নিয়োগ দুর্নীতিতে সরাসরি যুক্ত শুভেন্দু, তালিকা দেখিয়ে গ্রেফতারের দাবি কুণালের

শুভেন্দু অধিকারী সরাসরি নিয়োগ দুর্নীতিতে যুক্ত। শুভেন্দুকে হেফাজতে নিয়ে কেন তদন্ত হবে না ?

কাচের ঘরে বসে ঢিল ছুড়বেন না। বেশি দোষে দোষী বিরোধীরা।নিয়োগ দুর্নীতিতে কেন গ্রেফতার করা হবে না শুভেন্দু অধিকারীকে? সরাসরি প্রশ্ন তুললেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ ।

রবিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তাঁর স্পষ্ট কথা, একটা লাগাতার নেতিবাচক প্রচার চলছে। দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট বলে দিয়েছেন দুর্নীতির ক্ষেত্রে ‘জিরো টলারেন্স’।
কুণাল বলেন, গতকাল আদালতের নির্দেশে গ্রুপ-সির যে কজনের চাকরি চলে গিয়েছে তাদের মধ্যে ১৫০ জনকে শুভেন্দু অধিকারী চাকরি দিয়েছিলেন। তিনি অভিযোগ করেন , ১৫০ জনের মধ্যে শনিবার আদালতের রায়ে শুভেন্দুর তালিকাভুক্ত ৫৫ জনের চাকরি চলে গিয়েছে। এটা থেকে একটা জিনিস প্রমাণ হয় , যে শুভেন্দু অধিকারী নিয়োগ প্রক্রিয়ার দুর্নীতিতে সমানভাবে শামিল ছিলেন।
পর্ষদের তালিকা হাতে নিয়ে কুণাল অভিযোগ করেন , কাঁথি-পটাশপুর- ভগবানপুর বিভিন্ন এলাকার প্রার্থীরা এই তালিকায় রয়েছেন। এদিন তিনি প্রশ্ন তোলেন , সুপারিশে পাওয়া ৫৫ জনের চাকরি এই তালিকায় আছে। মাত্র দেড়শ জনের মধ্যে যদি এতজন থাকেন তাহলে সামগ্রিকভাবে এই সংখ্যাটা কত?
তৃণমূলের পক্ষ থেকে কুণাল দাবি করেন, এই ৫৫ জন এবং শুভেন্দুকে মামলার আওতায় আনতে হবে এবং কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তদন্ত করে দেখুন এদের কে চাকরি দিল, কীভাবে চাকরি দিল। তিনি আরও বলেন, চাকরি বাতিলের তালিকায় ৫৬৯ নম্বরে আছে সঞ্জীব শুকুলের নাম। তিনি এদিন সরাসরি অভিযোগ করেন, এই সঞ্জীব শুকুল মেদিনীপুরে অত্যন্ত পরিচিত একটি নাম। শুভেন্দুর দক্ষিণ হস্ত। শুভেন্দুর সমস্ত কাজ কে করে, তা মেদিনীপুরের সবাই জানে । সেই ব্যক্তি কী করে চাকরি পেল ? কেন তদন্তের আওতায় এই ব্যক্তি ও শুভেন্দুকে আনা হবে না? শুভেন্দু অধিকারী সরাসরি নিয়োগ দুর্নীতিতে যুক্ত। শুভেন্দুকে হেফাজতে নিয়ে কেন তদন্ত হবে না ? যে ৫৫ জনকে শুভেন্দু চাকরি দিলেন, গতকালই যাদের চাকরি আদালতের নির্দেশে চলে গেল, কেনই বা তাদেরকে ডাকা হবে না?শুভেন্দু কীসের বিনিময়ে এদের চাকরি দিয়েছেন ? সঞ্জীব শুকুলেরও চাকরি চলে গেছে। কেন তাকে চাকরি দেওয়া হলো ? ফের প্রশ্ন তোলেন কুণাল। আমরা চাই সিবিআই এবং ইডি এই বিষয়ে তদন্ত করুক।
এদিন সিপিএমকেও তোপ দেগে কুণালের স্পষ্ট কথা, বাম জমানার একজন হোল টাইমারের নাম বলুন যার পরিবারের কেউ না কেউ সরকারি চাকরি করতেন না! এ প্রসঙ্গে তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ত্রিপুরায় বাম জমানায় ১০ হাজার ৩২৩ জন শিক্ষকের চাকরি চলে গেছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ওই হোল টাইমার কমরেডদের বাড়িতে কোন মেরিট লিস্টে এত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের চাকরি হয়েছিল? এদিন তিনি মনিষা মুখোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ স্মরণ করিয়ে দেন । বলেন , কীসের জন্য , কোন গোপন তথ্য জানার জন্য একজন মহিলা উধাও হয়ে গেলেন? এত তাড়াতাড়ি সব ভুলে যাবে মানুষ।
সিপিএম আদ্যন্ত অনিয়ম করে গেছে, বিজেপি দুর্নীতির অপর নাম । তৃণমূল কংগ্রেসের সময় শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। ২০১১ থেকে ভারতে যতগুলো নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে গোটা দেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। গ্রামে পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়ছে। মিড ডে মিল , সাইকেল, মিড ডে মিলে প্রোটিনযুক্ত খাবার দেওয়া এই সবেই তো দেশের মধ্যে এগিয়ে বাংলা।
উচ্চশিক্ষায় কেন্দ্র গবেষণার কাজ কার্যত বন্ধ করে দিচ্ছে । সেখানে পশ্চিমবঙ্গ সরকার মেধাবীদের পাশে দাঁড়াচ্ছে ।‌অনেক ভালো নিয়োগ হয়েছে, আবার কোথাও অন্যায় হয়েছে। যারা অন্যায় করেছেন তাদের পাশে কিন্তু দল দাঁড়াচ্ছে না । অন্যায় হলে শাস্তি পেতে হবে, ভুল হলে শুধরে নেওয়া হচ্ছে। তার মানে এই নয় যে নিজের ভূয়ো লোককে চাকরি দিয়ে আজকে সাধু সেজে ঘুরে বেড়াবে শুভেন্দু অধিকারী। এই সঞ্জীব শুকুলকে গ্রেফতার করে শুভেন্দুর মুখোমুখি বসিয়ে জেরার দাবি জানান কুণাল। বলেন, এই সঞ্জীব বিভিন্ন লোককে শুভেন্দুর হয়ে এক জোট করেছে। কিসের বিনিময়ে হল তা তদন্ত করুক কেন্দ্রীয় সংস্থা। না হলে মনে হবে সিবিআই- ইডি পক্ষপাতদুষ্ট । রাজনৈতিক অঙ্গুলিহেলনে কাজ করছে।

 

Previous articleতুমুল বিতর্ক, দিদিয়ের দেশঁ-কে মিথ‍‍্যেবাদী বললেন বেঞ্জিমা
Next articleবাংলায় টাটার ঢালাও ‘লগ্নি’! সিঙ্গুর ইস্যুতে বিজেপির ‘মিথ্যাচার’ ফাঁস করলেন শিল্পমন্ত্রী