শি*শু সুরক্ষায় ঐতিহাসিক রায় কলকাতা  হাইকোর্টের!

কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ,নিম্নাঙ্গের অন্তর্বাস খুলে জোর করে কোনও নাবালিকাকে শোয়ানোও ধর্ষণের সমতুল্য

কলকাতা হাই কোর্টের বেনজির রায়! প্রায় পনেরো বছর আগের নিম্ন আদালতের একটি মামলার রায় পুনর্বিবেচনার শুনানিতে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ,নিম্নাঙ্গের অন্তর্বাস খুলে জোর করে কোনও নাবালিকাকে শোয়ানোও ধর্ষণের সমতুল্য। এ ক্ষেত্রে ‘শারীরিক’ ভাবে নাবালিকাকে ধর্ষণ করা না হলেও তা ওই অপরাধের শামিল বলে মনে করে আদালত।

বছর পনেরো আগে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট জেলা ও দায়রা আদালতের রায়ে নাবালিকার বিরুদ্ধে যৌন অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন জনৈক রবি রায়। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, ২০০৭ সালের ৭ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ এক নাবালিকাকে আইসক্রিমের লোভ দেখিয়ে বাড়ির পাশে একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে যান রবি। এর পর নাবালিকাকে নিম্নাঙ্গের অন্তর্বাস খোলার কথা বলেন। তাতে রাজি না হওয়ায় তিনি নিজেই সেটি খুলে তাকে জোর করে শুইয়ে দেন। ভয় পেয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করে ওই নাবালিকা। চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে জড়ো হন।বেধড়ক মারধরের পর রবিকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।। ওই মামলায় ২০০৮ সালের নভেম্বরে রবির ৬ মাসের সশ্রম কারাবাস-সহ সাড়ে ৫ বছরের জেল হয়েছিল। পাশাপাশি, ৩ হাজার টাকা জরিমানা হয়েছিল।

নিম্ন আদালতের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাই কোর্টে আবেদন করেন রবি। তাঁকে মারধরের সময় ‘অপরাধ’ স্বীকার করলেও হাই কোর্টের কাছে আবেদনে রবি দাবি করেন, অপরাধের জন্য নয়  নাবালিকাকে আদর করছিলেন তিনি। সে জন্যই তাকে শুইয়ে দিয়েছিলেন। রবিবার ওই আবেদনের শুনানি হয়।৩ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, যৌন ইচ্ছা মেটানো ছাড়া নাবালিকাকে আইসক্রিম দেওয়ার কোনও কারণ ছিল না আবেদনকারীর।ইচ্ছাকৃতভাবে নির্যাতিতাকে একটি আইসক্রিম দিয়ে প্রলোভন দেখান তিনি এবং তার পর তাকে নির্জন স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। এর পর নির্যাতিতাকে নিম্নাঙ্গের অন্তর্বাস খোলার কথা বলেন। তাতে রাজি না হওয়ায় নাবালিকার অন্তর্বাস খুলে ফেলেন। এটি ধর্ষণের মতো অপরাধের চেষ্টা করার সমতুল্য। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় এই অপরাধ ধর্ষণের মতো যৌন অত্যাচারের শামিল। যদিও ওই নাবালিকার মেডিক্যাল পরীক্ষায় শারীরিক ভাবে আঘাতের চিহ্ন বা যৌন অত্যাচারের প্রমাণ মেলেনি।

 

Previous articleতৃণমূলই একমাত্র বিকল্প, বাংলার মডেলেই ত্রিপুরায় উন্নয়ন হবে: পরিবর্তনের ডাক অভিষেকের
Next articleআদানি ইস্যুতে দিল্লির রাজপথে তৃণমূল কংগ্রেস, এলআইসি অফিসের সামনে বিক্ষোভ