ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনা চাইছি: মন্তব্য মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ, অনশন-ধর্নায় পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা!

নির্বাচনের দাবিতে অনড় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়ারা। বুধবারই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, তাঁদের দাবি না মানলে আমরণ অনশনে বসবেন পড়ুয়ারা। কিন্তু এখনই নির্বাচন সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আর তাই বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বৃহত্তর আন্দোলনের পথ বাছলেন মেডিক্যাল কলেজের আন্দোলনকারীরা। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে অনশনরত চিকিৎসক পড়ুয়াদের শারীরিক পরিস্থিতি পরীক্ষা করানোর জন্য চিকিৎসকদের একটি দল পাঠানো হয়েছিল। সেই চিকিৎসক দলকে ফিরিয়ে দিয়েছেন অনশনকারীরা। তাঁদের বক্তব্য, কর্তৃপক্ষ সহানুভূতিশীল হলে তাঁদের দাবি মেনে নিতেন। এভাবে অনশনের দিকে ঠেলে দিতেন না।

আরও পড়ুন:CMC Update : মেডিক্যাল কলেজে আমরণ অনশনের ডাক দিলেন পড়ুয়ারা

বৃহস্পতিবার দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। তাদের অবস্থান প্রসঙ্গে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, “আমরা তো সবসময়ই আলোচনা চাইছি। আমাদের ছাত্র ওরা। কিন্তু স্বাস্থ্যভবন থেকে নির্দেশ আসতে হবে যে ২২ ডিসেম্বরই ভোট। সেটা না আসা অবধি কিছু করা যাচ্ছে না। ভোট ঘিরে আইনশৃঙ্খলা, আর্থিক খরচের জোগানের বিষয়টি স্বাস্থ্যভবনের এক্তিয়ারভুক্ত, কলেজ কাউন্সিলের এক্তিয়ারে নয়। ঘেরাওমুক্ত হওয়ার পর বুধবারও আমরা সারাদিন কাজ করে স্বাস্থ্যভবনে গিয়েছি। তারা বলছে, ভোট হবে। কিন্তু ২১-২২ তারিখে হবে না। কিন্তু ছাত্ররা ২১-২২’র নির্বাচন নিয়ে অনড়। এন‌এমসি গাইডলাইনে লেখা আছে স্টুডেন্ট বডি তৈরি করতে হবে। কিন্তু সেটা তো ভোটসাপেক্ষ। যতক্ষণ না তা করা যাচ্ছে স্টুডেন্টস কাউন্সিল করা যায়। যেটা সিলেকশনের মাধ্যমে হয়। তারাই সিলেকশন করে দিল। এ প্রস্তাব আগেও দিয়েছি, ওরা মানেনি। এখনও মানছে না। কিন্তু উপর থেকে অনুমতি না এলে আমরাও তো কিছু করতে পারব না।”

উল্লেখ্য, সোমবার থেকেই অশান্ত কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। এদিন দুপুর তিনটে থেকে কলকাতা মেডিক‌্যাল কলেজে শুরু হয়েছিল ঘেরাও। অধ‌্যক্ষ ছাড়াও, সুপার, ডেপুটি সুপার, নার্সিং সুপারিটেন্ডেন্ট-সহ চব্বিশজন বিভাগীয় প্রধানকে ঘেরাও করেছিল ডাক্তারি পড়ুয়ারা।  বুধবার ভোর রাতে সে ঘেরাও তুলে নেওয়া হয়। ছাত্ররা দাবি করেন, দুপুর দুটোর মধ্যে নির্বাচনের দিন ঘোষণা করতে হবে। সেইমতো বুধবার দুপুরে অধ‌্যক্ষর ঘরে আসে তারা। দেখা যায় অধ‌্যক্ষ নেই। বিভাগীয় প্রধানরাও গরহাজির।এরপরই এক আন্দোলনকারী সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, অনেক আশা নিয়ে অধ‌্যক্ষকে আবেদন জানিয়েছিলাম। কিন্তু কোথাও সহযোগিতা পাচ্ছি না। পড়ুয়াদের দাবি, যাঁরা আন্দোলনে নেমেছেন তাঁদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তাঁরা আরও জানিয়েছেন, ঘেরাওয়ের কারণে স্বাস্থ‌্য পরিষেবা ব‌্যাহত হয়নি। এর পিছনে চক্র রয়েছে। যাঁদের জন‌্য ব‌্যাহত হয়েছিল। তার পিছনে কারা সেটা তদন্ত করতে হবে। সবশেষে ঠিক হয়, যতক্ষণ না নির্বাচনের দিন ঘোষণা হচ্ছে আমরণ অনশনের পথেই হাঁটবে ছাত্ররা।

এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, আন্দোলন নয়, আলাপ-আলোচনার মধ্যে দিয়ে বেরবে মীমাংসা। বারবার অনশন তুলে নেওয়ার আবেদন করেছেন তাঁরা। সুপার অঞ্জন অধিকারী বলেন, “আমাদের প্রথম ডিউটি রোগীকে পরিষেবা দেওয়া। দ্বিতীয় কর্তব্য পঠন পাঠন চালানো। আলাপ- আলোচনার মধ্যে দিয়ে মীমাংসা সূত্র বেরবে।”

Previous articleপ্রয়াত হলেন বর্ষীয়ান পরিচালক বিষ্ণু পাল চৌধুরী
Next articleশিয়ালদহ দুর্ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ রেলের, বরখাস্ত অভিযুক্ত চালক