“তারিখ পে তারিখ”, শুভেন্দুর ডিসেম্বর ডেট লাইনকে ফের কটাক্ষ দিলীপের!

১২, ১৪, ২১ তারিখের দিকে নজর রাখতে বলেছিলেন শুভেন্দু। তার মধ্যে ১২ আর ১৪ পার। তৃণমূল বা রাজ্য সরকারকে কোনও অস্বস্তিতে ফেলতে পারেনি শুভেন্দু, বরং হিরো সাজতে গিয়ে নিজেই নিজের কথার জালে ফেঁসে জিরো হয়েছেন দলবদলু নেতা

বঙ্গ রাজনীতিতে বহু চর্চিত ডিসেম্বর। যে মাসে ধামাকা দেবেন বলে গালভরা কথা বলেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু ধামাকা কোথায়, এ তো পুরোটাই ফ্লপ শো! আবার ১২, ১৪, ২১ তারিখের দিকে নজর রাখতে বলেছিলেন শুভেন্দু। তার মধ্যে ১২ আর ১৪ পার। তৃণমূল বা রাজ্য সরকারকে কোনও অস্বস্তিতে ফেলতে পারেনি শুভেন্দু, বরং হিরো সাজতে গিয়ে নিজেই নিজের কথার জালে ফেঁসে জিরো হয়েছেন দলবদলু নেতা। তাঁর অপরিণত ও অদূরদর্শী রাজনৈতিক কার্যকলাপের জন্য অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপি।

আর সেই কারণেই শুভেন্দু অধিকারীর ডিসেম্বরের ডেট-লাইনকে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বরং কটাক্ষের সুরে মুচকি হেসে হিন্দি সিনেমার বিখ্যাত সংলাপ ”তারিখ পে তারিখ’ শোনা গেল দিলীপবাবুর মুখে। বিজেপি সর্ব ভারতীয় সহ-সভাপতির সাফ কথা, তিনি তারিখের রাজনীতি করেন না। যারা করেন, তারা বলতে পারবেন। তিনি এই দিনক্ষণ মিলিয়ে রাজনীতির বিষয়ে বিশ্বাস করেন না। তিনি জানেন, তারিখ অনুযায়ী শুধু ভোট হয়। তাঁর কথায়, “আমি কোনও তারিখ নিয়ে রাজনীতি করি না। কারণ আমার মতে শুধু ভোটটা তারিখ মিলিয়ে হয়।”

সম্প্রতি, হাজরার সভা থেকে নাম না করে দিলীপ ঘোষকে শুভেন্দুর ”মর্নিং ওয়াক” মন্তব্যেরও এদিন পালটা দেন সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি। দিলীপবাবু বলেন, “অনেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছেন। আসছেন অনেকে। আমি যেখানেই যাই, লোককে বলি যে সকালে হাঁটুন।” প্রসঙ্গত, হাজরার সভামঞ্চ থেকে দিলীপ ঘোষকে নিশানা করে শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, ”আমি গিমিকে পছন্দ করি না। আমি সকালে মর্নিং ওয়াকে গিয়েই মিডিয়াকে স্টেটমেন্ট দিই না। আমি যা বলি, ভেবে বলি।” এদিন তারই পালটা দিলেন দিলীপ। আজ দিলীপের সংযোজন, “প্রত্যেকে নিজের মত করে রাজনীতি করেন। প্রত্যেকের রাজনীতি করার ঢং আলাদা। কথা বলার ধরন আলাদা। কিন্তু মানুষ ঠিক করে যে কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল। কেউ। নিজেকে সার্টিফিকেট দিতে পারে না।”

অন্যদিকে, তাঁর এই ডেট-লাইন বা তারিখ ঘোষণা নিয়ে শুভেন্দুর বক্তব্য, ডেডলাইনের কোনও ব্যাপার নেই। যেতেই হবে, সময় বলবে। তারিখ নিয়ে ভুল ব্যাখ্যা হয়েছে বলে দাবি শুভেন্দুর। তাঁর কথায়, ডেডলাইন ছিল না। বলেছিলাম ১২ ডিসেম্বর গুরুত্বপূর্ণ হবে। সেটা পিছিয়ে ১৩ জানুয়ারি হয়েছে। প্রসঙ্গত, ডিসেম্বর ধামাকার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারীর। অপেক্ষা করুন, ডিসেম্বর মাসের তিনটে তারিখের উপরে নজর রাখুন। রাজ্যের একাধিক জায়গায় সভা করে একথা বলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বার বারই শুভেন্দুকে বলতে শোনা যায়, ‘১২, ১৪, ২১ তিনটে দিন খুব গুরুত্বপূর্ণ। ওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ।’

তবে নির্ঘণ্ট ঘোষণা করেও পিছিয়ে গিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। ওদিকে আগেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর এই ডিসেম্বর ধামাকা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে, রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ চাঁচাছোলা ভাষায় বলেছিলেন, “জানি না ১২ তারিখের সঙ্গে কী বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। রাজনীতির সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক রয়েছে বলে আমার মনে হয় না।”

এদিকে গতকাল, বুধবার আসানসোলে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। তাতে পদপিষ্ট হয়ে মারা যান তিনজন। মর্মান্তিক সেই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করলেন বিজেপি সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বললেন, “আরও প্রস্তুতির প্রয়োজন ছিল।”

তবে এখানেই শেষ নয়, সাংবাদিকদের সামনে নাম না করেই শুভেন্দু অধিকারীকে খোঁচা মেরে বিজেপি এই নেতা বলেন, “দান খয়রাতি মানবতার অপমান। কিছু পাওয়ার লোভ দেখিয়ে মানুষকে টেনে আনা আমি সমর্থন করি না। গরীবকে সাহায্য করার অন্য নানারকম উপায় আছে। আরও সতর্ক হওয়া উচিৎ ছিল।”

Previous articleসুবীরেশের হাজিরায় কেন ১০ দিন সময়, জেলা আদালতের কাছে রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের
Next articleপঞ্চায়েত নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ হাই কোর্টের