শহিদ প্রণামে জনতার ঢল, বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে লড়ার শপথ নন্দীগ্রামের

শহিদ প্রণামে জনতার ঢল নামল নন্দীগ্রামে। কৃষিজমি রক্ষার আন্দোলনে যাঁরা উৎসর্গ করেছিলেন নিজেদের জীবন তাঁদের প্রতি হৃদয়ের শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা উজাড় করে দিলেন নন্দীগ্রামের (Nandigram) মানুষ। শপথ নিলেন বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ানোর। মঙ্গলবার, কালীচরণপুর পঞ্চায়েতের গড়চক্রবেড়িয়ায় ভূতা মোড়ে বশ্যতা বিরোধী দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজন করা হয়েছিল এক জনসভার। উদ্যোক্তা ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি। ২০০৭এর এই ৩ জানুয়ারিতেই জমি অধিগ্রহণের বিজ্ঞপ্তি লাগাতে এসে গ্রামবাসীদের সক্রিয় প্রতিরোধের মুখে পড়েছিলেন সিপিএম নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট সরকারের লোকজন। এই দিনটিতেই শুরু হয়েছিল ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির আন্দোলন। সেই কারণেই এলাকার মানুষের, বিশেষ করে বিশাল সংখ্যায় মহিলাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এদিন এক বিশেষ মাত্রা দেয় এই সভাকে। উন্নয়নের রাজনীতিতে পেরে উঠতে না পেরে বিজেপির ধর্মের নামে বিষ ছড়ানোর অপচেষ্টার প্রতিবাদে গর্জে ওঠে তৃণমূল (TMC)। অন্যায়ের প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য সরাসরি তৃণমূলকে ভোট দেওয়ার ডাক দেওয়া হয় CPIM কর্মী-সমর্থকদের।

মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে যাঁদের দীর্ঘদিন বন্দি রাখা হয়েছে, তাঁদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর কথাও ঘোষণা করা হয় দলের পক্ষ থেকে। বিরোধী দলনেতার দিকে স্পষ্ট ইঙ্গিত করে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) বলেন, যার যার উপরে রাগ আছে, ভোটে সন্ত্রাসের মিথ্যা মামলায় তাঁদেরই ফাঁসানো হচ্ছে। দিনের পর দিন ধরে জেলে আটকে রাখা হচ্ছে তাঁদের। তৃণমূল অবশ্যই তাঁদের পরিবারের পাশে আছে, থাকবে। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Bandyopadhyay) জানিয়ে দিয়েছেন, দীর্ঘদিন এভাবে বন্দি হয়ে থাকা মানুষের মা-বোনেদের যাতে কারও কাছে হাত পাততে না হয়, তারজন্য সাধ্যমতো সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া হবে।

গেরুয়া শিবিরের ধর্মীয় বিভাজনের ফাঁদ সম্পর্কে এদিন সতর্কবার্তা দেন তৃণমূল মুখপাত্র। তাঁর কথায়, রাজনৈতিক বাদবিচার না করে মানুষের জন্য কাজ করে তৃণমূল কংগ্রেস। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রীর মতো অজস্র সমাজকল্যাণ প্রকল্পের সুযোগ যখন দল-ধর্ম নির্বিশেষে সকলের কাছে পৌঁছে যায়, তখন বিজেপির কথা মানুষ শুনবেন কেন? কেন তাঁদের প্ররোচনায় পা দেবেন? এলাকার মানুষই স্বতঃস্ফূর্তভাবে বলবেন, নো এন্ট্রি শুভেন্দু। বিজেপি-শূন্য হবে নন্দীগ্রাম। ডবল ইঞ্জিন নয়, উন্নয়নের ধারা বজায় রাখবে ট্রিপল ইঞ্জিন- নবান্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলা পরিষদে তৃণমূল এবং এবং অবশ্যই তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত। এদিনের সভামঞ্চে উপস্থিত ছিলেন, নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ, সহ সভাপতি শেখ আলরাজি, কালীচরণপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান শেখ সৈয়দ কাজি, সোনাচূড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান কালিকৃষ্ণ প্রধান, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদ সদস্য প্রণব মহাপাত্র, চারণকবি মধুসূদন মণ্ডল প্রমুখ।

আরও পড়ুন- বুধবার থেকে ৩দিন চলবে না উত্তরবঙ্গের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন, সমস্যায় পর্যটকরা

 

Previous articleশ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে প্রথম টি-২০ ম‍্যাচে জয় ভারতের
Next articleপূর্ব মেদিনীপুরে বাধিয়া এবং পিঠে পুলি উৎসবে আপ্লুত কুণাল গান গাইলেন