শুভাপ্রসন্নর আমন্ত্রণও রক্ষা করবেন, শিল্পীর বিরুদ্ধে “খালচুরি”র অভিযোগও শুনবেন কুণাল

কটাক্ষ পাল্টা কটাক্ষে বিতর্ক আরও গাঢ় হয়। বেড়ে যায় কুণাল-শুভাপ্রসন্ন তরজা। এরই মাঝে অতীতে তাঁর কিছু "অবৈধ'' ও "বেআইনি" কর্মকাণ্ড নিয়ে জোরচর্চা শুরু হয় বিভিন্ন মহলে। বেশ বিপাকে পড়ে যান শুভাপ্রসন্ন।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের এক অনুষ্ঠানে জলকে ”পানি” বা আমন্ত্রণকে ”দাওয়াত” বলা নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্ন ভট্টাচার্য (Subhaprasanna Bhattacharya)। তাঁর দাবি, এই শব্দগুলি বাংলা ভাষার অন্তর্ভুক্ত হতে পারে না। ওই মঞ্চে দাঁড়িয়েই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) শুভাপ্রসন্নর এমন মন্তব্যের বিরোধিতা করেন। কিন্তু নিজ অবস্থানে অনড় থেকে শুভাপ্রসন্ন বিতর্ক আরও বাড়িয়ে দেন। তাঁর মনোভাব ছিল, মুখ্যমন্ত্রী নয়, উনিই ঠিক। মুখ্যমন্ত্রী রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা থেকেই তাঁর বিরোধিতা করেন বলে দাবি করেন শুভাপ্রসন্ন। এরপরই মাঠে নামেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। তিনি শিল্পীকে কটাক্ষ করেন।

কটাক্ষ পাল্টা কটাক্ষে বিতর্ক আরও গাঢ় হয়। বেড়ে যায় কুণাল-শুভাপ্রসন্ন তরজা। এরই মাঝে অতীতে তাঁর কিছু “অবৈধ” ও “বেআইনি” কর্মকাণ্ড নিয়ে জোরচর্চা শুরু হয় বিভিন্ন মহলে। বেশ বিপাকে পড়ে যান শুভাপ্রসন্ন। তাই সম্ভবত কিছুটা নরম হয়েই কুণাল ঘোষকে শুক্রবার সকাল সকাল ফোন করেন শুভাপ্রসন্ন। কুণালকে তাঁর অট্টালিকা সম সংস্থা আর্টস একর দেখার আমন্ত্রণ জানান চিত্রশিল্পী। কুণাল তাঁর আমন্ত্রণে সাড়া দেন, তবে একইসঙ্গে শুভাপ্রসন্ন ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের খালচুরির অভিযোগ তিনি খতিয়ে দেখবেন বলেও জানান কুণাল।

কুণাল ঘোষের কথায়, “শুভাপ্রসন্ন নিমন্ত্রণ করেছেন। আমি নিশ্চিতভাবে সময় করে ওঁর আর্টস একর দেখতে যাব৷ তবে ওই এলাকা থেকে অভিযোগ এসেছে উনি এলাকায় স্থানীয় নিকাশির সমস্যা করেছেন। এলাকার মানুষ আমাকে জানিয়েছেন৷ আমি দিদির দূত হিসাবে যাব।”

কুণালের দাবি, ওই এলাকার প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ পরিবার তাঁর কাছে নিকাশি সংক্রান্ত সমস্যার কথা জানিয়েছেন৷ এবং প্রভাবশালী শিল্পী হওয়ায় শুভাপ্রসন্ন অবৈধভাবে একটি খালকে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পত্তির সীমানার মধ্যে নিয়ে আসেন। যার ফলে এলাকায় নিকাশির ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে। সেটাও দেখতে যাবেন কুণাল ঘোষ। শুধু তাই নয়, অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিনি দলকেও বিষয়টি রিপোর্ট দিয়ে জানাবেন বলে জানিয়েছেন কুণাল। তাঁর দাবি, এলাকার নিকাশির খাল শুভাপ্রসন্নের এলাকায় ঢুকে গেছে। প্রয়োজনে প্রশাসনকে বলবেন জনস্বার্থে শুভাপ্রসন্নর সংস্থার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অর্থাৎ, কুণাল ঘোষ শুভাপ্রসন্নর আমন্ত্রণও রক্ষা করবেন, আবার শিল্পীর বিরুদ্ধে ওঠা “খালচুরি”র অভিযোগও শুনবেন স্থানীয়দের কাছে।

উল্লেখ্য, এদিন বীথি চট্টোপাধ্যাইয়ের লেখা “জলপানি” কবিতার প্রসঙ্গ টেনে আনেন কুণাল ঘোষ। সেটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ারও করেন তৃণমূল নেতা। তাঁর কথায়, ”বীথি চট্টোপাধ্যায় নিজের জলপানি কবিতায় লিখেছেন, যেটা জল, সেটাই পানি। কী সুন্দর কবিতা। কী সুন্দর ভাবনা। লেখক, শিল্পী, সহিত্যিকদের তো এমন ভাবনাই হওয়া উচিত।”

 

 

Previous articleপঞ্চায়েতের আগে রাজ্যে শক্তি বাড়াচ্ছে ইডি, খুলছে নতুন অফিস
Next articleগ্রামোফোনে বাজল রবি কণ্ঠ, ৭৮ আরপিএম-এর নস্টালজিয়ায় রামমোহন লাইব্রেরির সভাগৃহ !