আলিপুর জেলে মুখোমুখি অর্পিতা-শতরূপা, কথা ফাঁস!

রবি ঠাকুর বোধহয় সব পরিস্থতির উপরেই কিছু না কিছু লিখে গিয়েছেন। কতদিন আগে লেখা, “সে কথা শুনিবে না কেহ আর, নিভৃত নির্জন চারি ধার। দুজনে মুখোমুখি গভীর দুখে দুখী”

0
1

আলিপুর মহিলা সংশোধনাগার। বন্দিদের বাইরে থাকার সময় নির্দিষ্ট। তার মধ্যেই একে অপরকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা। কিন্তু তাও মুখোমুখি সদ্য জেল হেফাজত প্রাপ্ত মানিক ভট্টাচার্যের (Manik Bhattacharchya) স্ত্রী শতরূপা আর গত বছর থেকে বন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chattopadhyay) ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায় (Arpita Mukharjee)। তারপর? কী কথা হল দুজনের! জেল সূত্রে খবর, একে অপরকে প্রথমে এড়িয়েই যেতে চাইছিলেন। কিন্তু কয়েদিদের বাইরে থাকার সময় সদ্য আবাসিক শতরূপা ভট্টাচার্য (Shatarupa Bhattacharya) কার্যত একা। এই পরিস্থিতিতে অন্তত অর্পিতার নামটা তাঁরা শোনা। কারণ, তাঁর দাবি আগে তিনি অর্পিতাকে চিনতেন না।

বুধবার, আত্মসমর্পণের পর আদালতেই গ্রেফতার করা হয় মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রী এবং পুত্রকে। ব্যাঙ্কশাল আদালত দুজনকেই ৬ মার্চ পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। আলিপুর মহিলা সংশোধানাগারে পাঠানো হয় মানিকের স্ত্রী শতরূপাকে। আর সেখানেই ২০২২-এর ২৩ জুলাইয়ে গ্রেফতার হওয়ার কিছুদিন পর থেকে রয়েছেন পার্থ-ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। আগেই তিনি অভিযোগ করেছিলেন, তিনি ফেঁসে গিয়েছেন। বলেছিলেন ‘‘বীভৎসভাবে ফেঁসে গেলাম। আমাকে শেষ করে ফাঁসিয়ে দিল।’’ সূত্রের খবর, সেলের মধ্যে মাঝেমধ্যেই কান্নাকাটি করেন অর্পিতা। শতরূপার সঙ্গে দেখা হওয়ার পরেও ফের নিজের দুঃখের ঝাঁপি খুলে বসেন পার্থ-বান্ধবী। তিনি বলেন, টাকার পাহাড় সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। অন্যের নির্দেশেই তাঁর বাড়িতে গিয়ে নাকি টাকা রেখে আসা হত। এই বিষয়ে বিন্দুবিসর্গ জানা নেই বলে দাবি অর্পিতার। উল্টে অসুস্থ শরীরে জেলে থাকতে তাঁর চরম অসুবিধা হচ্ছে বলে জানান তিনি। চোখ ছলছল।

অর্পিতার হাল দেখে তখন ঘাম ছুটছে মানিক-পত্নীর। অর্পিতার বাড়ি থেকে মিলেছে টাকার পাহাড়। আর মৃত ব্যক্তির সঙ্গে জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট দেখিয়ে কেওয়াইসি পর্যন্ত জমা দিয়েছেন শতরূপা- দাবি ইডির। এবার তাঁকে কতদিন গারদের ভিতরে থাকতে হবে! ভেবেই আত্মরাম খাঁচা ছাড়া হওয়ার জোগাড় মিসেস ভট্টাচার্যের। কারণ, ইডি-র অভিযোগ, স্ত্রী-পুত্রকে সঙ্গে নিয়ে কার্যত ত্রিভুজ আকারে নিয়োগ-দুর্নীতি চালিয়ে গিয়েছেন মানিক ভট্টাচার্য। এখন সপরিবারে শ্রীঘরে ভট্টাচার্যরা। শতরূপাও না কি সমব্যথীর কাছে দুঃখ করেছেন এই সব নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে দূরদূরান্ত পর্যন্ত তাঁর সম্পর্ক নেই। তিনি শুধু স্বামীকে অন্ধের মতো বিশ্বাস করে সইসাবুদ করে দিয়েছেন। এখন বুঝতে পারছেন, তিনিও ফেঁসে গিয়েছেন।

রবি ঠাকুর বোধহয় সব পরিস্থতির উপরেই কিছু না কিছু লিখে গিয়েছেন। কতদিন আগে লেখা,
“সে কথা শুনিবে না কেহ আর,
নিভৃত নির্জন চারি ধার।
দুজনে মুখোমুখি গভীর দুখে দুখী”