মোদির নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত বৈধ, রায় সুপ্রিম কোর্টের

২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর, রাত ৮টায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির(Narendra Modi) হঠাৎ ঘোষণায় বাতিল হয়ে গিয়েছিল ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট। পরে এই সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে ওঠে প্রশ্ন। মামলা দায়ের হয় দেশের শীর্ষ আদালতে(Supreme Court)। সেই মামলায় সোমবার আদালতের তরফে জানিয়ে দেওয়া হলো নোট বাতিলের(demonetization) সিদ্ধান্ত আইনত বৈধ ছিল। রিজার্ভ ব্যাংকের সঙ্গে ছ’মাস ধরে আলোচনার পরেই নোটবন্দির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র। একইসঙ্গে নোটবন্দী বিরোধি যাবতীয় মামলা খারিজ করে দিল শীর্ষ আদালত।

নোটবন্দী সংক্রান্ত মামলায় এদিন আদালত জানায়, কীভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা বিবেচনা করে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে পাল্টানো যায় না। নোটবাতিলের ক্ষমতা কেন্দ্রের রয়েছে। তাই কেন্দ্রের তরফ থেকে এই প্রস্তাব এসেছে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়াকে এই ভাবে ভুল বলে ঘোষণা করা যায় না। একইসঙ্গে জানানো হয়, কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক কোনও সিদ্ধান্তকে পাল্টে দেওয়া যায় না। কেন্দ্র আরবিআইয়ের সঙ্গে ৬ মাস ধরে পরামর্শ করার পরই নোটবন্দির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।

পুরনো নোট বদলানোর জন্য মাত্র ৫২ দিন সময় দেওয়াকেও ‘অযৌক্তিক’ বলে দাবি করেছিলেন আবেদনকারীরা। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট এদিন জানিয়ে দেয়, নোট বদলানোর জন্য সঠিক সময়ই দেওয়া হয়েছিল এবং কোনও ভাবেই তাকে অযৌক্তিক বলা যায় না। তবে নোটবন্দির উদ্দেশ্য সফল হয়েছে কি না, তা ‘প্রাসঙ্গিক নয়’ বলেও আদালত এদিন জানিয়ে দেয়। এদিকে আদালত নোট বাতিলের সিদ্ধান্তে মোদির পক্ষে রায় দিলেও খানিক ভিন্নমত বিচারপতি বিভি নাগারত্নের। তিনি জানান, নোটবন্দির মতো সিদ্ধান্ত সরকার ঘোষণা করেছে। যা আদতে সংসদের মাধ্যমে আসা উচিত ছিল।

উল্লেখ্য, ৬ বছর আগে ২০১৬ সালে আচমকা ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সরকারের দাবি ছিল, সন্ত্রাসবাদে আর্থিক মদত, কালো টাকা এবং কর ফাঁকি রুখতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। যদিও এই সিদ্ধান্তের ফলে দেশ জুড়ে সমস্যার মুখে পড়েন সাধারণ মানুষ। এটিএমের লাইনে দাঁড়ানো অবস্থায় অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হয়। একপক্ষের দাবি হটকারী সিদ্ধান্তে লাভ হয়নি দেশের। সেই সূত্রেই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টে। গত সেপ্টেম্বরে এই সংক্রান্ত শুনানিতে রাজি হয় আদালত। ১২ অক্টোবরে হয় প্রথম শুনানি। ওই দিন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, এই বিষয়ে জবাবদিহি করা কেন্দ্রের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। শীর্ষ আদালতের বিচারপতিদের বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, নোট বাতিলের সিদ্ধান্তে দেশের আমজনতার আদৌ লাভ হয়েছে কি না, এই বিষয়ে ৯ নভেম্বরের মধ্যে হলফনামা মারফত জানাতে হবে মোদি সরকারকে।

Previous articleনতুন বছরেই ফের রাজ্যে শাহি সফর! জোড়া জনসভা ২ জেলায়
Next articleনোটবন্দি মামলার রায়ে কেন সহমত হলেন না বিচারপতি বি.ভি নাগরত্না ?