ভাঙড়ের আঁচ ধর্মতলায়! ISF-এর অবরোধ হঠাতে গিয়ে আক্রা*ন্ত পুলিশ, গ্রেফ*তার নওশাদ সহ ১৭

আইএসএফের উপরে হাম*লা করা হয়েছে বলে সকালেই ঘটনার নিন্দা করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই সঙ্গে আইএসএফ-কে প্রচ্ছন্ন জোটবার্তাও দিয়েছেন তিনি। শুভেন্দু বলেন, নওশাদ সিদ্দিকি ভালো মানুষ)

ভাঙড়ে আইএসএফের (ISF) অসভ্যতামির জের, যার আঁচ লাগল শহর কলকাতাতেও (Kolkata)। আইএসএফ-এর বিক্ষোভ, অবরোধের জেরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি ধর্মতলা (Dharmatala) চত্বরে। ঘটনার জেরে স্তব্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। ভাঙড়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলে শনিবার বিকেলে ধর্মতলা চত্বরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে আইএসএফ কর্মী সমর্থকরা। বিক্ষোভের জেরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে রাস্তার একাধিক গাড়ি। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিক্ষোভকারীদের বাধা দিতে গেলে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। এরপরই আইএসএফ কর্মী-সমর্থকরা পুলিশের উপর চড়াও হয়। বাঁশ, লাঠি নিয়ে পুলিশকে তাড়া করার অভিযোগ ওঠে আইএসএফ কর্মীদের বিরুদ্ধে। এদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে উন্মত্ত জনতাকে থামাতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। পুলিশ-আইএসএফ কর্মীদের হাতাহাতিতে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় ধর্মতলা চত্বর। পুলিশের একাধিক বুথ লক্ষ্য করে ইট ছোড়ার অভিযোগ ওঠে। এরপরই পুলিশের গাড়িতে তোলা হয় ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকে (Naushad Siddiqui)। পরবর্তীকালে তাঁকে গ্রেফতার (Arrest) করা হয় বলে খবর।

শনিবার বিকেলে ধর্মতলার রাস্তায় অবস্থান বিক্ষোভে বসে পড়ে আইএসএফ কর্মী-সমর্থকরা। পুলিশ তাদের সরিয়ে দিতে গেলেই শুরু হয় খণ্ডযুদ্ধ। পাল্টা পুলিশকে লক্ষ্য করে চটি, পাথর ছোড়া হয়। সংঘর্ষের জেরে দু’পক্ষেরই একাধিক জন আহত হয়েছেন। আক্রমণের হাত থেকে রেহাই পাননি সংবাদমাধ্যমের (Journalists) কর্মীরাও। পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল (CP Vineet Goyal) আহত পুলিশ কর্মীদের দেখতে হাসপাতালে যান। এরপরই তিনি সাংবাদিকদের জানান, এদিন এক পুলিশ কর্মীকে আইএসএফ কর্মীরা মারধর করতে শুরু করলে অন্যান্য পুলিশ কর্মীরা তাঁকে বাঁচাতে এগিয়ে যান। তখনই অন্যান্য পুলিশ কর্মীদের বেধড়ক মারধর করা হয়। আর যে কারণে বাধ্য হয়েই কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুঁড়তে বাধ্য হয় পুলিশ। ইতিমধ্যে ঘটনায় মোট ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনায় উচ্চপদস্থ আধিকারিক সহ কমপক্ষে ১৯ জন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন।

এদিন আইএসএফের উপরে হামলা প্রসঙ্গে সকালেই ঘটনার নিন্দা করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। সেই সঙ্গে আইএসএফ-কে প্রচ্ছন্ন জোটবার্তাও দিয়েছেন তিনি। শুভেন্দু বলেন, নওশাদ সিদ্দিকি ভালো মানুষ। তাঁর সঙ্গে আমার মতপার্থক্য থাকতেই পারে। তবে, বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাঁদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে তৃণমূলকে হঠাতে চান নাকি বিজেপির বিরোধিতা করতে চান।

আর শুভেন্দুর এমন মন্তব্যের পরই রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন (Shantanu Sen) শুভেন্দুর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ভারতীয় জনতা পার্টি কতটা হতাশাগ্রস্ত তা আবারও প্রকাশ্যে এল। সামগ্রিকভাবে ভারতীয় জনতা পার্টি বাংলায় ঠিক কতটা দিশাহীন হয়ে পড়েছে তা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। এর আগেও প্রকাশ্যে বামপন্থীদের একজোট হওয়ার বার্তা দিয়েছে গেরুয়া শিবিরকে। সমস্ত নীতি,  আদর্শ জলাঞ্জলি দিয়ে আইএসএফকেও হাত ধরার বার্তা দিচ্ছে। ফলে আগামীদিনে কাদের হাত ধরে বিজেপি নির্বাচনী বৈতরণী পার করবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

 

 

Previous articleসংগঠনের বেহাল দশা বিজেপির, পঞ্চায়েতে কেন্দ্রীয় বাহিনী চায় শুভেন্দু-সুকান্তরা
Next articleযোশীমঠের ঘটনার পর আরও সতর্ক হতে হবে, বললেন মহম্মদ সেলিম