বঙ্গভঙ্গ হবে না, বনধের নামে আইন ভাঙলে রেয়াত নয়: কড়া হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর

তিনি বনধের সমর্থন করেন না। বাংলাকেও ভাঙতে দেবেন না। বনধের নামে কেউ আইন হাতে নিলে রেয়াত করা হবে না। মঙ্গলবার, শিলিগুড়ির (Siliguri) কাঞ্চনজঞ্ঘা স্টেডিয়াম থেকে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মাধ্যমিক পরীক্ষার শুরু দিনইপাহাড়ে বনধের ডাক দিয়েছেন বিনয় তামাং, অজয় এডওয়ার্ড-সহ অনেকে। এদিন শিলিগুড়ির সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠান থেকে কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সাফ জানিয়ে দিলেন, বনধ সংস্কৃতি বাংলা থেকে বিদায় করেছেন তিনি। আর বঙ্গভঙ্গ কোনও মতেই সমর্থন করবেন না বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।

২৩ তারিখ থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু। আর ওই দিন থেকে পাহাড়ে বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিধানসভা (Assembly) অধিবেশনে বঙ্গভঙ্গ বিরোধী প্রস্তাবের বিরোধিতা করায় পাহাড়ে আন্দোলনের দিয়েছে জিটিএর সদস্য অজয় এডওয়ার্ড, বিনয় তামাংরা। ২৪ ঘণ্টা এই অনশনের পরে ২৩ ফেব্রুয়ারি দার্জিলিংয়ে ১২ ঘণ্টা বনধের ডাক দিয়েছেন তাঁরা। এই নিয়ে এদিন কড়া হুঁশিয়ারি দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি স্পষ্ট বলেন, আন্দোলন করার স্বাধীনতা সবার আছে। কিন্তু বনধ বরদাস্ত করা হবে না। মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানান, তাঁরা ক্ষমতায় আসার পরে বাংলা থেকে ‘বনধ সংস্কৃতি’ বিদায় নিয়েছে। বনধ করাতে আইন হাতে নিলে, কাউকে রেয়াত করা হবে না- কড়া হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর। মাধ্যমিক পরীক্ষার মধ্যে পরীক্ষার্থীদের কোনও রকম অসুবিধা বরদাস্ত করা হবে না বলেও জানান মমতা। বলেন, “বনধ হতে দেব না। শিল্প হবে, পর্যটন হবে, উন্নয়ন বাড়বে, বাস চলবে, গাড়ি চলবে সবকিছু চলবে। তবেই তো বাংলা এগিয়ে যাবে। কেউ যদি মনে করে আমার পলিটিকাল প্রোগ্রাম, পাঁচ বছরে একবার বনধ করে দেখাই আমার ক্ষমতা, তবে পরিষ্কার বলে যাচ্ছি কোনও বনধ, টনধ হবে না। বনধ করলে আমরা বনধ সমর্থন করব না। কেউ রাস্তায় বসে পড়ল, আর পড়ুয়ারা পরীক্ষা দিতে পারল না তার দায় কে নেবে। আমি শুনেছি পাহাড়ে মাঝেমধ্যে কেউ কেউ জাগে, উন্নয়নের জন্য জাগে না। কী করে বন্ধ করা যায়, কী করে অশান্তি করা যায়! আমি পরিষ্কার প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দেশ দিচ্ছি, ২৩ তারিখ পরীক্ষা শুরু হচ্ছে যদি কেউ আন্দোলন করতে চান, আইন মেনে চলতে হবে। আইন মেনে চলতে হবে। আন্দোলনের অধিকার সবার আছে। কেউ যদি আইন নিজের হাতে তুলে নিতে চান তবে সরকার রেয়াত করবে না। তা সে যেই হোক। পরিষ্কার বলে দিচ্ছি বনধ সমর্থন করি না। এটা আমাদের পলিসি। গত ১১ বছরে এটা করে দেখিয়ে দিয়েছি।“

একই সঙ্গে ফের বঙ্গভঙ্গের ষড়যন্ত্রের বিরোধিতায় সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, বঙ্গভঙ্গ হবে না। কোনও ভাবেই এই দাবি সমর্থন করা হবে না বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দেন মমতা। কটাক্ষ করে তিনি বলেন, মাঝে মাঝে উস্কানি দিতে কেউ কেউ পাহাড়ে অশান্তির চেষ্টা করে। বিধানসভায় বঙ্গভঙ্গ বিরোধী প্রস্তাব পাশ হওয়া নিয়েই সরব পাহাড়ের রাজনৈতিক দলগুলি। অভিযোগ, তাঁদের ইন্ধন দিচ্ছে বিজেপি। বঙ্গভঙ্গ নিয়ে আন্দোলনকারীদের মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট বার্তা দেন, ”পাহাড়ে মাঝেমধ্যে কেউ কেউ জাগে। উন্নয়নের জন্য জাগে না। বন্ধের জন্য় জাগে। কোনও বঙ্গভঙ্গ হবে না।”

পাহাড়ের বঞ্চনা নিয়ে ‘কুৎসা’ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর প্রশ্ন, “কী হয়নি পাহাড়ে? কোন উন্নয়ন বাকি আছে? কেউ কেউ বলেন, পাহাড়ে কিচ্ছু হয়নি। সবটাই কুৎসা।” মমতার বার্তা, “দক্ষিণবঙ্গ আর উত্তরবঙ্গ আলাদা নয়, একটাই বঙ্গ, পশ্চিমবঙ্গ।”

Previous articleপরের বিশ্বকাপে কি খেলবেন মেসি? কী বললেন আর্জেন্তাইন দলের কোচ?
Next articleAssam: স্বামী-শাশুড়িকে খু*নের পর বাড়িতে সত্যনারায়ণ পুজোও করে বন্দনা