দেশের ১ শতাংশ ধনীর কাছে ভারতের ৪০ শতাংশ সম্পত্তি  

ভারতে সবচেয়ে ধনী এক শতাংশ মানুষ এখন দেশের ৪০ শতাংশেরও বেশি সম্পদের (Wealth) মালিক। সোমবার একটি গবেষণায় এমনই একটি তথ্য সামনে এসেছে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (World Economic Forum) বার্ষিক সভার প্রথম দিনেই ভারতের বার্ষিক বৈষম্য প্রতিবেদনের সাপ্লিমেন্টারি (Supplementary) প্রকাশ করে। আন্তর্জাতিক সমাজসেবী সংগঠন অক্সফাম ইন্টারন্যাশনাল (Oxfam International) জানিয়েছে, ভারতের দশটি ধনী পরিবার বা ব্যক্তি ৫ শতাংশ হারে ট্যাক্স দিলে বাচ্চাদের স্কুলে ফিরিয়ে আনার জন্য পুরো অর্থ পাওয়া যাবে।

সোমবার প্রকাশিত অক্সফামের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে ভারতে কোটিপতিদের অর্থ দিনে ২২০০ কোটি টাকা পর্যন্ত বেড়েছে গত বছর। দেশের ১ শতাংশ ধনীর সম্পদ বৃদ্ধি পেয়েছে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত। অন্যদিকে, দেশের অর্ধেক মানুষের সম্পদ বেড়েছে সেই তুলনায় মাত্র ৩ শতাংশ। পাশাপাশি সমীক্ষায় আরও জানা গিয়েছে, বিশ্বের ধনীদের সম্পদ গতবছর বেড়েছে ১২ শতাংশ। ডলারের হিসেবে তা ২৫ লক্ষ বিলিয়ন (Billion)। আর দুনিয়ার গরিবদের সম্পদের পরিমাণ কমেছে ১১ শতাংশ।

সাপ্লিমেন্টারি ওই প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে, শুধুমাত্র একজন কোটিপতি গৌতম আদানির উপর ২০১৭-২০২১-এর মধ্যে অনাদায়ী লাভের উপর এককালীন কর ১.৭৯ লক্ষ কোটি টাকা তুলতে পারে, যা এক বছরের জন্য ৫০ লক্ষেরও বেশি ভারতীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়োগ করার জন্য যথেষ্ট। সার্ভাইভাল অফ দ্য রিচেস্ট শিরোনামের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে যে ভারতের কোটিপতিদের থেকে যদি তাঁদের সম্পূর্ণ সম্পদের উপর একবার ২ শতাংশ করে কর আদায় করা হয়, তবে তা  আগামী তিন বছরের জন্য দেশে অপুষ্টির পুষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় ৪০  হাজার ৪২৩ কোটি টাকা সংগ্রহ করতে পারবে। দেশের ১০ জন ধনকুবেরের উপর ৫ শতাংশের এককালীন কর (১.৩৭ লক্ষ কোটি টাকা) ২০২২-২৩ আর্থিক বছরের জন্য  স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক (৮৬,২০০ কোটি টাকা) এবং আয়ুশ মন্ত্রকের তহবিলের চেয়ে ১.৫ গুণ বেশি অর্থাৎ প্রায় ৩,০৫০ কোটি টাকা। লিঙ্গ বৈষম্যের বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, একজন পুরুষ শ্রমিকের থেকে ১ টাকার তুলনায় মহিলা শ্রমিকরা মাত্র ৬৩ পয়সা উপার্জন করেছেন। তফসিলি জাতি এবং গ্রামীণ কর্মীদের জন্য, পার্থক্যটি আরও বেশি। তফসিলি জাতির সুবিধাপ্রাপ্ত সামাজিক গোষ্ঠীগুলির পুরুষরা যা অর্জন করেছিল তার ৫৫ শতাংশ উপার্জন করেছিল এবং গ্রামীণ মহিলারা ২০১৮-২০১৯ এর মধ্যে শহুরে উপার্জনের অর্ধেক অর্জন করেছিল।

প্রতিবেদন থেকে পরিষ্কার, শীর্ষ ১০০ জন ভারতীয় ধনকুবেরের উপর ২.৫ শতাংশ ট্যাক্স, বা শীর্ষ ১০ ভারতীয় ধনকুবেরের উপর ৫ শতাংশ ট্যাক্স আদায় করা হলেই শিশুদের স্কুলে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় টাকার পুরোটাই সংগ্রহ করা সম্ভব৷ অন্যদিকে, জিএসটি বাবদ মোট ১৪.৮৩ লক্ষ কোটি টাকার প্রায় ৬৪ শতাংশ ২০২১-২২ সালে জনসংখ্যার নীচের ৫০ শতাংশ থেকে এসেছে। আর জিএসটির মাত্র ৩ শতাংশ শীর্ষ ১০ শতাংশ মানুষদের থেকেই এসেছে।

 

 

Previous articleশতরান করেও খুশি নন, কোহলিকে বললেন শুভমন, ভিডিও পোস্ট বিসিসিআইয়ের
Next articleআরামবাগে শীতবস্ত্র দিলেন সাংসদ অপরুপা পোদ্দার