হাসপাতালে রেফার রোগ সারাতে কড়া দাওয়াই মুখ্যমন্ত্রীর, স্বাস্থ্যসাথীর অপব্যবহারে ক্ষোভ প্রকাশ

এ দিন বৈঠকে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “জেলাগুলিকে বলছি দয়া করে রেফারেল কেস কমান। গর্ভবতী মাকেও আপনারা ক্রিটিক্যাল কেস বলে রেফার করে দিচ্ছেন। দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টা যাত্রা করে তিনি যখন কলকাতায় এসে পৌঁছছেন তখন অপারেশনের আগেই মারা যাচ্ছেন। এই ধরনের জন্য যে রেফার করছেন তাঁকে দায়িত্ব নিতে হবে।

রাজ্যে সরকারি হাসপাতালে বাড়ছে রেফারের অভিযোগ। এমনকী, সম্প্রতি প্রসূতি মৃ*ত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। কোনও খরবই চোখ এড়ায়নি রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের। সেটা সোমবার, নবান্নে (Nabanna) স্বাস্থ্য পর্যালোচনা বৈঠকে স্পষ্ট বুঝিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। একই সঙ্গে রেফার রুখতে দেন কড়া বার্তা। যদি রেফারের জন্য কোনও অন্তঃসত্ত্বার মৃ*ত্যু হয় সেক্ষেত্রে যে চিকিৎসক রেফার করেছিলেন তাঁকে দায়িত্ব নিতে হবে-স্পষ্ট জানন মমতা। এদিন রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়েও একাধিক নির্দেশ দেন মমতা।

এ দিন বৈঠকে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “জেলাগুলিকে বলছি দয়া করে রেফারেল কেস কমান। গর্ভবতী মাকেও আপনারা ক্রিটিক্যাল কেস বলে রেফার করে দিচ্ছেন। দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টা যাত্রা করে তিনি যখন কলকাতায় এসে পৌঁছছেন তখন অপারেশনের আগেই মারা যাচ্ছেন। এই ধরনের জন্য যে রেফার করছেন তাঁকে দায়িত্ব নিতে হবে। কেন গর্ভবতী মহিলাদের এভাবে রেফার করা হবে? আগে বাড়িতেই সন্তান জন্ম নিত। এখন যদি ৯৯ শতাংশ ইনস্টিটিউশনাল ডেলিভারি হয় সেক্ষেত্রে কেন রেফারের বিষয়টি থাকবে!” চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী।

রেফারের ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে সারপ্রাইজ ভিজিটের পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি পরামর্শ দেন, গর্ভবতী মহিলার ডেলিভারির সময় যদি সমস্যা হয়, সেক্ষেত্রে জেলা হাসপাতালের সুপারের সঙ্গে চিকিৎসক যোগাযোগ করতে পারেন। ভিডিও কলের মাধ্যমে সাহায্য অন্যান্য স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে পারেন বলে জানান মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, ”সবকিছু আমাকে বলে দিতে হবে? নিজের কাজ নিজেকে বুঝে নিতে হবে। কোনও লবিবাজি চলবে না।”

স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের অপব্যবহার নিয়েও সরব মুখ্যমন্ত্রী। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ফেরানো নিয়ে আগেও বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে সতর্ক করেছিলেন তিনি। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ফেরালে বেসরকারি হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিলের কথাও বলেছিলেন। এদিনও ফের সেকথা বলেন মমতা। এই সব সমস্যার সমাধানে প্রতি মাসে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে জেলাশাসকদের বৈঠকে বসার নির্দেশ দেন তিনি। যারা কার্ডের অপব্যবহার করছেন তাদের বিরুদ্ধেও কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলে মুখ্যমন্ত্রী।

পাশাপাশি, এনআরএস ও এসএসকেএম হাসপাতালে শিশুদের হার্টের অপারেশন চালুর পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। বেশকিছু এলাকায় স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর কাজ বাকি রয়েছে। সেই কাজ সম্পন্ন করতে সাংসদ তহবিলের টাকা ব্যবহারের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। স্বাস্থ্য পরিষেবা আরও উন্নত করতে অবিলম্বে নিয়োগের কথাও বলেন তিনি।

Previous articleজোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে পার্টি অফিস ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ হাই কোর্টের
Next articleকামালগাজিতে কারখানায় গ্যাস লিকে আতঙ্ক, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা দমকলের