Friday, November 28, 2025

বিধানসভা ভোটেও র*ক্তাক্ত ত্রিপুরা: কমিশনকে “ঠুঁটো জগন্নাথ” বললো তৃণমূল

Date:

Share post:

অশা*ন্তি ও সন্ত্রা*সের বাতাবরণের মধ্যেই শেষ হল হাইভোল্টেজ ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচন (Tripura Assembly election)। ৬০ আসন বিশিষ্ট ত্রিপুরায় সকাল ৭টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ভোট নেওয়া হয় বিকেল চারটে পর্যন্ত। তবে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া ধীর গতিতে চলায় নিধারিত সময়ের পরেও বুথে বুথে লম্বা লাইন ছিল। বিকেল ৪টে পর্যন্ত ভোটদানের হার ৮১ শতাংশ। তবে সার্বিকভাবে এই হার ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ হবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

এদিকে গতকাল রাত থেকেই শাসক দল বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে বোমাবাজি, হুমকি, অশান্তি পাকানোর অভিযোগ এনেছে তৃণমূল সহ বিরোধীরা। আজ, ভোটের দিনও বিভিন্ন জায়গা থেকে অশান্তির খবর এসেছে।

দীর্ঘ ২৫ বছরের বাম অপশাসন থেকে মুক্ত করতে ২০১৮ সালে রাজ্যে পরিবর্তন আনে ত্রিপুরাবাসী। অনেক প্রত্যাশা, ভরসা, বিশ্বাস থেকে মানুষ অত্যাচারী সিপিএমের হাত থেকে ক্ষমতা তুলে দিয়েছিল বিজেপির হাতে। কিন্তু গত পাঁচবছরে মানুষ বুঝেছেন ত্রিপুরায় খাল কেটে কুমির এনেছেন তাঁরা। রাজ্যকে রসাতলে পাঠিয়েছে ডাবল ইঞ্জিন বিজেপি। অপশাসনে বামেদেরকেও টেক্কা দিয়েছে গেরুয়া শিবির। গত পাঁচ বছরে শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য, খাদ্য থেকে কর্মসংস্থানে ত্রিপুরাকে আরও পিছিয়ে দিয়েছে বিজেপি। পরিবর্তে গণতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত হয়েছে, ত্রিপুরা বিজেপির আমলে জঙ্গল রাজ্যে পরিণত হয়েছে।

শান্তিপ্রিয় ত্রিপুরায় অশান্তির বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। স্থানীয় পৌরনিগমের নির্বাচন হোক নগর পঞ্চায়েত, ভোটের নামে প্রহসন হয়েছে ত্রিপুরা জুড়ে। তৃণমূল সহ বিরোধীদের রক্ত ঝরেছে। অবাধে ছাপ্পা, রিগিং থেকে ভোট লুট থেকে করেছে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। বিরোধীদের নামে দেওয়া হয়েছে ভুয়ো মামলা। মানুষকে ভয় দেখিয়ে বুথে আসতে বাধা দেওয়া হয়েছে। বাদ যাননি পুলিশ কর্মীরাও। আক্রান্ত হয়েছে মহিলা থানা।

সেই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে আজ ত্রিপুরায় ছিল হাইভোল্টেজ বিধানসভা ভোট। ভোটারদের মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ততা লক্ষ্য করা গেলেও, গদি বাঁচাতে সন্ত্রাসকেই হাতিয়ার করে রাজ্যের শাসক দল বিজেপি। কেন্দ্রীয় বাহিনী ও ভিন রাজ্য থেকে পুলিশ এনেও বিজেপির সন্ত্রাস রুখতে ব্যর্থ নির্বাচন কমিশন। বিধানসভা ভোটে ফের রক্তাক্ত ত্রিপুরা। কমিশনে জমা পড়েছে ভুরি ভুরি অভিযোগ।

