকে রাখে জঙ্গলদস্যুরা।

তবে কী বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ভবিষ্যৎ প্রশ্নচিহ্নের মুখে? বিভিন্ন মহল থেকে এমন প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছে। এমন অবস্থায় কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার আনা কতটা নিরাপদ সেই প্রশ্নও মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে। তবে এভাবে লাগাতার জঙ্গলের গাছ কেটে নিয়ে গেলে বাঘেরা থাকবে কীভাবে? তা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে বন দফতর সাফ জানিয়েছে, যদি এই অভিযোগ সত্যি হয় তাহলে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Previous articleটেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের জমায়েত ঘিরে এক্সাইড মোড়- ক্যামাক স্ট্রিটে ধুন্ধুমার
Next articleপ্রকাশিত রাজ্যের খসড়া ভোটার তালিকা, পৌনে ৩ লক্ষ নাম বাদ!