বিজেপির “শাখা সংগঠন” ইডি-সিবিআইয়ের অতিসক্রিয়তা দেশজুড়ে এককাট্টা করছে বিরোধীদের

দেশজুড়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত ভাবে পক্ষপাতদুষ্ট ভূমিকায় অবতীর্ণ ইডি-সিবিআই। প্রতিদিন দুর্নীতির অভিযোগে একের পর এক বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে অতিসক্রিয় পদক্ষেপ নিচ্ছে এজেন্সিগুলি

বছর পেরোলেই লোকসভা নির্বাচন। বিজেপির অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা বলছে, ২০২৪-এর ভোটে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহদের। সেই জায়গা থেকে নতুন স্ট্রাটেজি নিয়েছে কেন্দ্রের শাসক দল। বিরোধীদের কোণঠাসা করতে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে অল-আউট মাঠে নামিয়েছে বিজেপি। দেশজুড়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত ভাবে পক্ষপাতদুষ্ট ভূমিকায় অবতীর্ণ ইডি-সিবিআই। প্রতিদিন দুর্নীতির অভিযোগে একের পর এক বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে অতিসক্রিয় পদক্ষেপ নিচ্ছে এজেন্সিগুলি।


আরও পড়ুন:পার্টি ফান্ডের ১১৬১ কোটি টাকার উৎস কী? নির্বাচন কমিশনের প্রশ্নের মুখে “চুপ” বিজেপি!

মোদি সরকার পরিচালিত ইডি-সিবিআইয়ের লাগাতার পক্ষপাতমূলক ভূমিকায় কার্যত দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে বিরোধীদের। আর তাই কেন্দ্র-বিরোধী কর্মসূচি স্থির করার ক্ষেত্রে প্রত্যেক বিরোধী দলের নিশানায় এজেন্সি। ইডি-সিবিআই যে বিজেপির শাখা সংগঠনের কাজ করছে, এই একটি বিষয়ে সকলে একমত! এজেন্সিকে কাজে লাগিয়ে দেশে কার্যত জরুরি অবস্থা জারি করেছে বিজেপি, এমনটাই অভিযোগ বিরোধীদের।

এজেন্সির পক্ষপাতমূলক আচরণে দেশজুড়ে বিরোধীদের জোট সমীকরণের জল্পনা বাড়িয়ে দিয়েছে। “শত্রুর শত্রু বন্ধু” ফর্মুলার বীজবপন হচ্ছে অবিজেপি দলগুলির মধ্যে। এই অভিঘাতে একদিকে যেমন সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমো অখিলেশ যাদব আগামী শুক্রবার কলকাতায় এসে দেখা করবেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে, তেমনই বিরোধীদের নিয়ে দিল্লিতে মহাবৈঠকের প্রস্তুতি নিচ্ছে আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল। সরগরম হয়ে উঠেছে জাতীয় রাজনীতি।

এদিকে ইডি-সিবিআইয়ের “পক্ষপাত অভিযানে”র বিরুদ্ধে বিরোধীদের জোটবদ্ধ হট্টগোলে যদি অধিবেশন উত্তাল হয়ে ওঠে, সংসদের স্বাভাবিক কাজকর্মই পণ্ড হবে। আর ঠিক সেই পরিকল্পনাই নিয়েছে কংগ্রেস, তৃণমূল, আপ, আরজেডি, বিআরএস। এজেন্সি ইস্যুতে দলের রণনীতি ঠিক করে দিতে সংসদ ভবনে বৈঠক ডেকেছেন সোনিয়া গান্ধী। থাকবেন রাহুলও। একই বার্তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পৌঁছে দিয়েছেন তাঁর দলের এমপিদের কাছেও। সূত্রের খবর, চলতি সপ্তাহের শেষে তিনি নিজেই দিল্লি যেতে পারেন।

১৭ মার্চ সমাজবাদী পার্টির কর্মসমিতির বৈঠকের জন্য কলকাতায় আসছেন অখিলেশ যাদব। জানা গিয়েছে, কর্মসূচি শেষে ওইদিনই বিকেল পাঁচটায় অখিলেশ যাবেন কালীঘাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে। কেন্দ্রের এজেন্সি অভিযানের বিরুদ্ধে বিরোধীরা ঐক্যে শান দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে আম আদমি পার্টিও। মণীশ সিশোদিয়া ইডি হেফাজতে। একই অবস্থা তৃণমূলের অনুব্রত মণ্ডলের। তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের কন্যাকে কবিতাকে শনিবার ৯ ঘণ্টা জেরা করেছে ইডি। অসুস্থ লালুপ্রসাদ যাদব, তেজস্বীর নাম জুড়ে যাওয়ায় তালিকা দীর্ঘতর হয়েছে। অথচ, বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ উঠলেও তা এজেন্সির নজরে পড়ছে না। ছাড় পেয়ে যাচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারীর মতো আপাদ-মস্তক দুর্নীতিবাজ নেতারা। এটাই ক্ষোভের কারণ বিরোধীদের। সব মিলিয়ে বিজেপির “শাখা সংগঠন” ইডি-সিবিআইয়ের অতিসক্রিয়তা দেশজুড়ে এককাট্টা করছে বিরোধীদের।

 

 

Previous articleপার্টি ফান্ডের ১১৬১ কোটি টাকার উৎস কী? নির্বাচন কমিশনের প্রশ্নের মুখে “চুপ” বিজেপি!
Next articleআজ ঘরের মাঠে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে নামছে মোহনবাগান, মরণ- বাঁচন ম‍্যাচে জয় চাইছেন জুয়ান