ভোটদান পর্ব শেষ হওয়ার পর ত্রিপুরা প্রদেশ তৃণমূলের ইনচার্জ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা মনে করেছিলাম যে জাতীয় নির্বাচন কমিশন হয়তো অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণের ব্যবস্থা করবে। কিন্ত কিছু কিছু জায়গায় যেভাবে বিজেপির সন্ত্রাস চলেছে, সেখানে নির্বাচন কমিশনকে ঠুটো জগন্নাথ বলতে বাধ্য হচ্ছি।”

গেরুয়া সন্ত্রাসের কথা তুলে ধরে রাজীব বলেন, “ভোটের আগের দিন রাত থেকেই মানুষ যাতে বাড়ি থেকে বের হতে না পারে সেই কারণে ব্যাপক সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি করেছিল বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। বিশালগড়ের মতো জায়গায় রাতভর ব্যাপক বোমাবাজি হয়েছে। কমলপুরের মতো বিধানসভা কেন্দ্রে রাত থেকেই হুমকি দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের এজেন্টদের। যাতে তাঁরা বুথে যেতে না পারেন। কদমতলা কুর্তিতে তৃণমূলের এজেন্টের বাবাকে অপহরণ করা হয়েছে। ধনপুর, তেলিয়ামুড়া, খয়েরপুরের মতো অনেক জায়গায় ত্রিপুরার বাইরে থেকে লোক এনেছিল বিজেপি। যারা মানুষকে ভয় দেখিয়েছে।”

রাজীবের সংযোজন, “তবে অনেক জায়গাতেই মানুষের স্বতঃস্ফূর্ততা চোখে পড়েছে। শাসকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে মানুষ লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়েছে, এটা দেখে ভালো লেগেছে। তাই নির্বাচন কমিশন ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে না থাকলে, আরেকটু সক্রিয় ও সদর্থক ভূমিকা নিতে পারলে
সামগ্রিকভাবে ভালো ভোট করা যেত। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে কার্যত বসিয়ে রাখা হয়েছিল।”

তৃণমূল সম্পর্কে বলতে গিয়ে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “নির্বাচনে জয় পরাজয় মানুষ ঠিক করবে। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস ত্রিপুরার উন্নয়নের স্বার্থে, পরিবর্তনের স্বার্থে ত্রিপুরাবাসীর পাশে ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে, যতদিন না পর্যন্ত বাংলার মতো ত্রিপুরার মানুষ উন্নয়ন পায়”।

 

spot_img

Related articles

ঘরের মাঠেই শুরু হরমনপ্রীতদের টি২০ বিশ্বকাপের প্রস্তুতি, প্রতিপক্ষ কারা?

বিশ্বকাপ জয়ের রেশ কাটিয়ে মাঠে  নামছে ভারতীয় মহিলা(India women) দল। একদিনের বিশ্বকাপ জয়ে পর এবার মিশন টি২০-র খেতাব।...

নিজেদের সঙ্গে মিলিয়ে মেয়ের নাম রাখলেন সিদ্ধার্থ-কিয়ারা, শেয়ার করলেন প্রথম ঝলক

চলতি বছরই বাবা-মা হয়েছেন সিদ্ধার্থ মালহোত্রা (Siddharth Malhotra) ও কিয়ারা আডবানি (Kiara Advani)। মেয়ের জন্মের পর থেকেই তাকে...

ভারী বর্ষণের জেরে বন্যা-ধসে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কা, লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা 

প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কায় (Rain disaster in Srilanka) মৃত্যু মিছিল। একটানা ভারী বৃষ্টিতে দেশ জুড়ে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি...

আজ সোনা রুপোর দাম কত, জেনে নিন এক ঝলকে

২৮ নভেম্বর (শুক্রবার) ২০২৫ ১ গ্রাম ১০ গ্রাম পাকা সোনার বাট ১২৬৩০ ₹ ১২৬৩০০ ₹ খুচরো পাকা সোনা ১২৬৯৫...