Thursday, November 6, 2025

মডেল ‘দুয়ারে সরকার’: পঞ্চায়েত ভোটের আগে নিবিড় জনসংযোগে জোর তৃণমূল সুপ্রিমোর

Date:

Share post:

বরাবরই তিনি সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশলে গিয়ে কাজ করতে ভালবাসেন। পাশের বাড়ির দিদির ইমেজই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) USP। ২০২৩-এর পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলের নেতা-কর্মীদের সেই নিবিড় জনসংযোগের নির্দেশ দিলেন তৃণমূল (TMC) সুপ্রিমো। নতুন বছরের দ্বিতীয় দিনেই দলের সর্বস্তরের নেতাদের নিয়ে নজরুল মঞ্চে মেগা বৈঠক করছেন মমতা। তার আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দলের রূপরেখা স্পষ্ট করেছেন তৃণমূল সভানেত্রী।

তৃণমূল সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের খতিয়ান নিয়ে মানুষের দরজায় দরজায় পৌঁছতে হবে। সোমবারের মেগা বৈঠকের আগে দলের-নেতাকর্মীদের এই বার্তা দেন মমতা। সরকারের জনপ্রিয় প্রকল্প দুয়ারে সরকারের উদাহরণ টেনে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, সেই কর্মসূচির মতোই মানুষের দরজায় পৌঁছবে তৃণমূল। পঞ্চায়েত কোন কাজ হয়নি, কী হয়েছে সেটা জানানো মানে ক্ষোভ উগ্রে দেওয়া নয়- স্পষ্ট জানান মমতা। তিনি বলেন, মানুষের কথা মানুষ বলবে। সেটা শুনে সমাধানের চেষ্টা করতে হবে। দু-একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলেও, সেটা ঘটনা উচিত নয় বলে জানান মমতা। ।

পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তৃণমূলের (TMC) ‘ দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচি চালু হল এদিন। ঘরে ঘরে গিয়ে সরকারি প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন কি না, তার খোঁজ নেবেন ‘দিদির দূত’রা। নজরুল মঞ্চ থেকে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। জানান, ‘দুয়ারে সরকারে’র যে রূপরেখা, তার উপর ভিত্তি করেই ‘দিদির সুরক্ষাকবচ’ চালু হল। এর লক্ষ্য অনেক বড়। নিবিড় জনসংযোগের হাতিয়ার হিসেবে ঘরে ঘরে শাসকদলকে পৌঁছে দেওয়া। ৩৫০০ কর্মী ১০ কোটি পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবে। বিনামূল্যে মানুষকে সুবিধা দিতে হবে। প্রয়োজনে পাশে দাঁড়িয়ে দ্রুত সমস্যার সমাধান করতে হবে। মানুষের কাছে তৃণমূলের দায়বদ্ধ। এরপরেই তৃণমূল নেত্রী বলেন, কৈফিয়ত তো পঞ্চায়েত কে নয়, মানুষের কাছে দিতে হবে।

দুর্নীতির প্রসঙ্গ তুলে মমতা মন্তব্য, একটা পোকা ধানে জন্মায়। সেটাকে বিনাশ না করলে সব ধানে পোকা লাগবে। আগেই সেটাকে বেছে নষ্ট করতে হবে। না হলে সমূলে বিনাশ হবে। তবে, অভিযোগ এলে যে প্রথম সতর্ক করা হবে, সেকতাও জানান তৃণমূল সভানেত্রী।

গ্রামে গ্রামে গিয়ে দলের নেতৃত্বকে থাকতে বলেন মমতা। জানান, “আমরা এই ধরনের প্রোগ্রাম আগে করতাম। কোথাও কারও বাড়ি গিয়ে রাত কাটানো। কিন্তু এখন এত ব্যস্ততা সেটা করা হয় না। বাংলার কত ইতিহাস লুকিয়ে আছে সেটা দেখা। কোনও জায়গা অদেখা থাকলে দেখা। ধর্মীয় স্থান দেখা। বিশিষ্ট মানুষ, পড়ুয়াদের সঙ্গে জনসংযোগ করা।“ মানবিকতার আদর্শকে সামনে রেখে এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ তৃণমূল সুপ্রিমোর।

সব দিকেই যে দল নজর রাখছে, সে কথাও বুঝিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, “কিছু নজরদারি রাখতে হয়। কে ঠিক করে কাজ করে সেটা দেখতে হয়। প্রত্যেকের নিজস্ব কাজ আছে। এখন ডাইরেক্ট টাকা যায়। সেটাকে কন্ট্রোল করার জন্য নজরে রাখতে হয়।“

দলই বড়। স্পষ্ট বার্তা তৃণমূল সুপ্রিমোর। বলেন, “আমিও কিন্তু দলের উর্ধ্বে নই। মানুষের উর্ধ্বে নই। রোজ আমার রুটিন মেনে চলি“।

সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, এই জনসংযোগ কি পঞ্চায়েতের কথা ভেবে? মমতার উত্তর, “দুয়ারে সরকার কি ভোটকে মাথায় রেখে করা? এই প্রোগ্রাম তো পুরসভার ব্লক ধরেও করা। এটা কন্টিনিউয়াস প্রসেস। আমরা যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম তা করেছি।“ অর্থাৎ দুয়ার সরকার মডেলেই দলকে মানুষের দরজায় নিয়ে যাওয়া নির্দেশ দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো।

 

spot_img

Related articles

বাংলা কথায় দক্ষতা, কোন পদে পান তৃপ্তি? দীপ্তিকে নিয়ে স্মৃতির ঝাঁপি খুললেন ‘অভিভাবক’ মিঠু

সন্দীপ সুর বাংলার প্রথম ক্রিকেটার হিসাবে আইসিসি একদিনের বিশ্বকাপ জিতেছেন রিচা ঘোষ কিন্তু ভারতীয় দলের আরও এক ক্রিকেটারের সঙ্গে...

দিঘার জগন্নাথ ধামে প্রথম রাস উৎসবে ভক্তদের ঢল 

দিঘার জগন্নাথ ধামে এবারই প্রথম পালিত হল রাস উৎসব, আর সেই উপলক্ষে সকাল থেকেই উপচে পড়েছে ভক্তসমুদ্র। উৎসবের...

বেঁচে আছেন, তাই জানতে পারলেন ‘দোষী নন’: আজব বিচার উত্তরপ্রদেশে

বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে। উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ের (Aligarh) মিঠু সিংয়ের জীবনে যেন সেটাই সত্যি হতে বসেছিল। অবশেষে ৫৫...

‘সুফল বাংলা’ থেকে ‘উত্তরণ’: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথেই নিউ ইয়র্ক জয় মামদানির!

পরিবর্তনের ডাক। মা-মাটি-মানুষের জন্য স্লোগান। উন্নয়নমূলক পদক্ষেপে নাগরিক স্বাচ্ছন্দে জোর। একের পর এক জনমুখি প্রকল্প ঘোষণা। বাংলায় সাধারণ...