অনামিকার পাশে কমিশন, মন্ত্রীকন্যার জায়গায় নিয়োগ পাওয়া ববিতার চাকরি এবার প্রশ্নের মুখে!

ববিতার আবেদন পত্রে ববিতা নিজে অ্যাকাডেমিক স্কোর হয় ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত ভুল লিখেছিলেন। এসএসসি সূত্রে খবর, আজ শুক্রবার এই মর্মে কলকাতা হাইকোর্টে হলফনামা দিতে চলেছে কমিশন

রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতার জায়গায় স্কুল শিক্ষিকায় নিয়োগ হওয়া সেই
ববিতা সরকার এবার নিজেই চাকরি হারাতে পারেন। স্কুল সার্ভিস কমিশন যে পদক্ষেপ নিতে চলেছে সেখানে ববিতার চাকরি হারানোর সম্ভাবনা প্রবল। ববিতা সরকার নয়, অনামিকা রায়ের পক্ষেই সওয়াল করতে চলেছে কমিশন। ববিতার স্কোর থেকে বাড়তি ২ নম্বর প্রত্যাহার হলেই চাকরি পাকা অনামিকার। অন্যদিকে, চাকরি খোয়াবেন ববিতা।

তাঁর আবেদন পত্রে ববিতা নিজে অ্যাকাডেমিক স্কোর হয় ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত ভুল লিখেছিলেন। এসএসসি সূত্রে খবর, আজ শুক্রবার এই মর্মে কলকাতা হাইকোর্টে হলফনামা দিতে চলেছে কমিশন। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এই ইস্যুতে আগেই নম্বর বিভ্রাটের জেরে মন্ত্রীকন্যা অঙ্কিতা অধিকাররীর থেকে পাওয়া টাকা খরচ না করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। অর্থাৎ, ববিতার চাকরি গেলে অনামিকা শুধু নিয়োগ-ই পাবেন তা নয়, ওই টাকাও পাবেন তিনি।

প্রসঙ্গত, এসএসসি দুর্নীতি সামনে জন্য ববিতা সরকারের নাম বহু চর্চিত। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশচন্দ্র অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর পরিবর্তে চাকরি পেয়েছিলেন তিনি, পেয়েছিলেন ১৬ লক্ষ টাকাও। নম্বর-বিভ্রাটের জেরে এবার তাঁর চাকরিও প্রশ্নের মুখে। শিলিগুড়ির বাসিন্দা অনামিকা রায়ের দাবি, চাকরিটা তাঁর পাওনা ছিল। অ্যাকাডেমিক স্কোরে ভুল তথ্যের জেরে চাকরি পেয়েছেন ববিতা। এই মর্মে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে মামলা দায়ের করেন অনামিকা। এবার সেই অনামিকার পক্ষেই সওয়াল করতে চলেছে কমিশন।

অন্যদিকে, ববিতা সরকার পালটা দাবি করেন, তাঁকে ভুলবশত ২ নম্বর অতিরিক্ত দিয়েছে এসএসসি। এই ভুল নম্বর দেওয়ার জন্য এসএসসির তরফের ব্যাখ্যা চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন ববিতা সরকারও। আদালতের নির্দেশে সম্প্রতি বিভিন্ন নথি নিজেদের ওয়েবসাইটে আপলোড করেছে এসএসসি। সেই নথি দেখেই সন্দেহ প্রকাশ করেন ববিতা সরকার। যারপরই তিনিও বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। অনামিকার আইনজীবীর দাবি, স্নাতকে শতাংশের হারে গড় ৫৫ নম্বর পেয়েছেন ববিতা। কিন্তু ববিতা আবেদনপত্রে ৬০ শতাংশ লিখেছেন। সে কারণেই অ্যাকাডেমিক স্কোরে বাড়তি ২ নম্বর পেয়েছেন।

উল্লেখ্য গতবছর এসএসসি চেয়ারম্যান আদালতে জানান, ববিতা সরকারের সাবজেক্ট টেস্ট নম্বর ৩৬, অ্যাকাডেমিক স্কোর ৩৩ আর পার্সোনালিটি টেস্টে প্রাপ্ত নম্বর ০৮। সর্বমোট ৭৭। তারপরই আদালতের নির্দেশে মন্ত্রীকন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর চাকরি বাতিল হয়ে সেই জায়গায় মেখলিগঞ্জ ইন্দিরা গার্লস স্কুলে নিয়োগ পান ববিতা সরকার। বর্তমানে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা হিসেবে চাকরি করছেন ববিতা। এখন অ্যাকাডেমিক স্কোরে বাড়তি ২ নম্বর বাদ গেলে তাঁর চাকরি চলে যেতে পারে!

Previous articleবছর শুরুতে ছাঁটাই ওলায়, চাকরি গেল ২০০ কর্মীর
Next articleকবে থেকে হাঁটাচলা করতে পারবেন পন্থ? কী বলছেন চিকিৎসকেরা